নিজস্ব প্রতিবেদক।।
তাহিরপুরে হাজী এম এ জাহের উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে বিতর্কিত নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে এখনও তোড়জোড় চলছে। বুধবার নিয়োগের ফলাফল শিটে স্বাক্ষর দেওয়ার জন্য শিক্ষা কর্মকর্তাকে আবারও চাপ প্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে শফিকুল ইসলাম নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে।
বুধবার দুপুরে সুনামগঞ্জ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন তাহিরপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান।
শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, দাপ্তরিক একটি কাজে তিনি বুধবার সুনামগঞ্জ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে যান। সেখানে একটি কক্ষে বসা ছিলেন। এ সময় এম এ জাহের উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি রুহুল আমিন দারু মিয়ার সঙ্গে শফিকুল ইসলাম নামে ওই ব্যক্তির কথোপকথন শুনতে পান।
শফিকুল সভাপতি রুহুল আমিনের আপন ছোট ভাই। তারা জোর করে নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল শিটে তাঁর স্বাক্ষর নেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা করছিলেন। এক পর্যায়ে নির্ধারিত কক্ষে এসে তাঁকে ফলাফল শিটে স্বাক্ষর দিতে চাপ দিতে থাকেন তারা। পরে হাসপাতালে যাওয়ার কথা বলে কৌশলে সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন মিজানুর রহমান।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে শফিকুল ইসলামের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি বলেন, ‘স্বাক্ষরের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে চাপ দিয়েছি। এ জন্য তিনি কি স্ট্রোক করেছেন?’ এ কথা বলেই লাইন কেটে দেন তিনি। অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম বিদ্যালয় পরিচালনার সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়েও এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ওয়ান ইলেভেনের সময়ে বড়ছড়া বাজারে পল্লী চিকিৎসকের ব্যবসা করতেন এই শফিকুল। বর্তমানে সুনামগঞ্জ শহরে শাহী রেস্টুরেন্ট নামে তাঁর একটি হোটেল আছে।
বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী হারিস উদ্দিন জানান, শফিকুল ইসলাম সহকারী প্রধান শিক্ষক পদের প্রার্থী ইবাদ আলীর নিকটাত্মীয়।
এদিকে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, তদন্ত প্রতিবেদন দ্রুত সময়ের মধ্যেই জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জমা দেওয়া হবে।
২০২৩ সালের ২২ নভেম্বর হাজী এম এ জাহের উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় অনিয়ম হওয়ায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফলাফল শিটে স্বাক্ষর করেননি। সেজন্য তাঁকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে আটকে রাখা হয়েছিল। এরপর ইউএনওর সহযোগিতায় সেখান থেকে ছাড়া পান মিজানুর রহমান।
পরে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রাখে পরিচালনা কমিটি। ২০২৪ সালের ১৬ জানুয়ারি ইবাদ আলী নামে এক ব্যক্তিকে সে পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়মের বিষয়ে এম এ জাহের উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আক্তারুজ্জান খান একটি লিখিত অভিযোগ সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর দাখিল করা হয়।
পরে অভিযোগটি তদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ১ মার্চ বিদ্যালয়ে এসে সরেজমিন তদন্ত করেন।সমকাল
শিক্ষাবার্তা ডটকম/জামান/০৪/০৪/২০২৪