ঢাকাঃ ব্যবসায়িক লেনদেনের বিরোধের জেরে একটি মাঠা কোম্পানির গাড়ি একদিন আটকে রাখার পর ৬৫ হাজার টাকা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ছাত্রলীগের এক কর্মী।
গতকাল মঙ্গলবার রাত ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের পাশে পিকআপটি আটকে রাখা হয়। আজ বুধবার বিকেল পাঁচটায় গাড়িটি ছেড়ে দেওয়া হয়। এ সময় আটকে রাখা গাড়িটি ফেরত দেওয়ার বদলে ৬৫ হাজার টাকা নেন অভিযুক্ত; এর বিনিময়ে নিজের কাছে থাকা একটি পুরনো ভ্যান ফেরত দেন তিনি।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত মেহেদি হাসান মিশাদ বাংলা বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের অনুসারী বলে পরিচিত মিশাদ।
জানা গেছে, ক্যাম্পাসে মাঠা বিক্রির ব্যবসা করতেন মিশাদ। ব্যবসায়ীক কাজের জন্য ৮০ হাজার টাকা দিয়ে মাঠা কোম্পানির কাছ থেকে একটি ভ্যান কেনেন তিনি। চার মাসে আগে বৃষ্টির মৌসুম শুরু হলে মাঠা বিক্রি কমে যায়। সে সময় মিশাদ তার ভ্যানটি কেনা মূল্যের চেয়ে কিছু টাকা কমে মাঠা কোম্পানিকে কিনে নিতে বলে। কিন্তু ব্যবসার অবস্থা ভালো না থাকায় কোম্পানি কিছুদিনের সময় চেয়ে নেয়। পরে গতকাল কোম্পানির একটি মাঠাভর্তি পিকআপ ক্যাম্পাসে আসলে মিশাদ পিকআপটি আটকে রাখে। সেই সঙ্গে ৭০ হাজার টাকা দাবি করে সে।
পরে বুধবার বিকেল পাঁচটায় মাঠা কোম্পানি ৬৫ হাজার টাকা দিলে গাড়িটি ছেড়ে দেয় মিশাদ। তার কেনা সেই পুরাতন গাড়িটি ফেরত দেন।
মেহেদি হাসান মিশাদ বলেন, ‘বর্ষার মৌসুম শুরু হলে আমি কোম্পানিকে ভ্যান ফেরত নিতে বলি, কিন্তু প্রায় চারমাস আমাকে টাকা দেবে দেবে বলে আসছে, কিন্তু দেয় না। পরে আজকে তারা আমার কাছে আসলে আমি আমার পাওনা টাকা দিয়ে দেওয়ার জন্য বলি। আমি অন্য কোনো কারণে গাড়ি আটকে রাখিনি।’
পিকআপের চালক আব্দুল হালিম বলেন, ‘মিশাদ ভাই কিছুদিন আগে কোম্পানিকে গাড়িটি ফেরত নিতে বলে, কিন্তু ব্যবসা ভালোভাবে না চলায় কোম্পানি কিছুদিন সময় চেয়ে নেয়। পরে কালকে আমি সহযোগী মিশাদ ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলতে ক্যাম্পাসে গেলে গাড়িটি আটকে রাখে। পরে কোম্পানির মালিকের সঙ্গে কথা বলে ৬৫ হাজার টাকা দিল গাড়িটি ছেড়ে দেয়।’
তবে মাঠা কোম্পানি সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পুরনো ভ্যান সাধারণত অর্ধেক দামে নিয়ে থাকেন তারা। কিন্তু মিশাদ পাঁচ মাস ব্যবহার করে ভ্যানটির পুরো দাম চাইছিল। এর মাঝে গতকাল পিকআপ আটকে চালককে মারধর করে সে। সে ভ্যানের পুরো দাম চায়। ৬৫ হাজার টাকা দেওয়ায় তাদের অন্তত ২০ হাজার টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন বলেন, ‘আমি যতটুকু জানি মিশাদ ক্যাম্পাসে মাঠার ব্যবসা করত। সে তার ব্যবসায়ের জন্য মাঠা কোম্পানিকে টাকা দিয়েছিল। সেই টাকা সে ফেরত নেওয়ার সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে জন্য গাড়িটি আটকে রেখেছিল। এখানে অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল না তার।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। কেউ আমাকে জানায়নি। আমি হল প্রভোস্টের সঙ্গে কথা বলে দেখছি। ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হলে ছাত্রশৃঙ্খলা বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৮/১০/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.