খুলনাঃ খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (খুকৃবি) ৭৩ জন শিক্ষকের নিয়োগ সংক্রান্ত জটিলতা সমাধান, ৩৯ জন শিক্ষকের পদোন্নতি ও তাদের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিতের একাডেমিক, ডিন ও বিভাগীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন শিক্ষকরা। একইসঙ্গে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান বন্ধ রেখে শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালন করছেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে কার্যত অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের জুলাই ও নভেম্বর মাসে ৭৩ জন শিক্ষক নিয়োগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তখন নিয়োগে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০২২ সালের ৩ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি টিম তদন্ত করে ৭৩ জন শিক্ষকের নিয়োগ বাতিলের সুপারিশ করে।
পরবর্তীতে শিক্ষকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় চলতি বছরের ২৪ মার্চ একটি পুনঃমূল্যায়ন কমিটি গঠন করে। ওই কমিটি গত ২৩ আগস্ট মন্ত্রণালয়ে তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। কিন্তু এরপর আর কোনো অগ্রগতি হয়নি।
নিয়োগ সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনের দাবিতে চলতি মাসের প্রথমদিক থেকে শিক্ষকরা মানববন্ধনসহ বিভিন্ন আন্দোলন শুরু করেন। গত ৮ অক্টোবর থেকে তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি এবং ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করছেন। এরপর গত সোমবার সকালে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন এবং ডিন ও বিভাগীয় প্রধানদের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়।
এদিকে, শিক্ষকদের আন্দোলনে বিপাকে পড়েছেন সাড়ে তিনশ শিক্ষার্থী। সেশন জটে পড়ার আশঙ্কা করছেন তারা। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে অবিলম্বে জটিলতা নিরসনে পদক্ষপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. আশিকুল আলম বলেন, মন্ত্রণালয় ৭৩ জন শিক্ষকের নিয়োগ বাতিলের সুপারিশ করেছিল। বোর্ডে বিশেষজ্ঞ রাখার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের, নিয়োগ প্রার্থীর নয়। তিনি জানান, গত নভেম্বর মাসে ৩৮ জন প্রভাষকের সহকারী অধ্যাপকে পদোন্নতির কথা ছিল। কিন্তু তা ঝুলে আছে। এছাড়া শিক্ষকরা স্কলারশিপ পাচ্ছেন না।
তিনি আরও বলেন, পুনঃমূল্যায়ন কমিটি ৭৩ জনের ফাইল ও নিয়োগের বৈধতা যাচাই করেছে। দুই মাস ধরে প্রতিবেদনটি মন্ত্রণালয়ে পড়ে আছে। যার ফলে আমরা প্রতিনিয়ত সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছি এবং হতাশায় ভুগছি।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মো. আসাদুজ্জামান মানিক জানান, জটিলতা নিরসন না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্লাসে ফিরে যাবেন না। প্রয়োজনে শিগগিরই তারা আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করবেন। গত ৭/৮ দিন ধরে তাদের ক্লাস-পরীক্ষা হচ্ছে না। শিক্ষকরা যদি অনির্দিষ্টকাল কর্মবিরতি পালন করেন, তাহলে সেশনজট সৃষ্টি হতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবুল কাসেম চৌধুরী জানান, নিয়োগগুলো হয়েছিল আগের উপাচার্যের সময়ে। তিনি বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে শিক্ষক সমিতির সঙ্গে একাধিক বৈঠক, শিক্ষামন্ত্রী ও সচিবের সঙ্গে কথা বলেছেন। পুনঃমূল্যায়ন কমিটি মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এখন তা অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। শিগগিরই সিদ্ধান্ত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৯/১০/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.