বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আস সামছ জগলুল হোসেনের আদালতে বিতর্কিত ধর্মীয় বক্তা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন আত-তাহেরীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। রোববার মামলাটি করেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির কার্যকরী সদস্য মো. ইব্রাহিম খলিল।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, হযরত মুহম্মদ (সা.) এর আদর্শ ও পবিত্র ধর্মগ্রন্থ ওয়াজ মাহফিলের মধ্যে নাচ-গান সমর্থন করে না। ইসলামের রীতিনীতি অনুযায়ী আসামির কর্মকাণ্ড মুনাফেকির শামিল। এক ব্যক্তির উক্তি দিয়ে তার বিড়ি খাওয়ার দোয়াটিও ইসলামের কোথাও নেই। তার এসব বক্তব্যে ইসলাম ধর্মকে ব্যঙ্গ ও অবমাননা করা হয়েছে।
এছাড়া ওয়াজ মাহফিলে ‘বসেন বসেন বইসা যান, ঢেলে দেই’ এসব বাক্য ব্যবহার করে ওয়াজ মাহফিলকে তিনি বিতর্কিত করছেন। তাহেরীর এসব কর্মকাণ্ড ইসলামে বিদ’আত বলে গণ্য। তিনি ইসলাম ধর্মের অপপ্রচারকারী। ইউটিউব, ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে তার প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যায় তিনি ওয়াজের মধ্যে নাচ, গান করেন। ভক্তদের নিয়ে জিকিরের নামে নাচ-গান করেন।
আসামির এসব কর্মকাণ্ড ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে ইসলাম ধর্মীয় অনুভূতি ও ধর্মীয় মূল্যবোধের ওপর আঘাত সৃষ্টি করা হচ্ছে। আসামির এমন ওয়াজ মাহফিলের নামে ভণ্ডামি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার ইসলাম ধর্মের মধ্যে ঘৃণা-বিদ্বেষ সৃষ্টি করে এবং ধর্মপ্রাণ মানুষকে সঠিক শিক্ষা না দিয়ে ভুল বুঝিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর উপক্রম তৈরি করে।
এর আগে, তাহেরীকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও নজরদারীতে রাখা হয়েছিল।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেয়া ৬ সুপারিশ
১. ওয়াজি হুজুররা যেন বাস্তবধর্মী ও ইসলামের মূল স্পিরিটের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেন, সেজন্য তাদের প্রশিক্ষণ ও উদ্বুদ্ধকরণের ব্যবস্থা করা। এক্ষেত্রে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে স্থানীয় প্রশাসন ও কমিউনিটি পুলিশের ভূমিকা তাৎপর্যপূর্ণ।
২. যারা ওয়াজের নামে হাস্যকর ও বিতর্কিত বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য নষ্ট করার চেষ্টা চালান, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ প্রো-অ্যাকটিভ উদ্বুদ্ধকরণ।
৩. অনেক আলেমের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। দাওরায়ে হাদিস ডিগ্রির মতো উচ্চশিক্ষা ব্যতীত যারা ওয়াজ করেন, তারাই জঙ্গিবাদ ও বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। তাই মাদরাসায় উচ্চ শিক্ষিত ওয়াজকারীদের নিবন্ধনের আওতায় নিয়ে আসা।
৪. অনেকেই আছেন, যারা হেলিকপ্টারযোগে ওয়াজ মাহফিলে যোগ দেন এবং ঘণ্টাচুক্তিতে বক্তব্য দিয়ে বিশাল অঙ্কের অর্থ গ্রহণ করেন। তারা নিয়মিত ও সঠিকভাবে আয়কর প্রদান করেন কি-না, তা নজরদারির জন্য আয়কর বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সব বিভাগের কর্মতৎপরতা বৃদ্ধি করা।
৫. ওয়াজি হুজুরদের বক্তব্য স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক সংরক্ষণ ও পর্যালোচনার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া এবং উস্কানিমূলক ও বিদ্বেষ ছড়ানোর বক্তব্য দিলে তাদের সতর্ক করা। প্রয়োজনে পরবর্তী সময়ে তাদের ওয়াজ করার অনুমতি না দেয়া।
৬. সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করা ও রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য প্রদানকারীদের আইনের আওতায় আনা।
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.