ঢাকাঃ বাংলাদেশের চাকরির বাজারে দক্ষ জনবলের ঘাটতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) দিনব্যাপী ইউজিসিতে ইরাসমাস প্লাস স্কলারশিপ ও ফেলোশিপ নিয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
ইউজিসি চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের কাউন্সিলর ও টিম লিডার (শিক্ষা ও মানব সম্পদ উন্নয়ন) উরাতে এস মার্ভেলি।
প্রফেসর আলমগীর বলেন, সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে উচ্চশিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় এখন সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ ও ল্যাব সুবধিা বৃদ্ধি এবং দক্ষ জনবল তৈরি করতে হবে।
প্রফেসর আলমগীর বলেন, ইরাসমাস প্লাস মোবিলিটি প্রোগ্রামের আওতায় বৃত্তি নিয়ে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অবস্থিত শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মাস্টার্স ও জয়েন্ট মাস্টার্স প্রোগামে পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছেন। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বিশ্ব দরবারে নিজেদের মেলে ধরার বড় সুযোগ পাচ্ছেন বলে তিনি জানান। এছাড়া, এটি উচ্চতর গবেষণা, নতুন নতুন দেশ ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় এবং বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার একটি আদর্শ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বিবেচিত।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের চাকরির বাজারে দক্ষ জনবলের ঘাটতি রয়েছে। ইরাসমাস প্লাস প্রোগ্রামের আওতায় বৃত্তি নিয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ শেষে তাদের দেশে ফিরে এসে উচ্চশিক্ষা ও শিল্প প্রতিষ্ঠানে অবদান রাখার আহ্বান জানান।
উরাতে এস মার্ভেলি বলেন, বাংলাদেশ সরকার শিক্ষায় অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এজন্য তিনি বাংলাদেশ সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি আরও বলেন, বিশ্বে দিন দিন দক্ষ জনবলের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইরাসমাস প্লাস স্কলারশিপ ও ফেলোশিপ তাদের জন্য একটি সফল প্রোগাম। এতে ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ও গবেষকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইরাসমাস প্লাস প্রোগামের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা দক্ষতা বৃদ্ধি এবং নতুন আইডিয়া বিনিময় করতে পারবে বলে তিনি জানান।
ড. ফেরদৌস জামান বলেন, দেশের উচ্চশিক্ষার মান বৃদ্ধিতে ইউজিসি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম গ্রহণ করছে। ইউজিসি উচ্চতর শিক্ষার সুযোগ আরও সম্প্রসারিত করবে। ইরাসমাস প্লাস প্রোগামের আওতায় শিক্ষার্থীরা বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ এবং নিজেদের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ পায় বলে তিনি জানান।
ইউজিসি সিনিয়র সহকারী সচিব মো. মামুনের সঞ্চালনায় সভায় বিভিন্ন পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। সভায় ইরাসমাস প্লাস প্রোগামের আন্তর্জাতিক মান, বৃত্তির সুযোগ-সুবিধা, বৃত্তির আওতায় সক্ষমতা বৃদ্ধি, আবেদন প্রক্রিয়া, ক্রেডিট মোবিলিটি নিয়ে পৃথক ৬টি নলেজ শেয়ারিং সেশন অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া, সভায় ইউজিসি, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
১৯৮৭ সালে শুরু হয়ে এটি বিগত ৩৬ বছরে শিক্ষার্থী ও গবেষকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় এবং সম্মানজনক শিক্ষাবৃত্তি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। জয়েন্ট মাস্টার্স প্রোগ্রামে ৪টি সেমিস্টার ভিন্ন দেশে ভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ রয়েছে। প্রত্যেক দেশ থেকেই আলাদা মাস্টার্স ডিগ্রির সার্টিফিকেট দেওয়া হয় এই স্কলারশিপের মাধ্যমে।
ইরাসমাস প্লাস বৃত্তির আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, সব ধরনের টিউশন ফি, লাইব্রেরি ফি, পরীক্ষা ফি, গবেষণা সংক্রান্ত ফিসহ বিভিন্ন ধরনের কনফারেন্স, সেমিনার, সামার স্কুল, উইন্টার স্কুল প্রভৃতি সুবিধা পাওয়া যায় বিনামূল্যে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৮/০১/২০২৪
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.