এইমাত্র পাওয়া

বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি ‘সাময়িক’ বন্ধের চিন্তা

ঢাকাঃ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতি ‘সাময়িক’ বন্ধ রাখার কথা ভাবছে সরকার। বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হলে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ পরিস্থিতি যেন না হয়, সে জন্য এমন চিন্তাভাবনা চলছে। এ ছাড়া শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য আরও কয়েকটি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের সূত্রে এসব জানা গেছে। সূত্র বলেছে, গত কয়েক দিনে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং সরকারের বিভিন্ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে শিক্ষা প্রশাসনের বৈঠকে ছাত্ররাজনীতি সাময়িক বন্ধের পক্ষে মত আসে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ মতের বিষয়ে ইতিবাচক। এর পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি সাময়িক বন্ধ রাখার বিষয়ে চিন্তা শুরু হয়েছে। তবে তা এখনো চূড়ান্ত নয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কেউ আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিতে চাননি।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে গত ১৬ জুলাই সারা দেশের স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা-পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, পাবলিক ও বেসরকারি সব বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। চলমান উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষাও আজ ১ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।

এদিকে গতকাল বুধবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ১২ সিটি করপোরেশন ও নরসিংদী পৌরসভা এলাকা ছাড়া সারা দেশের সরকারি সব প্রাথমিক বিদ্যালয় আগামী রোববার থেকে খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান কবে নাগাদ খুলবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো আভাস নেই।

শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী গত মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেছেন, জননিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ধাপে ধাপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলতে চান। এ মুহূর্তে তাঁরা নিরাপত্তা-ঝুঁকি নিরূপণ করছেন।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৯ দফার মধ্যেও ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবি রয়েছে। ২০ জুলাই দেওয়া এসব দফার মধ্যে সপ্তম দফায় রয়েছে, ‘দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ও ছাত্র সংসদ চালু করতে হবে।’

শিক্ষা প্রশাসনের সঙ্গে একটি বৈঠকে অংশ নেওয়া রাজধানী ঢাকার একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর কী ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে এবং করণীয় কী, তা নিয়ে বিস্তারিত আলাপ হয়েছে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি সাময়িক বন্ধসহ একাধিক পদক্ষেপ নিয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, ছাত্ররাজনীতি সাময়িক বন্ধ রাখা ও নিয়মানুযায়ী আবাসিক হলে সিট বরাদ্দ, মাস্টার্স শেষ হলে সিট বাতিলসহ বিভিন্ন বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে শিক্ষা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।

বৈঠকগুলোতে উপস্থিত অন্য কয়েকজন জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলন কেন্দ্র করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়েও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, এখন পর্যন্ত দেশের ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ২৯ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। এর বাইরে চারটি উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আর্থিক ক্ষতি না হলেও এগুলোর কিছু শিক্ষার্থী হতাহত হয়েছেন। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে মোট ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৫ কোটি টাকা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৫ কোটি এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুরের হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়—এই পাঁচ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সব মিলিয়ে প্রায় ৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সূত্রঃ আজকের পত্রিকা

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০১/০৮/২০২৪


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading