অনলাইন ডেস্ক :
বগুড়া কলেজ ডিগ্রি স্তরে কলেজের এমপিও অনুমোদন (বেতন কোড) নেই। অথচ ২১ জন শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন ১৯ বছর ধরে। বিষয়টি নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির বেতন কোড ছাড়া কীভাবে শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্তি হলো তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) মাউশির পরিচালক (প্রশিক্ষণ) অধ্যাপক ড. প্রবীর কুমার ভট্টাচার্যকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে পরবর্তী সাত কর্মদিবসের মধ্যে সুস্পষ্ট মতামতসহ প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) উপ-পরিচালক (কলেজ-২) মো. এনামুল হক হাওলাদার বলেন, ‘ঘটনাটি অনেক আগের। কীভাবে হয়েছে তা অনুসন্ধান করতে কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
বগুড়া কলেজের অধ্যক্ষ কে বি এম মুসা বলেন, ‘ডিগ্রি স্তরে পাঠদান চলছে ২৩ বছর ধরে। শিক্ষক-কর্মচারীরা বেতন পচ্ছেন ১৯ বছর ধরে। কেন ডিগ্রি স্তরের বেতন কোড অনুমোদন দেওয়া হয়নি তা বলতে পারবে মাউশি। শিক্ষকরা তো চাকরি করেই বেতন নিচ্ছেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাউশির সহকারী পরিচালক (সাধারণ প্রশাসন) জাকির হোসেন বলেন, ‘যে সময় কলেজটির ডিগ্রি স্তরের এমপিও হয়েছে, সে সময় এমপিওভুক্তির দায়িত্ব ছিল বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস)। ওই সময়ের এই ঘটনাটির দায় তাদের।’
মাউশি সূত্রে জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট কলেজের ডিগ্রি স্তরের শিক্ষকদের যখন বেতন হয় তখন এমপিওভুক্তির দায়িত্ব ছিল বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস)। ডিগ্রি স্তরের বেতন কোড ছাড়া কীভাবে তারা এমপিও দিয়েছে তা ব্যানবেইস জানে। মাউশি এমপিওভুক্তির দায়িত্ব পায় ২০০৫ সালে। সে কারণে ওই সময়ের আগের অনেক নথি নেই মাউশিতে।
ব্যানবেইসের দায়িত্ব থাকাকালে এমপিওভুক্তি নিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। এমনকি মাউশির দায়িত্ব পাওয়ার শুরুর দিকেও কয়েক বছর এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে চরম অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাউশির একাধিক কর্মকর্তারা জানান, ওই সময়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অনিয়ম-দুর্নীতি এবং গাফিলতির কারণে কলেজটির ডিগ্রি স্তরে বেতন কোড অনুমোদন ছাড়াই শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বেতনভুক্ত হয়েছেন। প্রাতিষ্ঠানিক বেতন কোড ছাড়া শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন হওয়ার কোনও সুযোগ নেই। এমপিওভুক্তির জন্য আবেদনের সুযোগ পেতে হলে কোনও প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট স্তরের বেতন কোড থাকতে হবে। তাছাড়া শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্তি হবে না। ওই সময় এমপিওভুক্তি নিয়ে বাণিজ্যও হয়েছে এমন অভিযোগ প্রায়ই শোনা যেতো। ’
মাউশি সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া কলেজের ডিগ্রি স্তরে নতুন নিয়োগ পাওয়া দুইজন শিক্ষক এবং একজন সহকারী লাইব্রেরিয়ান ডিগ্রি স্তরে বেতন কোড না থাকায় এমপিওভুক্ত হতে পারছিলেন না। শেষ পর্যন্ত তারা হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। ওই রিটের শুনানিতে বেতন দাবি করা দুই শিক্ষক আদালতকে বলেন, ‘অধ্যক্ষ ডিগ্রি কোডে বেতন পাচ্ছেন।’ আদালতের শুনানির সূত্র ধরে মাউশি জানতে পারে ডিগ্রি স্তরে বেতন কোড না থাকলেও ২১ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন। এই পরিস্থিতে ঘটনা অনুসন্ধানে একটি তদন্ত কমিটিও করেছেন মাউশির মহাপরিচালক।
সূত্র : বিডি জার্নাল
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.