৬ দাবি আদায়ে লক্ষ্যে শাটডাউন কর্মসূচি পালন নার্সিং শিক্ষার্থীদের

ঢাকাঃ নার্সদের প্রথম শ্রেণির পদে নিয়োগ, ২০ হাজার টাকা ইন্টার্নশিপ ভাতা ও মেধার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগসহ ছয় দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে অনির্দিষ্টকালের জন্য কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি পালন করছেন ঢাকা নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীরা।

আজ রোববার (৪ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী নার্সিং শিক্ষার্থীরা গণমাধ্যমকে জানান, ইন্টার্নশিপের সময় তারা সবচেয়ে বেশি পরিশ্রম করেন, অথচ পান সবচেয়ে কম সম্মান ও সুযোগ-সুবিধা। একজন শিক্ষার্থী প্রশ্ন তোলেন, ‘পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে কি ঢাকায় থাকা, খাওয়া, যাতায়াত চালানো সম্ভব? আমরা কাজ তো করেই দিচ্ছি— তাহলে ভাতা ২০ হাজার টাকায় উন্নীত করতে এত সমস্যা কোথায়?’

তাদের অভিযোগ, ২০১৮ সালের পর থেকে বিএসসি ইন নার্সিং কারিকুলামে ধারাবাহিকভাবে যেসব পরিবর্তন আনা হয়েছে, তার অধিকাংশই বাস্তব চাহিদা কিংবা আন্তর্জাতিক মানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। শিক্ষার্থীদের মতে, এই পরিবর্তনগুলো মূলত সিনিয়র ডিপ্লোমা নার্সদের স্বার্থ রক্ষার উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে। এর ফলে নতুনভাবে বিএসসি কোর্সে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা নিয়মিতভাবে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন এবং বিভিন্নভাবে পিছিয়ে পড়ছেন।

তারা আরও বলেন, ‘একটি আধুনিক ও একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থার কথা বলা হলেও বাস্তবে তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না। কারিকুলামে বৈষম্য থাকলে আমরা চাকরির বাজারে যেমন পিছিয়ে পড়ব, তেমনি উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও সুযোগ হারাবো।’

শিক্ষার্থীরা মনে করেন, এই অব্যবস্থা শুধু তাদের ব্যক্তিগত ভবিষ্যৎ নয়, পুরো নার্সিং পেশাকেই হুমকির মুখে ফেলছে। তাই তারা কারিকুলাম, ভাতা এবং পেশাগত মর্যাদা— সবকিছুর একটি স্থায়ী ও সমন্বিত সমাধান দাবি করছেন।

শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবি হলো—

১. ইউজিসি ও সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী মেধার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ।

২. গ্র্যাজুয়েট নার্সদের সরাসরি প্রথম শ্রেণির পদে নিয়োগ।

৩. বিএসসি নার্সদের জন্য স্বতন্ত্র অর্গানোগ্রাম ও ক্যারিয়ার পাথ প্রণয়ন।

৪. ২০১৬ সালের গৃহীত নিয়োগ বিধির বাস্তবায়ন।

৫. কারিকুলামে সমতা আনয়ন করে ডিপ্লোমা ও বিএসসি শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৈষম্য দূর করে একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু।

৬. ইন্টার্নশিপ ভাতা ২০ হাজার টাকায় উন্নীতকরণ।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ২০১৮ সালের পর থেকে কারিকুলামে আনা পরিবর্তনগুলো বাস্তবচ্যুতি ও আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বরং এসব পরিবর্তনের মাধ্যমে সিনিয়র ডিপ্লোমাধারী নার্সদের স্বার্থ রক্ষা করা হয়েছে, ফলে নতুন বিএসসি শিক্ষার্থীদের পেছনে ফেলে রাখা হচ্ছে এবং তারা প্রতিনিয়ত বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।

দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে জানিয়ে শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেন, তাদের শাটডাউন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। প্রয়োজনে জাতীয় পর্যায়ে অবস্থান কর্মসূচিতে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৪/০৫/২০২৫