প্রাইভেট পড়লে ৯০ নাম্বার দিতেন প্রধান শিক্ষক তৃপ্তি!
পটুয়াখালীঃ পরীক্ষায় প্রাইভেটের শিক্ষার্থীদের ৯০ এবং অন্যদের ৬০ নম্বরে উত্তীর্ণ করে বৈষম্য সৃষ্টিসহ অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় মহিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তৃপ্তি রানী ভৌমিক ও সহকারী শিক্ষক মো. রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে।
অভিভাবকরা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে সম্প্রতি এমন একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
বুধবার (১৯ জুলাই) কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, অভিযোগটি আমলে নিয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে জরুরি তদন্ত সাপক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মহিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তৃপ্তি রানী নির্ধারিত তার সহকারী শিক্ষক মো. রুহুল আমিনের কাছে প্রাইভেট না পড়লে শিক্ষার্থীদের কম মূল্যায়ন করেন। পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে তাদের প্রাইভেটের শিক্ষার্থীদের ভিন্ন হলরুমে পরীক্ষা নেয়া হয়। বর্তমানে সৃজনশীল প্রশ্নপত্র হওয়া সত্ত্বেও তার প্রাইভেটের শিক্ষার্থীদের ফলাফল ৯০ এবং অন্য শিক্ষার্থীদের ৬০ নম্বরে উত্তীর্ণ করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করা হয়।
শিক্ষার্থীদের অর্জিত ফলাফল পরিবর্তন করে ইচ্ছেমতো ফলাফল প্রকাশ করেন তারা। শিক্ষকদের প্রতি বৈষম্য দৃষ্টি ও তার কথা না শুনলে তাদের মানসিক নির্যাতন করা হয়। সরকারি বরাদ্দ ও প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব সম্পদ থেকে অর্জিত অর্থে কোনো কাজ না করে আত্মসাৎ করাসহ নানাবিধ অনিয়মের অভিযোগ আনা হয় ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
এসব ঘটনায় এর আগে গত ২৬ জুন শ্রী বাবুল দাস নামে এক অভিবাবক বিদ্যালয়ের অনিয়মের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দাখিল করেন। কিন্তু অভিযোগ তদন্তের আগেই শ্রী বাবুল দাসকে বিভিন্ন মহল থেকে চাপ প্রয়োগ করে অভিযোগ প্রত্যাহার করতে বাধ্য করেন ওই প্রধান শিক্ষক।
এ বিষয়ে মহিপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল মালেক আকন বলেন, তৃপ্তি রানী ভৌমিক এই বিদ্যালয়ে ৩০ বছর চাকরি করছেন, তাই নিজেকে এই বিদ্যালয়ের মালিক মনে করছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি করছেন। কেউ প্রতিবাদ করলে তার স্থানীয় এক শক্তির প্রভাবে তাকে থামিয়ে দিতেন। ইতিপূর্বে যে কোনো অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ পেয়ে কর্তৃপক্ষের নীরবতা আমরা হতাশ ছিলাম। কিন্তু এখন স্থানীয় সাধারণ মানুষ তান বিরুদ্ধে সোচ্চার।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, অভিযোগ আমলে নিয়ে কলাপাড়া উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে তদন্ত করে আগামী ৭ দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এদিকে সব অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক তৃপ্তি রানী ভৌমিক বলেন, বিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট করার জন্য একটি চক্র এ ধরনের মিথ্যাচার করছে তার বিরুদ্ধে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২০/০৭/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়