শিক্ষাবার্তা ডেস্ক, ঢাকাঃ শিক্ষক সংকট কাটছেই না। বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাংন চলছে বিপুলসংখ্যক শিক্ষক সংকট নিয়েই। সারা দেশে এমন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক পদ খালি আছে ১ লাখ ১ হাজার ১৪২টি। গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ করার পরও খালি থাকবে ৭০ থেকে ৮০ হাজার পদ। বেসরকারি শিক্ষকনিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) গণবিজ্ঞপ্তি নিয়মিত দিয়ে আসলেও দুর করতে পারছে না শিক্ষক সংকট।
২০০৫ সাল থেকে এনটিআরসিএ শিক্ষক নিবন্ধন সনদ দিচ্ছে। এর ১০ বছর পর থেকে সনদের পাশাপাশি শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশের ক্ষমতা পায়। এরপর প্রকাশিত পাঁচটি গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ১ লাখ ৩২ হাজার ৮৯৮ জন শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশ করেছে এনটিআরসিএ। ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের লক্ষ্যে বেসরকারি স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা এবং কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শূন্য পদের তথ্য সংগ্রহ করেছে এনটিআরসিএ। সেই হিসাবে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এক লাখ এক হাজার ১৪২টি পদ শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের প্রতিষ্ঠান সমূহে ৫৪ হাজার ৭২৮টি এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৪৬ হাজার ৪১৪টি পদ শূন্য রয়েছে। পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে প্রায় ৯৭ হাজার পদের মধ্যে মাত্র সাড়ে ১৯ হাজার পদ পূরণ হয়। এখনো ৭৭ হাজার ৫০০ পদ ফাঁকা রয়েছে। অবসরজনিত কারণে এই তালিকায় যুক্ত হয়েছে আরও ২০ থেকে ২৫ হাজার শূন্য পদ। তবে এবারের গণবিজ্ঞপ্তিতে ১৮তম গণবিজ্ঞপ্তির প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন বিধায় অত্যধিক পদ পূরণ করা সম্ভব হবে। এবারই প্রথমবারের মতো তিন বছরের জন্য অর্থাৎ ২০২৭ সাল পর্যন্ত চাহিদা দেয়া হয়েছে। গত ৩১শে মার্চ প্রকাশিত পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে শূন্য পদের সংখ্যা ছিল ৯৬ হাজার ৭৩৬ টি। এর মধ্যে স্কুল-কলেজের শূন্য পদ ছিল ৪৩ হাজার ২৮৬টি এবং মাদ্রাসা, ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানে ৫৩ হাজার ৪৫০টি। প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত ১৯ হাজার ৫৮৬ জন প্রার্থীকে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তিতে এই ধারাবাহিকতায় নিয়োগের পরও খালি থাকবে ৭০ থেকে ৮০ হাজার শূন্য পদ।
নিয়োগের বাইরেও বিভিন্ন দাবি দাওয়া আন্দোলনের সম্মুখীন হতে হয় প্রতিষ্ঠানটিকে। বিগত সময়ের শিক্ষা প্রশাসনের উদাসীনতায় আন্দোলন তীব্রতর হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে নিয়মিত হয়ে আসছে আন্দোলন। বিগত সরকার শিক্ষকদের রীতিমতো জিম্মি করে রেখেছিলেন। শিক্ষকরা বদলি সুবিধা চালুর জন্য আন্দোলন করছেন। সুযোগ মেলেনি অভিযোগ তুলে আন্দোলন করছেন ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনকারীরা। এছাড়াও ১৮তম-এ প্রভাষক (আরবি মাদ্রাসা-৪২৯) পদে যারা কামিল/মাস্টার্স সম্পন্ন না করে আবেদন করেছেন তাদেরকে ভাইভাতে অংশগ্রহণের সুযোগ না দেয়া। ১৮তম নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আবেদনের শেষ সময় ৩০শে নভেম্বর ২০২৩ তারিখের মধ্যে যাদের কামিল/মাস্টার্সের ফলাফল প্রকাশ হয়নি তাদের আবেদন বাতিল করা। নিয়ম-বহির্ভূত অংশগ্রহণকারীদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত ৮ (খ) অনুসারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা নিয়ে আন্দোলন চলছে।
এনটিআরসিএর সচিব এএমএম রিজওয়ানুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের অংশ হিসাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ই-রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম শেষে শূন্য পদের চাহিদা আহ্বান করা হয়। শূন্য পদের চাহিদা যাচাই-বাছাই শেষে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। কবে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হবে তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছেন না। চলতি বছরেই গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। আমরা চাহিদা প্রেক্ষিতে শূন্যপদ ঘোষণা করবো, যোগ্য প্রার্থিতার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হবে। তিনি আরও বলেন, শূন্যপদ রয়েছে তবে আমরা নিয়মের বাইরে যেতে পারি না। নিয়ম মেনেই গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হবে।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৮/০৫/২০২৫
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.