নিজস্ব প্রতিবেদক, নীলফামারীঃ জেলার ডিমলার ডালিয়া দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সহিদা ইয়াসমিনের সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। মূলত সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পাঁচ বছর পর পর্যন্ত সিনিয়র শিক্ষকের স্কেল গ্রেডে বেতন পাওয়ায় এ অভিযোগ উঠে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডালিয়া দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে সহিদা ইয়াসমিন ১৯৯৮ সালের ২০ সেপ্টেম্বর সহকারী শিক্ষিকা (বিএসসি) পদে যোগদান করেন। এরপর ২০০০ সালে তিনি এমপিওভুক্ত হন। এমপিওভুক্ত হবার পরে তিনি ১৯৯৫ সালের এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামোর আলোকে ১০ম পে স্কেলে বেতন পান। এরপর সহকারী শিক্ষিকা পদে ৮ বছর কর্মকাল পার হবার পরে ৯ম পে স্কেলে বেতন ভাতা পান। ২০১১ সালে ১৪ মার্চ বিদ্যালয়টিতে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেন তৎকালীন প্রধান শিক্ষক মোসলেম উদ্দীন। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আবেদন করে ২০১১ সালের জুন মাসের ২০তারিখে সহকারী শিক্ষক পদে যোগদান করেন সহিদা ইয়াসমিন।
এ পর্যন্ত সব ঠিক থাকলেও বাঁধ সাধে উচ্চতর স্কেল পেতে। এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো ২০০৯ অনুযায়ী, সহকারী প্রধান শিক্ষকের পে স্কেল ৮ম গ্রেডে। সহকারী প্রধান শিক্ষিকা সহিদা ইয়াসমিন ২০১১ সালে নিয়োগ পেলেও ২০১৭ সাল পর্যন্ত তিনি সিনিয়র শিক্ষকের ৯ম পে স্কেল অনুযায়ী বেতন ভাতা পান। এখানেই প্রশ্ন ওঠে, ঠিক কি কারণে ২০১১ সালে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগদান লাভ করলেও এরপর পাঁচ বছর পর্যন্ত তার আগের পে স্কেল গ্রেডে বেতন পেয়েছিলেন। তার নিয়োগ নিয়ে কোন জটিলতার জন্য নাকি যোগ্যতা সনদে কমতি?
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের একজন দাতা সদস্য বলেন, কিভাবে বা কার মাধ্যমে নিয়োগ হয়েছিল সে বিষয়ে কথা বলব না। কথা হচ্ছে ঠিক কি কারণে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পাওয়ার পাঁচ বছর পর্যন্ত তার বেতন গ্রেড একই পে স্কেল কোডে থাকে? তাহলে কি তার নিয়োগ বৈধ নয় না যোগ্যতার ঘাটতি। ধরেন আমি ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থেকে মেম্বর পদের বেতন উত্তোলন করি তাহলে কি এটা বৈধ হলো। বিষয়টি আমি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি গোচর আশা করি।
অভিযোগের এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সহিদা ইয়াসমিন শিক্ষাবার্তা’কে বলেন, আমার যে কয়েকটা বছর এই স্কেল আটকে ছিল তা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গাফিলতির জন্যই হয়েছিল। তৎকালীন ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি এবং প্রধান শিক্ষক এরা সহযোগিতা করলে আমার এই আর্থিক ক্ষতি হতো না। আমার যদি কোন কাগজ পত্রে ঘাটতি থাকত তাহলে নিয়োগ পেলাম কিভাবে। প্রধান শিক্ষক এবং ম্যানেজিং কমিটি অসহোযিগাতার কারণেই বেনবেইজ থেকে বার বার আমার উচ্চত স্কেল প্রাপ্তির কাগজ পত্র ফিরে আসছে। তিনি বলেন, বিষয়টি আপনারা দেখছেন দেখেন, আমার যে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে আপনাদের মাধ্যমে যদি সেটা ফেরত পাই তাহলে উপকৃত হব।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক মোসলেম উদ্দিন শিক্ষাবার্তা’কে বলেন, আমার সময়ে যথাযথ আইন-ই প্রক্রিয়ায় তার নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। তবে কি কারণে তার সহকারী প্রধান শিক্ষকের বেতন স্কেল পেতে এত দেরি হলো সে বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। আমার দপ্তর থেকে তার কাগজপত্র যথাযথ প্রকিয়ায় তাকে সরবরাহ করা হয়েছিল। শুনেছিলাম তিনি বেনবেইসে বেশ কয়েকবার কাগজপত্র জমা দিয়েছিল। তবে এত দেরি কি কারণে হলো সেটা আমি বলতে পারব না। তবে বিষয়টি নিয়ে যখন আপনার কাজ করছেন খোঁজ নিয়ে দেখেন আসলে সমস্যা কোথায়।
জানতে চাইলে ডিমলা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হালিমের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত অন্যান্য খবর পড়তে লিংক গুলোতে ক্লিক করুন
- ডালিয়া দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়: এডহক কমিটিতেই চলছে বছরের পর বছর
- নিয়োগ ও সনদ জালিয়াতি করে ২১ বছর ধরে শিক্ষকতা
- নিয়োগ ও সনদ জালিয়াতি করেও স্বপদে বহাল শিক্ষক বিশ্বনাথ
- ডিমলায় জাল সনদে শিক্ষক বিশ্ব নাথের বিশ্ব জালিয়াতি
- ফেঁসে যাচ্ছেন এমপিওভুক্ত ৮১৪ শিক্ষক, আমলনামা মন্ত্রণালয়ে
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২২/০৩/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.