এইমাত্র পাওয়া

প্রেমে রাজি না হওয়ায় ছাত্রীকে কুপিয়ে জখম, গ্রেপ্তার হয়নি আসামি, আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা

বরগুনাঃ প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে কুপিয়ে জখমের ঘটনার পর আতঙ্ক বিরাজ করছে বরগুনার বেতাগী উপজেলার পুটিয়াখালী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে। সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তায় থাকা অভিভাবকদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষকের গাফিলতির কারণে ঘটনাটি ঘটেছে।

এদিকে, ঘটনার পরপরই প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে, আটদিন অতিবাহিত হলেও অন্য ছয় আসামিকে এখনো ধরতে পারেনি পুলিশ। পালাতক আসামিরা গ্রেপ্তার হাসানের বন্ধু বলে জানা গেছে।

বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল হালিম বলেন, “শিক্ষার্থীদের আতঙ্ক দূর করতে ওই এলাকায় পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। ক্লাস চলাকালীন বিদ্যালয়ের আশেপাশে বহিরাগতদের দাঁড়াতে দেওয়া হবে না। শিক্ষার্থীদের সবোর্চ্চ নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।”

এলাকাবাসী জানান, পুটিয়াখালী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বিরক্ত করতেন হাসান সিকদার নামে এক যুবক। বিষয়টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বজলুর রহমানকে জানান ওই শিক্ষার্থীর বাবা। প্রধান শিক্ষক প্রশাসনকে ঘটনাটি না জানিয়ে স্থানীয়ভাবে মিমাংসা করে দেন। এতে হাসান ক্ষিপ্ত হয়ে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ঢুকে ছুরিকাঘাতে গুরুতর জখম করেন ওই শিক্ষার্থীকে। এসময় বাধার মুখে পড়লে হাসান ও তার সহযোগীরা শিক্ষার্থীদের হুমকি দেন। পরে সেখান থেকে তারা পালিয়ে যান।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, হাসান ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখমের সময় সহপাঠীকে বাঁচাতে তারা এগিয়ে যান। তখন হামলাকারীরা তাদেরকেও কুপিয়ে জখমের হুমকি দেয়। হাসান গ্রেপ্তার হলেও বাকি আসামিরা পলাতক। তাই আমরা আতঙ্ক নিয়ে বিদ্যালয়ে আসছি। ঘটনার দিন আমাদের যেসব সহপাঠীরা অস্ত্রের মুখে দাঁড়িয়েছিল, তাদের অনেকেই এখন ক্লাসে অনুপস্থিত থাকছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক অভিভাবক বলেন, এই ঘটনার দায় প্রধান শিক্ষকের। শিক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত করা হচ্ছে জানার পর যদি তিনি কঠোর ব্যবস্থা নিতেন তাহলে ঘটনাটি হতো না। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে পারলে শিক্ষার্থীরা মনোবল ফিরে পাবে।

ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে কোনো কথা বলতে রাজি হননি প্রধান শিক্ষক বজলুর রহমান।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক স্বপন কুমার ঢালী বলেন, ‍‍“বিদ্যালয় ঢুকে শত শত শিক্ষার্থীদের সামনে ঘটে যাওয়া ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন অন্য শিক্ষার্থীরা। তারা মনোযোগ বসাতে পারছে না শ্রেণিকক্ষে।”

এদিকে, গ্রেপ্তারের পর প্রধান আসামি হাসান আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলে জানান বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল হালিম। তিনি বলেন, “মামলার বাকি ছয় আসামিকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।”

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে বেতাগী উপজেলায় পুটিয়াখালী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে স্কুল ক্যাম্পাসে রামদা দিয়ে কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায় বখাটেরা। সেদিন রাত ১টার দিকে বেতাগী থানায় সাত জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন ওই শিক্ষার্থীর বাবা। এ মামলায় হাসানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। আহত শিক্ষার্থী বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/২৯/১১/২০২৪


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.