নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় প্রেমের সম্পর্ক মেনে না নেওয়ায় পরিবারের সঙ্গে অভিমান করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে মারিয়া আফরোজ সুইটি (১৪) নামের নবম শ্রেণির এক ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার সকালে বিষপান করলে রাতে ওই ছাত্রী মারা যায়।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ভালুকার পুরুড়া গ্রামের তেতুলীয়া পাড়ার কুয়েত প্রবাসী মোতাহার হোসেন সবুজের মেয়ে মারিয়া আফরোজ সুইটির সঙ্গে দেড় বছর ধরে একই গ্রামের তাজুল ইসলাম তাজেলের কলেজপড়ুয়া ছেলে কবির আহমেদের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু সুইটির বাবা-মা মেয়ের এই প্রেমের সম্পর্ক মেনে নেননি।
ছেলেপক্ষ বিয়ের জন্য মেয়ের বাবার বাড়িতে লোক পাঠালে ছেলে গরীব হওয়ায় তারা বিয়ে দেবেন জানিয়ে তাদের ফিরিয়ে দেন। এ নিয়ে গত এক বছরে দুই পরিবারের মাঝে বেশ কয়েক দফা আলোচনাও হয়। কিন্তু মেয়েপক্ষ এ সম্পর্ক কোনোভাবেই মেনে না নেওয়ায় গত বুধবার সুইটি ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেয়।
স্ট্যাটাসে সে লেখে, ‘আমাকে বুঝার ট্রাই তোমরা কোনোদিন করো নাই… যেই দিন আমি তোমাদের ছেড়ে চলে যাব অচিনপুর, তখন তোমরা আমাকে বুঝবা আমি কী ছিলাম তোমাদের জন্য, তখন চাইলেও কেউ আমাকে ফিরে পাবে না, বাই।’
এরপর গত বৃহস্পতিবার সকালে সুইটি স্কুলে যায়। দুপুরে স্কুল বিরতির সময় সে ভালুকা সদরে গিয়ে ইদুর মারার বিষ কিনে তা পান করে বাসে চড়ে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করে। কিন্তু ভরাডোবা বাসস্যান্ডে নামার পর সে অচেতন হয়ে মাটিতে পড়ে য়ায়। এ সময় স্থানীয় লোকজন সুইটিকে ভালুকা সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন বৃহস্পতিবার রাতে সে মারা যায়।
নিহত সুইটির চাচা আজিজুল হক সুজন জানান, তার ভাতিজির সঙ্গে একই গ্রামের কবির নামে কলেজপড়ুয়া এক ছেলের এক বছরের মতো প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন হলো ওই সম্পর্ক ভেঙে গেছে।
সুইটির প্রেমিক কবির আহমেদ সুইটির সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্কের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আমরা গরীব বলে আমার সাথে সুইটির পরিবার বিয়ে দেবে না বলে জানায়। তাই সুইটির সাথে অনেকদিন ধরে আমার যোগাযোগ নেই।’
সুইটির স্কুলের প্রধান শিক্ষক আজিজুর হক বলেন, ‘ঘটনাটি আমরা পরে শুনেছি।’
ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন বলেন, ‘স্কুলছাত্রীর আত্মহ্যার পর ময়নাতদন্ত শেষে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। পরবর্তীতে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.