কুড়িগ্রামঃ জেলার ভূরুঙ্গামারীতে একটি মাদ্রাসায় ২২ বছর যাবৎ অফিস সহকারী পদে কর্মরত থাকা অবস্থায় একই পদে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে অন্য একজনকে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার যোগসাজশে এমন নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে উপজেলার কামাত আঙ্গারীয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে গত সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী অফিস সহকারী সফিয়ার রহমান।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ নীতিমালা অনুযায়ী দাখিল মাদ্রাসার ক্ষেত্রে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর (এসিও) নামে একটি পদ রয়েছে। কামাত আঙ্গারীয়া দাখিল মাদ্রাসার অফিস সহকারী পদে ২০০২ সালে নিয়োগ পান সফিয়ার রহমান এবং ২০১৪ সালের জুলাই মাসে উচ্চতর স্কেলপ্রাপ্ত হন। উক্ত পদে প্রথম এমপিও কপিতে পদবি ছিল টাইপিস্ট কাম ক্লার্ক (সিটি)। পরবর্তী সময়ে সিটি পদের নামকরণ সংশোধন করে এসিও করা হয় এবং প্রতিষ্ঠান প্রধানদের তা সংশোধন করার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু ওই মাদ্রাসার সুপার তা সংশোধন না করে চলতি বছরের গত জানুয়ারি মাসে এমপিও শিটে সফিয়ার রহমানকে এবতেদায়ি জুনিয়র শিক্ষক (ইবি-টি) দেখিয়ে গোপনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এসিও পদে মো. খালেদুজ্জামান নামে একজনকে নিয়োগ দেন। এ ঘটনা প্রকাশ হলে এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এবং বিষয়টি তদন্তের দাবি জানিয়ে সফিয়ার রহমান বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযোগের বিষয়ে মাদ্রাসার সুপার সাইদুর রহমান বলেন, ‘কাজ করতে গেলে ভুল হতেই পারে। এটা নিয়ে এত খোঁচাখুঁচির কী আছে? সোমবার এটা নিয়ে ইউএনও স্যারের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। আমাকে সংশোধনীর জন্য এক মাস সময় দেওয়া হয়েছে।’
যোগসাজশের বিষয়ে জানতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রহমানকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ধরেননি।
উল্লেখ্য, গত ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ভূরুঙ্গামারী নেহাল উদ্দিন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রশ্নফাঁস সংক্রান্ত ঘটনায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরবর্তী সময়ে ২০২৩ সালে ১৯ মার্চ উপজেলার ২১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ উত্থাপন করে তাকে এ উপজেলায় পুনরায় দায়িত্ব প্রদান না করার জন্য জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করেন। কিন্তু এসব অভিযোগের তোয়াক্কা না করে রহস্যজনকভাবে তার বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করে তাকে পুনরায় এ উপজেলায় দায়িত্ব দেওয়া হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গোলাম ফেরদৌস বলেন, ‘এ ব্যাপারে সব পক্ষকে ডেকে বিষয়টি দ্রুত সংশোধন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৪/০৪/২০২৪
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.