ঢাকাঃ শাহবাগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সহকারী বাইন্ডার মোস্তফা আসিফকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১৭টি বিভাগ। এসব বিভাগ পৃথকভাবে দেওয়া বিবৃতিতে এই দাবি জানিয়েছে।
১৭টি বিভাগের মধ্যে ১৩টি বিভাগ ক্লাস এবং পরীক্ষা বর্জনের ডাক দিয়েছে এবং অন্যরা দাবি পূরণ না হলে তীব্র প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যদি এই নির্যাতনকারীকে (মোস্তফা আসিফ) চাকরিতে রাখার কোনো প্রচেষ্টা করা হয়, তাহলে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ জায়গা থেকে সমস্ত ক্লাস এবং পরীক্ষা বর্জন করবে।
মোস্তফা আসিফ অর্ণবকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে “অবাঞ্ছিত” ঘোষণা করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার ছাত্রীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। এটি ভুক্তভোগীর ন্যায়বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অভিযুক্তের স্বীকারোক্তি, জবানবন্দি এবং অন্যান্য সম্পর্কিত প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও, প্রশাসন তাকে চাকরিতে রাখার চেষ্টা করছে।”
এখনও আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেনি তদন্ত কমিটি
এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে হেনস্তার ঘটনায় বৃহস্পতিবার তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর রফিকুল ইসলামকে। কমিটির অপর সদস্যরা হলেন সহকারী প্রক্টর শেহরীন আমিন ভূঁইয়া এবং কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের ডেপুটি লাইব্রেরিয়ান।
রফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তদন্ত কমিটি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বৈঠকে বসেনি। তবে বৃহস্পতিবার অনানুষ্ঠানিকভাবে তারা একসঙ্গে বসেছিলেন। শুক্রবার এবং শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় তারা রবিবার বৈঠকে বসার পরিকল্পনা করেছেন।
উল্লেখ্য, প্রসঙ্গত, ওই শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্টে হয়রানির ঘটনার বিস্তারিত উল্লেখ করেন। মোস্তফা আসিফের ছবি শেয়ার করে তিনি লেখেন, “আজ শাহবাগ থেকে ফেরার পথে এই ব্যক্তি আমাকে হয়রানি করেছে। সে হঠাৎ রাস্তার মধ্যে আমাকে থামিয়ে বলে আমার পোশাক ঠিক নেই, আমি পর্দা করিনি এবং তার আচরণ ছিল খুবই আগ্রাসী।”
ওই শিক্ষার্থী লেখেন, তিনি ভেবেছিলেন ওই ব্যক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তাই তার বিভাগ ও হল সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, তিনি ক্যাম্পাসের কেউ নন। তিনি সালোয়ার-কামিজ ও মাথায় ওড়না পরনে ছিলেন। তিনি যখন বিষয়টি প্রক্টরকে জানানোর হুমকি দেন, তখন ওই ব্যক্তি সেখান থেকে পালিয়ে যান।
এরপর ছবি দেখে অর্ণবকে শনাক্ত করা হয় এবং তাকে প্রক্টর অফিসে ডেকে নেওয়া হয়। পরে ওই ছাত্রী মামলা করেন এবং অর্ণবকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়।
ওই দিন রাতেই অর্ণবের মুক্তির দাবিতে বুধবার মাঝরাতের পর শাহবাগ থানায় জড়ো হন একদল ব্যক্তি, যারা নিজেদের “তৌহিদী জনতা” দাবি করেন। মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত তারা সেখানেই অবস্থানের ঘোষণা দেন। তারাই বৃহস্পতিবার অর্ণবকে জামিনের পর ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেন।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৭/০৩/২০২৫
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.