এইমাত্র পাওয়া

দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যাংকে শিক্ষার্থীদের

স্কুলের ২০ লাখ ছেলে-মেয়ে এখন ব্যাংকে টাকা জমা রাখছে। তাদের জমানো এই অর্থের পরিমাণ ১ হাজার ৪৯৪ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, এই বছরের জুন শেষে স্কুল শিক্ষার্থীদের ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৯৬ হাজার ৩০টি। গত এক বছরে (২০১৮ সালের জুন থেকে ২০১৯ সালের জুন) স্কুল ব্যাংকিং হিসাব সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ৪ লাখ ৫৬ হাজার ১৯৪টি। অর্থাৎ এক বছরে হিসাব সংখ্যার প্রবৃদ্ধি ২৯.৬২ শতাংশ। এই সময়ে স্কুল শিক্ষার্থীদের জমানো আমানত বেড়েছে ৭৪ কোটি টাকা।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘বড়দের পাশাপাশি ছোটরাও এখন ব্যাংকমুখী হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক স্কুল শিক্ষার্থীদের মধ্যে সঞ্চয় প্রবণতা তৈরি করতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে, যার ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে পুরো ব্যাংক খাতে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, স্কুল শিক্ষার্থীদের হিসাব সংখ্যা ও টাকা জমার স্থিতির দিক থেকে বেসরকারি ব্যাংকের অবদান সবচেয়ে বেশি। বেসরকারি ব্যাংকগুলো মোট ১৩ লাখ ৮৭ হাজার ৭২৫টি ব্যাংক-হিসাব খুলেছে, যা মোট স্কুল ব্যাংকিং হিসাবের ৬৯.৫২ শতাংশ।

বেসরকারি ব্যাংকগুলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১ হাজার ২৩৭ কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করেছে, যা স্কুল ব্যাংকিং হিসাবের মোট স্থিতির ৮২.৮৩ শতাংশ। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ২৩.৭৬ শতাংশ স্কুল ব্যাংকিং হিসাব খুললেও মোট স্থিতির মাত্র ১৩.২৮ শতাংশ সংগ্রহ করেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, স্কুল ব্যাংকিংয়ের মোট হিসাবের ৩৮.৬৩ শতাংশ খোলা হয়েছে গ্রামাঞ্চলে। ৬১.৩৭ শতাংশ খোলা হয়েছে শহরাঞ্চলে। গ্রামাঞ্চল ও শহরাঞ্চলে স্থিতির পরিমাণ মোট স্থিতির যথাক্রমে ২৫.৭৩ এবং ৭৪.২৭ শতাংশ।

শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি হিসাব খুলেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডে। এই ব্যাংকে ৩ লাখ ৬৯ লাখ ৬২৩ জন শিক্ষার্থী হিসাব খুলেছে, যা মোট হিসাবের ১৮.৫২ শতাংশ।

অপরদিকে স্কুল শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি টাকা জমা রেখেছে ডাচ-বাংলা ব্যাংকে। এখানে তারা আমানত রেখেছে ৪৬৫.৮৮ কোটি টাকা, যা মোট আমানতের ৩১.১৭ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, স্কুল ব্যাংকিংয়ের মোট হিসাবে ছাত্র ও ছাত্রীর অনুপাত ৫৭:৪৩। ছাত্রছাত্রীদের জন্য স্কুল ব্যাংকিং সেবাকে জনপ্রিয় করতে কোনও কোনও ব্যাংক আলাদা কাউন্টার বা ডেস্ক খুলেছে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান ২০১০ সালে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সঞ্চয় উদ্বুদ্ধ করতে ‘স্কুল ব্যাংকিং’ কার্যক্রমের উদ্যোগ নেন। তবে শিক্ষার্থীরা টাকা জমা রাখার সুযোগ পায় ২০১১ সাল থেকে। ২০১১ সালে ১০ টাকা দিয়ে হিসাব খোলা হলেও পরে হিসাব খুলতে ১০০ টাকা জমা রাখতে বলা হয়। এসব হিসাব সাধারণ চলতি হিসাবে রূপান্তরের সুযোগও আছে।


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.