মোহাম্মদ মোকাররম হোসেন (আপন)।।
শুরুতেই শ্রদ্ধা নিবেদন করছি,স্বাধীন বাংলার স্থপতি,বাঙালী হৃদয়ের স্পদন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী,বিশ্ববন্ধু জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানকে।
বাঙালী জাতি যখন স্বাধীনতার সুবর্নজয়ন্তি উদযাপনের পরিকল্পনায় বিভোর, ঠিক এমনি এক মহেন্দ্রক্ষণে দাঁড়িয়ে শুধু বেদনা আর হতাশার অথৈ সাগর গহীনে হারিয়ে যেতে বসেছে এ দেশ গড়ার ৯৭ % অবদান রাখা এম,পিও ভুক্ত শিক্ষক সম্প্রদায়ের জাতীয়করণের স্বপ্ন।
যে স্বপ্ন নিয়ে জাতির স্বপ্ন দ্রষ্টা বৈষম্য মুক্ত দেশ গড়ার যে স্বপ্ন এঁকেছিলেন, সেই স্বপ্ন আজ বাংলার মাটিতে ভুলুন্ঠিত হতে চলেছে। যে স্বপ্ন নিয়ে এ দেশেকে শত্রুমুক্ত করে স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন, সেই স্বাধীন দেশে আজ শিক্ষা ক্ষেত্রে পাহাড়সম বৈষম্য বিরাজ করছে।
আজও এ দেশ গড়ার কারিগররা সরকারী কোষাগার থেকে বেতন পায় না, পায় অনুদান! আর এই অনুদান পাওয়া যায় প্রতিমাসের ১৫-২০ তারিখে আজ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার শিক্ষকরা উৎসব ভাতা পায় ২৫%, বাড়িভাড়া পায় এক হাজার টাকা,চিকিৎসা ভাতা পায় পাঁচশত টাকা,নাই কোনো পেনশন ব্যবস্থা,নাই টাইম স্কেল,নাই অর্জিত ছুটি ভাতা,নাই তাদের সন্তানদের শিক্ষা ভাতা, নাই টিফিন ভাতা,নাই বদলী ব্যবস্থা,১০% কর্তনের বিনিময়ে আছে নাম মাত্র অবসর ও কল্যান ভাতা। যে কল্যান আর অবসর ভাতা ৯০% শিক্ষক বেঁচে থাকতে তুলতে পারেন না। এখানে এতো জটিলতা যে ঘুরতে ঘুরতে পায়ের পাতা পর্যন্ত ক্ষয়ে যায় তবু ভাতার দেখা আর হয় না। অবশেষে ধুকে ধুকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে এ দেশের বেশির ভাগ এম,পিও,ভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী।এ দুঃখের করুন কাহিনী আজ কারো বিবেককে নাড়া দেয় না, শিক্ষকরা যেনো আজ এ জাতির তামাসার পাত্র!
উন্নত দেশ গড়তে এ দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী,জাতির জনকের কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা একের পর এক উন্নয়নের মহাপরিল্পনা নিয়ে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছেন। নিজের অর্থায়নে মহাকাশে স্যাটেলাইট প্রেরণ করেছেন, পদ্ম সেতুর কাজ সমাপ্তির পথে, রুপপুর মেগা বিদ্যুত প্রকল্পে চলছে হরিলুট, সাতশত কোটি টাকা ব্যয়ে শিক্ষাটিভি স্থাপনের বাজেট প্রনয়ণ হচ্ছে। শুধু বাদ থেকে যাচ্ছে এম,পিও, ভুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ করার পরিকল্পনা।
বই পুস্তকে পড়েছি কোনো দেশ বা জাতি উন্নত করতে হলে সে দেশের শিক্ষার ভিত্তি মজবুত করা প্রয়োজন সবার আগে।শিক্ষিত জাতি তৈরী করতে পারলে সে দেশ উন্নত হতে বাধ্য।আর শিক্ষিত জাতি গড়তে বৈষম্য মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা অপরিহার্য।কিন্তু এ দেশ আজ শিক্ষা বাদ দিয়ে উন্নতির মহাপরিকল্পনায় ব্যস্ত!দেশ ডিজিটাল হবে শিক্ষা বাদ দিয়েই! এসব হাস্যকর পরিকল্পনা কারা কি উদ্দেশ্যে করছে সেটি যদি এখনো ক্ষতিয়ে না দেখা হয় তাহলে অদুর ভবিষ্যতে এ দেশ নিরক্ষর জাতিতে পরিণত হবে সেটি আর বলার অবকাশ রাখে না!
তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনাকে বলবো, শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি, পরীক্ষার ফিস কিংবা টিউশন ফিস বা শিক্ষাটিভি দিয়ে শিক্ষার উন্নয়ন সম্ভব নয়।শিক্ষা ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন বৈষম্য মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা, আর বৈষম্য মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে মুক্তির এক ও একমাত্র পথ সকল শিক্ষা ব্যবস্থা এক যোগে জাতিয়করণ করা।
তাই আশা করি অচিরেই জননেত্রী শেখ হাসিনা সকল শিক্ষা ব্যবস্থা জাতিয়করণের ঘোষনা দিয়ে এম,পিও,ভুক্ত শিক্ষক সম্প্রদায়ের হতাশা থেকে মুক্তি দিবেন এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে সকল বৈষম্য দুরীকরণে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবেন।
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.