এইমাত্র পাওয়া

ঘরে ঘরে জ্বর ঠাণ্ডা কাশি

নিজস্ব প্রতিবেদক।। শীত আসছে, ধীরে ধীরে নেমে যাচ্ছে তাপমাত্রা। ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি-কাশি শুরু হয়ে গেছে। ঢাকায় দিনে বেশ গরম থাকলেও শেষ রাতে ঠাণ্ডা অনুভূত হচ্ছে। কিন্তু গ্রামের দিকে সন্ধ্যার পরই ঠাণ্ডা পড়তে শুরু করে।

ঠাণ্ডা ও গরমের এ অবস্থায় শিশুসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ সর্দি, কাশিতে ভুগছেন। সর্দি-কাশিতে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি করে আক্রান্ত হচ্ছেন বলে চিকিৎসকরা বলছেন।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, নভেম্বরের অর্ধেক চলে গেছে। মৌসুমি বায়ুও চলে গেছে, কমে যাচ্ছে বাতাসের মধ্যে থাকা আর্দ্রতা। আবার উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে।

আগামী সপ্তাহ থেকেই ঢাকার মানুষও শীতের মাত্রা আঁচ করতে পারবেন, গ্রামের দিকে এখনই ঠাণ্ডা লাগছে। নদীতীরবর্তী এলাকায় কুয়াশা পড়ছে। গ্রামে টিনের চালে শিশিরের টুপটাপ শব্দ শুনতে পাওয়া যাচ্ছে।

সূর্য ওঠার আগে ভেজা, আর্দ্র পরিবেশ দেখা যাচ্ছে। আবহাওয়ার কোনো পূর্বাভাস নয়, বয়স্ক মানুষ এটা থেকেই অনুমান করে নিতে পারছেন যে, খুব শিগগিরই শীত আসছে।
আবহাওয়া অধিদফতরের আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত পূর্বাভাসে বলেছে, এ সময়ের মধ্যে সারা দেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা কমতে থাকবে।

এ ছাড়া আবহাওয়ার এক মাসের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, নভেম্বরে বঙ্গোপসাগরে তিনটি লঘুচাপের সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে একটি থেকে নি¤œচাপ কিংবা ঝড় হতে পারে।

সাধারণত নভেম্বরের শেষ দিকে একটি নি¤œচাপ কিংবা একটি ঝড় হয়ে থাকে। এর সাথে বৃষ্টিও হয়ে থাকে। বৃষ্টির কারণে শীতের মাত্রা আরো বাড়ে।

এদিকে সারা দেশেই গরম-ঠাণ্ডা অবস্থার কারণে নানা ধরনের রোগে ভুগছেন মানুষ। বিশেষ করে জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছে। নিজেরা সামলাতে না পেরে মানুষ ছুটছে ডাক্তার ও ওষুধের সন্ধানে। অপচিকিৎসার শিকারও হচ্ছেন অনেকে।

আবার ওষুধের দোকানির কাছ থেকে ওষুধ নিয়ে অ্যান্টিবায়োটিকেরও অপব্যবহার হচ্ছে। যেখানে অ্যান্টিবায়োটিক নামক ওষুধটির প্রয়োজনই নেই, সেখানে শুধুমাত্র টাকার লোভে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে দিচ্ছে অর্ধ শিক্ষিত কিংবা অশিক্ষিত ওষুধ বিক্রেতারা।

চিকিৎসকরা বলছেন, ওষুধের দোকানে নয়, ডাক্তারের কাছ থেকে ওষুধ নিতে হবে। ডাক্তারের প্রাইভেট চেম্বারে যেতে না পারলে হাসপাতালে গেলেও এমবিবিএস ডাক্তার পাওয়া যাবে, সেখান থেকে সরকারি ওষুধও পাওয়া যাবে বিনামূল্যে।

এ ব্যাপারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশুচিকিৎসক সহকারী অধ্যাপক ডা: মো: আতিয়ার রহমান বলেন, শীত ধীরে ধীরে বাড়ছে।

ফলে মানুষের মধ্যে সর্দি-কাশি হচ্ছে। শিশু ও বৃদ্ধরা ভুগছেন বেশি করে। বর্তমানে গরম ও শীতের মাঝখানে একটি সময় চলছে। বাতাসে প্রচুর ডাস্ট পার্টিকেল (অতি ক্ষুদ্র ধূলিকণা) রয়েছে। এই ডাস্ট পার্টিকেলের কারণে কাশি ও হাঁপানিতে ভুগছে শিশু ও বৃদ্ধরা।

ডেঙ্গু মৌসুম শেষ হতে না হতেই মৌসুম পরিবর্তনের কারণে জ্বর ও সর্দি শুরু হয়ে গেছে। তিনি বলেন, বাতাসে কিছু ভাইরাস রয়েছে। এই ভাইরাসগুলো এখনকার তাপমাত্রায় অ্যাক্টিভ হয়ে থাকে। ফলে মানুষ জ্বর, সর্দি ও কাশিতে ভুগছে।

এসব কারণে শ্বাসতন্ত্রে প্রদান, অনেক সময় ইনফেকশন হচ্ছে। ইনফেকশন হলে অথবা প্রদাহ হলে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। কোনোভাবেই নিজে নিজে অথবা ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে খাওয়া ঠিক হবে না। তবে জ্বরের শুরুতে প্যারাসিটামল খাওয়া যেতে পারে জ্বর কমিয়ে রাখার জন্য। হাঁচি, কাশি হলে সালবিউটামল, মন্টিলোকাস প্রয়োজন হতে পারে।

এই ওষুধগুলো ডাক্তাররাই নির্ধারণ করে দেবেন রোগীর অবস্থা বুঝে। কাশি বেশি বাড়লে কোনো কোনো ক্ষেত্রে নেবুলাইজার দিতে হতে পারে। আবার রোগীর দেহে অক্সিজেনের মাত্রাও কমে যেতে পারে। তখন অক্সিজেনও প্রয়োজন হতে পারে। তবে সব ওষুধই ডাক্তারের পরামর্শে নিতে হবে।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এ/১৬/১১/২০২৪


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.