কুমিল্লায় চালু হচ্ছে না ৪৩২ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
কুমিল্লাঃ কুমিল্লায় বন্যায় হুমকির মুখে পড়েছে শিক্ষা ব্যবস্থা। ঘরবাড়ি হারানো হাজারো শিক্ষার্থী হারিয়েছেন বই খাতা- স্কুল কলেজের পোশাক, চোখের সামনে সব হারিয়ে মানসিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত শিশু শিক্ষার্থীরা। যার জন্য বন্ধ থাকছে ৪৩২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
শিক্ষা বিভাগের তথ্য মতে, প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমি পর্যায়ের চার শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অবকাঠামোগত ক্ষতির মুখে পড়ে সহসায় চালু করা যাচ্ছে না।
বুড়িচং উপজেলার নানুয়ার বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী উম্মে হাবিবা জিম। ঘর-বাড়ি ভেসে গেছে বন্যায়। বানের পানি নেমে গেছে বিধ্বস্ত বাড়িতে খুঁজে পাওয়া গেলো তার স্কুল ব্যাগ। কিন্তু টানা ১২ দিন বন্যার পানিতে ডুবে থেকে নষ্ট হয়ে জিমের তিন বোনের সব বই খাতা। ব্যাগ- স্কুলের পোশাকও ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দূর্যোগে বাবা মায়ের আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেকেরই শিক্ষাজীবন বন্ধের পথে।
সদর উপজেলার বদরপুর গ্রামের একটি বেসরকারি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র অনিক চন্দ্র দাস। বন্যায় তার ঘরে থাকা সব বই খাতা ভিজে গেছে। বাড়ির সামনে স্পিড বটে সেই বইটা শুকোতে দিয়েছে তার বাবা- মা। কিন্তু উল্টাপাল্টা দেখা গেল এসব বই খাতা আর ব্যবহার করা যাবে না। অনিকের সাথে অনিকের বোন জয়ার বই খাতা ও নষ্ট হয়ে গেছে। অনিক চায় তার স্কুল খুব তাড়াতাড়ি শুরু হোক। আবার বন্ধুদের সাথে স্কুলে গিয়ে পড়াশুনা ও খেলাধুলা হবে।
বুড়িচং উপজেলার খাড়াদাতাইয়া মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা মিনুয়ারা আক্তার জানান, অনেক শিক্ষার্থীর পরিবারই বন্যার কারণে একেবারে ধ্বংস হয়ে গেছে। তাদের ঘুরে দাঁড়ানো কষ্টকর। শিক্ষার্থী মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছে। তাদের আবার স্কুলমুখী করতে হলে শিক্ষকদের পারিবারিক ঘুরে গিয়ে তাদেরকে উৎসাহী করতে হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, সাম্প্রতিক বন্যায় ১০৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে। মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ ২০৫টি এবং ১২৩টি মাদ্রাসার বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় এসব প্রতিষ্ঠান খুব শীঘ্রই চালু করা যাচ্ছে না। তবে শিক্ষার্থীরা যেন স্কুল কলেজে ফিরতে পারেন সেজন্য সরকারি সর্বোচ্চ সহযোগিতার কথা জানালেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।
গত ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির হিসাবে কুমিল্লা জেলায় মোট ৪৩২টি প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মেরামত ছাড়া ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যতদিন বানের পানি থাকবে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৭/০৯/২০২৪