এইমাত্র পাওয়া

শাসনের অধিকার কেড়ে নেয়ায় শিক্ষক লাঞ্ছনা বাড়ছে

রংপুরঃ  শিক্ষার্থীদের শাসন করা শিক্ষকদের নাগরিক অধিকার, সেই অধিকার আইন করে কেড়ে নেয়ার কারণেই শিক্ষক লাঞ্ছনা বাড়ছে। যা জাতির জন্য খুবই ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করবে, জাতি ধ্বংস হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষকরা। চুয়াডাঙ্গা ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী কর্তৃক শিক্ষককে চড় মারার ঘটনার প্রতিবাদে রংপুর জিলা স্কুল আয়োজিত প্রতিবাদ মানববন্ধনে এই মন্তব্য করেন শিক্ষকরা।

দুপুরে নগরীর ডিসির মোড় এলাকায় জিলা স্কুলের প্রধান ফটকের সামনে প্রতিবাদী মানববন্ধনে অংশ নেন শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। এ সময় জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক এ আর মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে মানববন্ধন-সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির রংপুর বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক শফিয়ার রহমান, জিলা স্কুলের শিক্ষক সাহিনা সুলতানা, নিরঞ্জন রায়, হান্নান চৌধুরী প্রমুখ। এ সময় জিলা স্কুলের শিক্ষক সাহিনা সুলতানা বলেন, ‘ আমরা প্রতিবাদ মানববন্ধন করছি এ কারণে যে ওই শিক্ষার্থীকে যথাযথ শাস্তির আওতায় আনতে হবে। তাহলে অন্য কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর সাহস পাবে না। অভিভাবকদের সন্তানদের ভালোভাবে শিস্টাচার শেখানোর কথাও বলেন তিনি।’

মানববন্ধন চলাকালে রংপুর বিভাগীয় সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শফিয়ার রহমান বলেন, ‘সব দিক বিবেচনা করে আমরা যদি শিক্ষকের মর্যাদা দিতে না পারি। শিক্ষকরা যদি স্বাধীনভাবে কাজ করতে না পারেন। তাহলে আমরা পিছিয়ে যাব। জাতি ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই দোষী শিক্ষার্থীর শাস্তির পাশাপাশি বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকরা যে নিগৃহীত হচ্ছে। যেসব জায়গায় শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণ করে যেসব জায়গা কেড়ে নেয়া হয়েছে, সেগুলো ফিরিয়ে দিতে হবে। একটি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা তৈরি করতে হবে। যার মাধ্যমে ছাত্র-শিক্ষক সুসম্পর্ক নিশ্চিত হয়, শিক্ষক-অভিভাবক সুসম্পর্ক নিশ্চিত হয়। এ ধরনের উদ্যোগ নেয়া না হলে জাতিকে ভয়াবহ পরিণাম ভোগ করতে হবে।’

মানববন্ধনের সভাপতি রংপুর জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক এ আর মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমি যদি আমার সন্তানকে শাসন করতে পারি, তাহলে কেন আমি আমার সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীকে শাসন করতে পারব না। এটা আমার নাগরিক অধিকার, একজন শিক্ষক হিসেবে অধিকার, আমরা অবশ্যই শিক্ষার্থীদের শাসন করতে পারি।’

তিনি বলেন, ‘একজন অভিভাবকের কাছে তার জীবনের সর্বোচ্চ সম্পদ হলো তার সন্তান। সেই সন্তানকে যখন মানুষ করবার জন্য, শেখানোর জন্য আমাদের কাছে ন্যস্ত করে, তখন আমি মনে করি যে, তার সব দায়দায়িত্ব আমাদের ওপর তারা ন্যস্ত করে। তাহলে কেন আমরা এই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে একজন অভিভাবক যেভাবে অধিকার রাখে যোগ্যতা রাখে, তাহলে আমরা কেন সেই যোগ্যতার বাইরে যাব। সে কারণে সুশীল সমাজের চিন্তাভাবনার সাথে আমি একমত প্রকাশ করি না। কিন্তু যেহেতু আইনের প্রয়োগ আছে, আমাদের নির্দেশনা আছে। সে কারণে আমরা শিক্ষার্থীদের শাসন করতে পারি না। যার জন্যই শিক্ষার্থীরা আজকে এই পর্যায়ে চলে গেছে। সামগ্রিকভাবে বিভিন্ন ধরনের আশ্রয়, প্রশ্রয়ের কারণেই আজকের এই অবস্থা। এখান থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। শিক্ষকদের আইনের মারপ্যাচে ফেলে শাসন করার ক্ষমতা খর্ব করলে জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১২/১০/২০২৩     

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.