বগুড়াঃ জেলার আদমদীঘির ছাতিয়ানগ্রামের দুর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, দুর্নীতি ও সভাপতির স্বাক্ষর জাল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম ইউপি সদস্য এবং ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি মহসীন আলীসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক ও অভিভাবকরা এসব অভিযোগ করেন। তারা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অচিরেই শিক্ষা অফিসে একটি লিখিত অভিযোগ এবং মানববন্ধন করবেন বলেও জানান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০৪ সালে উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিদের সহযোগিতায় প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়। শুরু থেকে প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদসহ বর্তমান শিক্ষকরা ওই বিদ্যালয়ে কর্মরত। সম্প্রতি প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সভাপতির স্বাক্ষর জাল করা, এক সহকারী শিক্ষককে জরিমানা, ক্ষুদ্র মেরামত কাজের বরাদ্দের অর্থ আত্মসাৎ ও সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করাসহ নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক গোলাম মোস্তফা জানান, সপ্তাহ দুয়েক আগে প্রথম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী তার কাছে আসার সময় কোনো কিছুর সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ঠোঁট ফেটে যায়। কয়েকদিন পর প্রধান শিক্ষক ওই শিক্ষার্থীর কান ফাটানোর অভিযোগ তুলে অভিভবক ও শিক্ষা কর্মকর্তাকে স্কুলে ডেকে নিয়ে চাকরির ভয় দেখিয়ে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ও বিদ্যালয়ের সভাপতি মহসীন আলী জানান, বিদ্যালয়ের ক্ষুদ্র মেরামত কার্যক্রমের জন্য দুই লাখ টাকা বরাদ্দের রিটার্ন ফরমে প্রধান শিক্ষক তার স্বাক্ষর জাল করেন। কৌশলে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হক আবুর শরণাপন্ন হয়ে স্কুলের উন্নয়নের স্বার্থের কথা বলে তার (মহসীনের) স্বাক্ষর নেন। ৭০-৭৫ হাজার টাকা ব্যয়ে বারান্দায় গ্রিল লাগানো এবং কিছু রঙের কাজ করেন। বাকি টাকা তিনি আত্মসাৎ করেন।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ জানান, শিক্ষক মোস্তফা ছাত্রকে মেরে কান ফেটে ফেলেছে সত্য। জরিমানার বিষয়ে তিনি জানেন না। বরাদ্দের অর্থ ব্যয় সর্ম্পকে তিনি বলেন, সেসময় বরাদ্দের অর্থ থেকে সভাপতি কিছু টাকা চেয়েছিলেন। কিছু দিয়েছিলামও। কিন্তু চাহিদামত দিতে পারিনি বলে অভিযোগ করছেন।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মশিউল ইসলাম জানান, বরাদ্দের টাকা উত্তোলন এবং খরচের ক্ষেত্রে সভাপতি-প্রধান শিক্ষকের সমন্বয় প্রয়োজন হয়। স্বাক্ষর জাল করা বা অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি সভাপতি আমাদের কখনো জানাননি। সেসময় অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হতো।
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.