নিজস্ব প্রতিবেদক।।
পাবনার ভাঙ্গুড়ায় অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বিয়ের পর এক নববধূকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। ঘটনার ১৩ দিন অতিবাহিত হলেও এখনও ভুক্তভোগী উদ্ধার না হওয়ায় শঙ্কার মধ্যে রয়েছে পরিবারটি।
অভিযুক্ত আতিকুল হাসান বিপ্লব ভাঙ্গুড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি, ভাঙ্গুড়ার রাঙালিয়া এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন ও তার ছেলে ভাংরা পৌরসভার মেয়র গোলাম হাসনাইনের ঘনিষ্ঠজন বলে জানা গেছে। থানায় অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার না পাওয়ায় সম্প্রতি আদালতে মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীর মা।
অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, ভুক্তভোগী ভাঙ্গুড়া হাজী জামাল উদ্দিন ডিগ্রী কলেজে পড়াশোনা করতেন। কলেজে আসা যাওয়ার পথে দীর্ঘদিন ধরে আতিকুল হাসান বিপ্লব কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। মেয়েটি এ বিষয়ে তার বাবা-মাকে জানালে পরবর্তীতে আরও বেশি উত্ত্যক্ত করতেন বিপ্লব। এক পর্যায়ে মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দেন বাবা-মা। বিয়ের পর গত ৩১ মার্চ মেয়ে তার বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসলে বিপ্লব একটি মাইক্রোবাসে করে অপহরণ করে। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দিয়ে প্রতিকার না পেয়ে গত ৮ এপ্রিল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগীর মা রেখা পারভিন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর বোন বলেন, আমরা থানায় অভিযোগ দিতে গিয়েছিলাম কিন্তু বিপ্লব ছাত্রলীগ নেতা এমপি ও পৌরসভা মেয়রের ঘনিষ্ঠ লোক হওয়ায় পুলিশ অভিযোগ নেয়নি, পরে আমরা আদালতে গিয়েছি। আদালতের কপি থানায় দিলেও পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আমাদের দাবি- আমাদের বোনকে উদ্ধার করে আনার পর যদি সে বলে তার স্বেচ্ছায় গিয়েছি তাহলে আমাদের কোনো দাবি নেই। কিন্তু পুলিশ তো উদ্ধারই করছে না। সে এখনও বেঁচে আছে না মরে গেছে সেটুকু জানার অধিকার কি আমাদের নেই।
তবে ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক জানান, থানায় কোনো অভিযোগ দেয়নি ভুক্তভোগীর পরিবার। তারা শুধু জিডি করেছেন। পুলিশের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ মিথ্যা। আদালতের মামলার কপি এখনো থানায় আসেনি। আসলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা আতিকুল হাসান বিপ্লবের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান সবুজ বলেন, আমিও বিষয়টি শুনেছি। আদালতে মামলা হয়েছে। আসলেই যদি তিনি দোষী প্রমাণিত হন তাহলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাবনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মকবুল হোসেনের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তার ঘনিষ্ঠরা জানান তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। কাজেই এ ধরনের কাজের সঙ্গে তার ইন্ধন ও সম্পৃক্ততার খবর অসত্য।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/জামান/১৩/০৪/২০২৪