গাজীপুর: গাজীপুর মহানগরীর পূবাইল রহমানিয়া আলিম মাদরাসার ছাত্রীদের শ্লীলতাহানিসহ তাদের সঙ্গে অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ আচরণ করার অভিযোগ উঠেছে ওই মাদরাসার চার শিক্ষকের বিরুদ্ধে। শিক্ষার্থীরা ওই চার শিক্ষকের শাস্তি ও অপসারণ চেয়ে বিক্ষোভ করেছে।
অভিযুক্ত শিক্ষকেরা হলেন- আনিছুর রহমান, ফজলুর রহমান, তোফাজ্জল হোসেন ও শেখ শহিদুল ইসলাম।
বুধবার বিকালে নগরীর ৪১ নং ওয়ার্ডের পূবাইল থানার হাড়িবাড়ির টেক পূবাইল রহমানিয়া মডেল মাদরাসায় গিয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ দেখা যায়। এ ঘটনা এখন পূবাইলে টক অব দ্য টাউন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিক্ষার্থী নিপীড়নের ঘটনার সমালোচনা হচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, পূবাইল রহমানিয়া আলিম মাদরাসার শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত ৪ জন শিক্ষকের নাম ধরে ‘লুচ্চা’ শিক্ষকদের শাস্তি ও অপসারণ চাই বলে স্লোগান দিচ্ছেন। অভিযুক্ত শিক্ষকদের একজন গা ঢাকা দিয়েছেন। বাকিরাও ক্লাস নিচ্ছেন না।
ভুক্তভোগী ছাত্রীদেরকে অভিভাবকেরা মান সম্মানের ভয়ে ক্লাসে আসতে দিচ্ছেন না বলে জানিয়েছে তাদের সহপাঠীরা।
এক অভিভাবক বলেন, আমার মেয়ে আমার কাছে নালিশ দিয়েছে। আমিও বিষয়টি মাদরাসা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। ইসলামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাদরাসায় এমন শিক্ষক কীভাবে চাকরি পায়। তদন্ত করে তাদের শাস্তির আওতায় না আনলে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস হয়ে যাবে।
আরেক ছাত্রীর মা বলেন, অভিযুক্তরা আমাদের এলাকার বদনাম করছেন। আমার মেয়ের গায়ে হাত দেওয়াসহ বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ কথা বলেছেন। আমি এদের বিচার চাই।
এ ঘটনায় পূবাইল থানার ৪১ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আনোয়ার দেওয়ানকে আহ্বায়ক করে ১৬ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পরে শিক্ষার্থীরা তদন্ত কমিটি বরাবরও একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। তদন্ত কমিটি আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার কথা রয়েছে।
তদন্ত কমিটির প্রধান আনোয়ার দেওয়ান যুগান্তরকে জানান, যদিও সাত কর্মদিবসে তদন্ত রিপোর্ট দেওয়ার কথা। কিন্তু পূজার ছুটির জন্য সঠিক সময়ে দিতে পারছি না।
মাদরাসার কোয়াব সদস্য যিনি তদন্ত কমিটিরও সদস্য মেজবাহ উদ্দিন মেজু জানান, আমরা তদন্ত করে রিপোর্ট দেব। বাকি ব্যবস্থা সংশ্লিষ্ট প্রশাসন নেবে।
স্থানীয় বাসিন্দা লুবা ইসলাম বলেন, আমি ওই মাদরাসার গভর্নিং বডির সদস্য ছিলাম তিন টার্ম। আমি এ ঘটনা শোনে মর্মাহত হয়েছি। আমি তদন্ত পূর্বক অভিযুক্তদের বিচার চাই।
অভিযুক্ত শিক্ষকদের মধ্যে আনিছুর রহমানের ভাষ্য, আমার নাম ছাত্রীরা আগে বলেনি। অন্য তিনজনের কথা বলেছে। আমি অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করব।
পূবাইল রহমানিয়া আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ কুতুবউদ্দিন বলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি হয়েছে। রিপোর্ট আসলে আর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের বিচার হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটি সোহেল রানা যুগান্তরকে জানান, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১০/১০/২০২৪
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.