ময়মনসিংহঃ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা সম্প্রতি বোর্ড বৃত্তির নামে এক নতুন ধরনের প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। প্রতারকরা নিজেদের প্রশাসনিক ভবনের কর্মকর্তা বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পরিচয় দিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিক এবং ব্যক্তিগত তথ্য জেনে বিশ্বাস অর্জন করছেন। পরে তারা বৃত্তির টাকা আটকে থাকার অজুহাতে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য বা ওটিপি নম্বর চেয়ে প্রতারণা করছেন।
একাধিক শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবক এ ধরনের প্রতারণায় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন বলে জানা গেছে। শিক্ষার্থীরা চিন্তিত ও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন যে, তাদের ব্যক্তিগত তথ্য কীভাবে প্রতারকদের কাছে পৌঁছাচ্ছে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিক তথ্যের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী নূরী জান্নাত বলেন, আমার বাবার কাছে কল দিয়ে জানানো হয় যে, আমি বোর্ড বৃত্তি পেয়েছি। প্রতারক ব্যক্তি আমার নাম, বিভাগ এবং ইন্টার্নশিপ সম্পর্কেও জানতেন। এত তথ্য জানার কারণে বাবা সন্দেহ করেননি। পরে তিনি ওটিপি নম্বর চান এবং সেটি দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টাকা কেটে নেওয়া হয়। তখন বাবা বুঝতে পারেন যে এটি প্রতারণা।
এদিকে কৃষি অনুষদের আরেক শিক্ষার্থী জানান, একজন ব্যক্তি নিজেকে প্রশাসনিক ভবনের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে আমাকে কল দেন। তিনি এমনভাবে আমার একাডেমিক ও ব্যক্তিগত তথ্য বলেন যে সন্দেহ করার কোনো কারণ ছিল না। তিনি বৃত্তির টাকা পাওয়ার সমস্যার সমাধানে একটি নতুন অ্যাকাউন্ট নম্বর ও ওটিপি চেয়েছিলেন। ওটিপি নম্বর দেওয়ার পরপরই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উধাও হয়ে যায়। এত তথ্য তারা কীভাবে জানল, সেটা আমার মাথায় আসছে না।
আরেকজন শিক্ষার্থী বলেন, প্রতারক আমার মায়ের কাছে কল দিয়ে জানান যে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক। তিনি বলেন, আমি বোর্ড বৃত্তি পেয়েছি, তবে অ্যাকাউন্টে কিছু সমস্যা থাকায় তিনি যোগাযোগ করছেন। মা প্রথমে বিশ্বাস করলেও ওটিপি নম্বর চাওয়ার সময় সন্দেহ করেন এবং কল কেটে দেন।
এ বিষয়ে বাকৃবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আলীম বলেন, বোর্ড বৃত্তি বা এ-সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কখনোই সরাসরি ফোন করে না। যদি কোনো সমস্যা থাকে, তা লিখিত নোটিশের মাধ্যমে জানানো হয়। আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য অনলাইন গ্রুপগুলোতে সতর্ক বার্তা পাঠানোর উদ্যোগ নিচ্ছি। শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে।
শিক্ষার্থীদের তথ্য কীভাবে ফাঁস হচ্ছে, এ প্রশ্নে তিনি জানান, প্রতারকরা বিভিন্নভাবে তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। এমনকি আমাকে আর্থিক সাহায্য চেয়ে কল দেওয়া হয়েছিল যেখানে আমার পারিবারিক তথ্যও উল্লেখ ছিল। প্রতারণা প্রতিরোধে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শাখার দায়িত্বপ্রাপ্তদের নিয়ে আলোচনা করা হবে এবং শিক্ষার্থীদের তথ্য সুরক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৫/১২/২০২৪
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.
শিক্ষাবার্তা ডট কম অনলাইন নিউজ পোর্টাল
