জামাল উদ্দীন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) সেন্ট্রাল ল্যাব ব্যবহারে ফি নির্ধারণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে ল্যাব ব্যবহারে যন্ত্রপাতির মূল্য অনুয়ায়ী নির্দিষ্ট হারে ফি (বেতন) দিতে হবে। তবে ল্যাবে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা না থাকা স্বত্তেও তা ব্যবহারে মূল নির্ধারণ অযৌক্তিক বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞান, প্রকৌশল এবং জীববিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থীরা।
এ নিয়ে মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) গবেষণা রিসার্চ সংক্রান্ত ব্যয় মওকুফের দাবিতে কেন্দ্রীয় গবেষণাগার এর পরিচালক বরাবর স্মারকলিপি দেয় ওই অনুষদের শিক্ষার্থীরা। পরে সেন্ট্রাল ল্যাবের পরিচালক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তি ফেসবুকে শেয়ার করে সেন্ট্রাল ল্যাব সার্ভিসেস পলিসির ফি-সংক্রান্ত সেকশন ৫.১ স্থগিতের বিষয়ে নিশ্চিত করেন পরিচালক অধ্যাপক ড. জাহিদুল ইসলাম।
এছাড়াও সেন্ট্রাল ল্যাব ব্যবহারে নির্ধারিত ফি যৌক্তিক বলে এক ফেসবুক পোস্টে জানান ইবি সেন্ট্রাল ল্যাব এর পরিচালক অধ্যাপক ড. জাহিদুল ইসলাম।
তিন দফা সংবলিত স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা বলেন,
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে সেন্ট্রাল ল্যাব ব্যবহারের ক্ষেত্রে যন্ত্রপাতি অনুসারে নির্ধারিত হারে অর্থ প্রদান করতে বলা হয়েছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে রিসার্চ কেন্দ্রিক সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার পরে এই ফি ধার্য করে থাকে। তবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণাগারের অনেক মেশিন অকার্যকর (নষ্ট) ও পরিচালনায় দক্ষ কোন জনবল না থাকা স্বত্তেও এই ফি ধার্য করা হয়েছে।
আমরা মনে করি এই সিদ্ধান্তটি অযৌক্তিক, অমানবিক এবং গবেষণার মৌলিক চেতনার পরিপন্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান অবকাঠামো ও আর্থিক বাস্তবতায় অধিকাংশ শিক্ষার্থীর পক্ষে এই ব্যয়ভার বহন করা সম্ভব নয়। প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধার ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও গবেষণার জন্য অতিরিক্ত ফি নির্ধারণ শিক্ষার্থীদের গবেষণায় আগ্রহ ও সক্ষমতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
তাদের দাবিসমূহ- যতদিন পর্যন্ত সম্পূর্ণরূপে আন্যালাইটিক্যাল সার্ভিস প্রদান না করা হবে ততোদিন পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য কেন্দ্রীয় গবেষণাগার ব্যবহারে বিনামূল্যে প্রবেশাধিকার দেওয়া। অনার্স পর্যায়ের প্রজেক্টে নিযুক্ত শিক্ষার্থীদের জন্য ল্যাবে কাজের অনুমতি নিশ্চিত করা। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো মাস্টার্স পর্যায়ের গবেষক শিক্ষার্থীদের জন্য রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে মাসিক সম্মানী/অনুদান প্রদানের ব্যবস্থা করা। শিক্ষার্থীবান্ধব নীতিমালা কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত কেন্দ্রীয় গবেষণাগারে গবেষণা কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি প্রদান করা।
ইইই বিভাগের মুবাশ্বশির বলেন, আমাদের ল্যাবে অনেক যন্ত্রপাতি এখনও অকার্যকর। এবং আর যেসব যন্ত্রপাতি আছে সেগুলো পরিচালনার জন্য তেমন কোন দক্ষ জনবল নেই। এ সব বিষয় ঠিক না করে ল্যাব ব্যবহারে শিক্ষার্থীদের থেকে ফি নেওয়া অযৌক্তিক। তবে এ বিষয়ে গবেষণাগার এর পরিচালক জাহিদুল ইসলাম ও প্রক্ট্ররের সাথে কথা হয়েছে। আগামীকাল আলোচনা করে সমাধান করা হবে।
গবেষণাগার এর পরিচালক অধ্যাপক ড. জাহিদুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি পেয়েছি। দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল ল্যাবের ফি কাঠামোর সাথে সামঞ্জস্য রেখেই আমাদের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে আমাদের আন্যালাইটিক্যাল পার্টে কিছু সমস্যা কারণে সেকশান ৫.১ এর টেবিল-১ আগামী ৬মে পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। প্রশাসনের সাথে প্রশাসনের আলোচনা করে দ্রুত সমাধান করা হবে।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/২৯/০৪/২০২৫
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.