কুড়িগ্রামঃ তোপের মুখে রৌমারীর যাদুরচর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. রফিকুল ইসলাম পাঁচজন কর্মচারী নিয়োগে ঘুস হিসাবে নেওয়া ১৬ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছেন। এর আগে বুধবার প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা মজিবুর রহমান ও শিক্ষক হাশেম পৃথকভাবে ডিজি, ডিডি, দুদক, জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম ২০০২ সালের ২৩ জানুয়ারি যাদুরচর ডিগ্রি কলেজে অধ্যক্ষ হিসাবে যোগদান করেন। কিছুদিন যেতে না যেতেই তিনি জালিয়াতি, প্রতারণা, নিয়োগ বাণিজ্য, অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন। এই সময়ের মধ্যে বিভিন্ন পদে কয়েক দফায় নিয়োগ দেওয়ার নামে চাকরি প্রত্যাশীদের কাছ থেকে প্রায় চার কোটি টাকার হাতিয়ে নিয়েছেন। এর মধ্যে অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম ডিজির প্রতিনিধির স্বাক্ষর ও সিলমোহর জাল করে ঘুসের বিনিময়ে তিনজন শিক্ষককে নিয়োগ দিয়েছেন। ২০০৬ সালে ডিগ্রি কোর্স খোলার নামে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে ১২ জনের কাছ থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে একজনকে চাকরি দিয়েছেন। ২০১৫ সালে ডিগ্রি কোর্স চালু করতে গিয়ে ২৩ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দেন। তাদের মধ্যে অধ্যক্ষের চাহিদা অনুযায়ী ঘুস দিতে না পারায় ১৫ জনকে নিয়োগপত্র না দিয়ে যোগদানপত্র নিয়েছেন। অপরদিকে কলেজে কারিগরি, বাণিজ্যিক ও শান্ত মরিয়মের বিএড শাখা খুলে নিয়োগ বাণিজ্যও করেছেন তিনি। কর্মচারী হামিদুল, আমিরসহ বেশকয়েকজন শিক্ষক বলেন, গরু বিক্রয় ও লাভের ওপর টাকা নিয়ে চাকরি নিয়েছি। কিন্তু স্থায়ীভাবে চাকরিতো হয়নি, উপরন্তু লাভ দিতে গিয়ে জীবন শেষ। এ নিয়ে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা মজিবুর রহমান কোর্টে ২টি মামলা করেন। অবশেষে বেকায়দায় পরে অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম পাঁচজনের ১৬ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছেন। এছাড়াও অধ্যক্ষ রফিকুলের বিরুদ্ধে হাফডজন মামলা চলমান থাকলেও তিনি কলেজ সভাপতি ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার যোগসাজশে ২০২৩ সালে গোপনে ২৩ শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে কোটি টাকা ঘুষ গ্রহণ করেছে বলে ভুক্তভোগীরা জানান।
অভিযোগ রয়েছে, নিয়োগ বাণিজ্য ছাড়াও বিগত দিনে ভর্তি ও ফরম ফিলাপে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেন অধ্যক্ষ। ১৮ বছরে শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যয্য পাওনা ১০% বেতন-ভাতা ও টিওশন ফি বাবদ কোটি টাকা আদায় হলেও তা না দিয়ে নিজেই আত্মসাৎ করেন।
অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম বলেন, নানাবিধ কারণে তাদের চাকরি হয়নি। ফলে তাদের টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সঠিক নয়। আমি কোনো আনিয়ম করি নেই।
কলেজ সভাপতি মো. সবুজ মিয়া বলেন আমি নিয়ম অনুযায়ী ৯ জন কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছি টাকা ঘুস গ্রহণ করা হয়নি। কমচারীর ঘুসের টাকা ফেরত বিষয়ে তিনি বলেন, এসব নিয়োগ আমার সময়কার নয়।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৩/০৩/২০২৪
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.