এইমাত্র পাওয়া

শিক্ষামন্ত্রীর কাছে শিক্ষকের আকুতি

মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী, আপনি একটি ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান।

“সেবাই পরম ধর্ম” এটিকে দিব্যজ্ঞান মনে করেই হয়তো সেবাধর্মী পেশা বেছে নিয়েছেন। আপনার মুখায়বও তাই বলে। সদা হাস্যোজ্জ্বল এবং মায়াবী বদন যে কাউকে মুগ্ধ করবে নিঃসন্দেহে। সে যাই হোক ধান বানতে গিয়ে শিবের গীত গাইলাম।

এবার আসল কথায় আসা যাক। আমরা পাঁচ লক্ষাধিক বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক আপনার বৃহৎ পরিবারভুক্ত। আমাদের হৃদয়ে আজ রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আমরা হতাশার অথৈ সাগরে নিমজ্জিত। আমাদের হৃদয়ের হাহাকার ও তপ্ত হৃদয়ের কান্নায় আকাশ বাতাস কেঁপে উঠছে। অবাক হচ্ছি পরিবারের কর্তা হিসেবে আপনি মনে হয় এ বিষয়ে অবগত হয়েও সন্তর্পণে এড়িয়ে যাচ্ছেন। অত্যন্ত বিনয়ের সাথে গ্রামীণ ভাষায় একটি কথা বলছি, “উঠোন তাতলে পিড়াও তাতে।” সঙ্গত কারণেই আমরা ভালো থাকলে আপনি ভালো থাকবেন। আর আমাদের দুরাবস্থায় রেখে ভালো থাকা কঠিন।

এবার আসা যাক আমরা কেন হতাশায় নিমজ্জিত? গোটা জাতি জানে আমরা সরকার থেকে শতভাগ বেতন পাই। কিন্তু বেতনের বদলে স্বীয় বেতন স্কেলের চেয়ে কম অনুদান পাই তা কজনই বা জানে। সরকারি চাকরিজীবীরা ২০১৫ সাল থেকে ৫% ইনক্রিমেন্ট পেলেও আমরা পেয়েছি ২০১৮ সালে। তাও আবার কোনরূপ বকেয়া ছাড়া। একই অবস্থা বৈশাখী ভাতার ক্ষেত্রে। এখন আবার বোঝার উপর শাকের আটি চাপিয়ে দেয়া হয়েছে ৪% কর্তনের মাধ্যমে। পৃথিবীর কোথাও ২৫% উৎসব ভাতার রেওয়াজ না থাকলেও আমারা পাচ্ছি। ১০০০ টাকা বাড়ি ভাড়া, ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতার কথা বলতেও লজ্জা লাগে। বিনোদন ভাতা, সন্তানের শিক্ষা ভাতার তো কোন বালাই নেই। নিজের সঞ্চিত অবসর কল্যাণের টাকা পেতেও ভোগান্তির শেষ নেই।

মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়, আমরা মানুষ গড়ার কারিগর, শিক্ষকতা সেবাব্রত, মহান পেশা এসবই ঠিক আছে। কিন্তু সবকিছুর উর্ধ্বে আমরাও মানুষ। আমাদেরকেও সমাজে বসবাস করতে হয়। স্বাদ আহলাদ আমাদের না থাকলেও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের তো আছে। একটা সময় ছিল রাষ্ট্রের সক্ষমতা ছিল না। তখন আমাদের কিঞ্চিৎ প্রাপ্তিতেও আপত্তি ছিল না। কিন্তু এখন রাষ্ট্রের সক্ষমতা বেড়েছে, তলাবিহীন ঝুঁড়ির তকমা কেটেছে। এখন ন্যায্য অধিকার বঞ্চিত হলে হতাশ না হয়ে উপায় কী? তাই পরিবারের অভিভাবক হিসেবে একটা কিছু করুন। আমরা সবাই আপনার পানে তাকিয়ে আছি।

লেখক

প্রধান শিক্ষক

পীর কাশিমপুর আর এন উচ্চ বিদ্যালয়

মুরাদনগর, কুমিল্লা।


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.