এইমাত্র পাওয়া

ভিকারুননিসায় তফসিল ঘোষণার আগেই অসুস্থ প্রচারণা ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা

কোনো রকম নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা ছাড়াই ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির নির্বাচন ঘিরে অভিভাবক প্রতিনিধি সম্ভাব্য প্রার্থীদের মাঝে অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ঈদুল আজহার আগ থেকেই সম্ভাব্য প্রার্থীদের রঙিন পোস্টারে ছেয়ে গেছে এ প্রতিষ্ঠানের আশপাশের দেয়ালসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকা। পোস্টার-ব্যানারের আড়ালে প্রতিষ্ঠানের দেয়ালে লেখা শিক্ষণীয় বাণীগুলো ঢাকা পড়েছে। পাশাপাশি প্রায়ই চলছে প্রার্থী-সমর্থকদের লিফলেট বিতরণ। তৈরি হচ্ছে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দেয়ালে এভাবে পোস্টার ও ব্যানার লাগানোর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে সচেতন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা বলেন, গভর্নিং বডির কমিটিতে এলে ভর্তি বাণিজ্য থেকে শুরু করে নানা রকম সুবিধা পাওয়া যায়। সেজন্য এ অসুস্থ প্রতিযোগিতা। সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন ব্যবসায়ী, আইনজীবী, শিক্ষক, পুলিশ ও সরকারি কর্মকর্তা ছাড়াও বিভিন্ন পেশার মানুষ। এ সব প্রচারণায় কলেজ কর্তৃপক্ষ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।

যদিও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটিসংক্রান্ত প্রবিধানমালা অনুযায়ী, এ নির্বাচনী প্রচারে পোস্টার ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বেআইনি। এ ছাড়া দেয়াল লিখন ও পোস্টার লাগানো আইন অনুযায়ী নির্ধারিত স্থান ছাড়া পোস্টার লাগানো নিষিদ্ধ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির কমিটির মেয়াদ দুই বছর। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের কমিটির মেয়াদ মে মাসে শেষ হয়েছে।

জানা যায়, ১১ সদস্যের গভর্নিং বডির কমিটিতে মূলত পাঁচজন অভিভাবক সদস্য ও তিনটি শিক্ষক প্রতিনিধি পদেই নির্বাচন হয়ে থাকে। কিন্তু বর্তমানে প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রায় শ’ খানেক প্রার্থী।

ভিকারুন্নিসা স্কুলের মূল ক্যাম্পাস বেইলি রোডে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির আশপাশের নির্বাচনের প্রচারণা যেন জাতীয় নির্বাচনের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। পুরো বেইলি রোড ছেয়ে গেছে পোস্টারে। যেসব দেয়ালে পোস্টার লাগানো নিষেধ সেগুলোও বাদ যায়নি। এ ছাড়া কাকরাইল, পল্টন, শান্তিনগর, চামিলীবাগ, মালিবাগ, মৌচাক, সিদ্ধেশ্বরী, মগবাজার, ইস্কাটন, রামপুরা, বনশ্রী, খিলগাঁও ও মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের পিলারেও সম্ভাব্য প্রার্থীদের অসংখ্য পোস্টার ছেয়ে গেছে। সিদ্ধেশ্বরী বালক উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বাউন্ডারির দেয়ালে ‘পোস্টার লাগানো নিষেধ’ লেখা থাকলেও এ ওয়াল বাদ যায়নি। এমন চিত্র প্রায় জায়গায় দেখা গেছে।

কলেজ শাখার অভিভাবক এনামুল হক আবুল যুগান্তরকে বলেন, যারা স্কুলের প্রকৃত উন্নয়ন করতে পারে তাদেরই গভর্নিং বডির কমিটিতে আসা উচিত। বর্তমান এ প্রচারণা আমি ভালো চোখে দেখছি না। বিগত দিনে যারা কমিটিতে এসেছেন, তারা এ স্কুলের মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছেন। তারা ভর্তিবাণিজ্য থেকে শুরু করে যেসব কর্মকাণ্ড করেছেন তার বিচার হয়নি। কলেজ শাখার এক অভিভাবক যুগান্তরকে বলেন, সামান্য একটা নির্বাচন কেন্দ্র করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন প্রচারণা আমরা কখনো দেখিনি। যারা কমিটিতে আসেন কাজের কাজ কিছুই হয় না।

প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডি নির্বাচনের কলেজ শাখার সম্ভাব্য প্রার্থী মো. আবু তাহের টিপু যুগান্তরকে বলেন, ‘কোনো নিয়মকানুন না মেনে যে যার যার মতো পোস্টার লাগাচ্ছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর ছবির উপরেও পোস্টার লাগিয়েছে।

সার্বিক বিষয়ে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফেরদৌসি বেগমের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে এ প্রতিবেদককে তার কক্ষে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়নি। তবে গেটে ইন্টারকমের মাধ্যমে কথা বলে অধ্যক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রতিষ্ঠানের দেয়ালে আশপাশে পোস্টার না লাগানোর বিষয়ে একাধিকবার নোটিশ দিয়ে নিষেধ করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও রাতের আঁধারে পোস্টার লাগানো হয়। যারা পোস্টারিং করছে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য ডিসি অফিসে (ঢাকা জেলা প্রশাসক) চিঠি দিয়েছি। তারা প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগ দিলে তারাই চিন্তা করবে যারা তফসিলের আগে পোস্টারিং করছে তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া যায়। আমি এর বেশি কিছু বলতে পারছি না।সুত্র যুগান্তর


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.