বরিশাল: বরিশালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর প্রায়ই নানা কারণে হামলা করছেন ম্যানেজিং কমিটির সদস্যসহ সংশ্লিষ্টরা।
বিভিন্ন সময় ম্যানেজিং কমিটিতে জায়গা না পাওয়া, ভুয়া বিলের মাধ্যমে স্কুলের টাকা উত্তোলন, নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অনৈতিক কাজে শিক্ষকরা বাধা দিলে রোষানলে পড়েন।
সেইসঙ্গে অনেকেই শিকার হন হামলার। তবে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হয়, বলছে পুলিশ।
বরিশালের বাবুগঞ্জের চাঁদপাশা বকশিরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। বিদ্যালয় পরিচালনায় নতুন কমিটিতে স্থান না পাওয়ায় স্কুলে বসেই প্রধান শিক্ষক ফেরদৌসি বেগমকে মারধর করেছেন কমিটির সাবেক সদস্য আকতার হোসেন বাবু। এমন ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
শুধু বাবুগঞ্জই নয়, বরিশালের বিভিন্ন উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায়ই ঘটছে এমন ঘটনা।
প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে শুধু বরিশালের ১০ উপজেলায় পাঁচ থেকে সাতটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের হামলা শিকার হয়েছেন। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে ছয়টি। তবে আসামিদের শাস্তি হবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কায় শিক্ষকরা।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান শাহীন বলেন, গত কয়েক বছর ধরে শিক্ষকদের ওপর ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের হামলা রীতিমতো রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোনোভাবেই এসব হামলা থামানো যাচ্ছে না। আইনের দ্বারস্থ হলেও কতটুকু বিচার পাবেন, তা নিয়েও শঙ্কিত হামলার শিকার শিক্ষকরা। আমরা চাই এসব বন্ধ হোক।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বলছে, বিভিন্ন সময় ম্যানেজিং কমিটিতে পদ পাওয়া না পাওয়া, ভুয়া বিলের মাধ্যমে স্কুলের টাকা উত্তোলন, নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অনৈতিক কাজ করতে চায়। এতে বাধা দিলেই ঘটে নানান বিপত্তি।
বরিশাল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ মো. আকতারুজ্জামান বলেন, বিভিন্ন সময় ম্যানেজিং কমিটি অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর চেষ্টা করে। ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা করে। এমনকি অনেক সময় স্কুলের জমা টাকা নানা অজুহাতে উঠাতে চায়। এসব বিষয়ে সরকারের নিয়ম নীতি মেনে শিক্ষকরা বাধা দিলেই বাধে বিপত্তি। হামলা করা হয় শিক্ষকদের ওপর।
পুলিশ বলছে, শিক্ষক মারধরের ঘটনায় অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার মো. আলী আশরাফ ভূঞা বলেন, অভিযোগ পেলে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হয়ে থাকে। এতে কোনো ছাড় দেওয়া হয় না।
বরিশাল জেলার ১০ উপজেলার এক হাজার ৫৯০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে, যাতে দুই লাখ ২১ হাজার ৪৮ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/২৪/০৪/২০২৪
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.