এইমাত্র পাওয়া

টেস্ট-ট্যাগ চান না মুমিনুল

বাংলাদেশ টেস্ট দলে তিনি একরকম ‘অটোমেটিক চয়েস’। তবে বাকি দুই ফরম্যাটে তাকে জাতীয় দলের জার্সিতে দেখা যায় কালেভদ্রে। নামের পাশে তাই টেস্ট খেলোয়াড়ের তকমাটা বেশ ভালোভাবেই লেগে গেছে মুমিনুল হকের। তবে সেই তকমায় খুব একটা খুশি নন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। বরং তিন সংস্করণেই নিজেকে নিয়মিত করতে চান তিনি। আর রঙিন পোশাকের দলে নিয়মিত হতে সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করতে চান টেস্ট ক্রিকেটকেই।

২০১২ সালের নভেম্বরে ওয়ানডে ক্রিকেট দিয়েই জাতীয় দলে অভিষেক হয়েছিল মুমিনুলের। পরের মাসেই হয় টি-টোয়েন্টি অভিষেক। আর টেস্ট ক্রিকেটে তার পথচলা শুরু ২০১৩ সালের মার্চে। তবে যে পথচলার শুরুটা হয়েছিল সবার শেষে, সেই পথেই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি হেঁটেছেন তিনি। ৩৫টি টেস্ট খেলেছেন, বিপরীতে ওয়ানডে খেলেছেন ২৮টি আর টি-টোয়েন্টি মাত্র ৬টি। ২০১৫ বিশ্বকাপে খেলেছিলেন দুটি ম্যাচ। এরপর আবারও ওয়ানডে খেলার জন্য তাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ২০১৮-এর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। গত এক বছর ধরে আবারও তিনি ওয়ানডে দলের দৃশ্যপটে অনুপস্থিত। আর টি- টোয়েন্টি ফরম্যাটে সর্বশেষ ম্যাচ খেলেছিলেন পাঁচ বছর আগে, ২০১৪ সালের এপ্রিলে।

তবে এরপরও দমে যাওয়ার পাত্র নন মুমিনুল। আফগানিস্তান সিরিজের জন্য জাতীয় দলের কন্ডিশনিং ক্যাম্পে থাকা এই ক্রিকেটার গতকাল সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপচারিতায় বললেন, টেস্ট ক্রিকেটে ভালো করেই অন্য ফরম্যাটগুলোতে নিজের জায়গা তৈরি করে নিতে চান তিনি, ‘আমার কাছে মনে হয়, টেস্ট ক্রিকেটে যদি আমার গড় খুব ভালো থাকে বা ধরেন বিপিএলে যদি আমি খুব ভালো করি, তাহলে অন্য ফরম্যাটগুলোতে জায়গা পাওয়ার একটা ভালো সুযোগ থাকে। টেস্ট ক্রিকেটের জন্য তো আর সবসময় বসে থাকলে হয় না। এ কারণেই আমি টেস্টের বাইরেও বাড়তি অনুশীলন করি। যেসব জায়গায় উন্নতি দরকার সেখানে উন্নতি করতে হলে আপনাকে অনুশীলন সবসময়ই চালিয়ে যেতে হবে।’

জাতীয় দলের নতুন কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর নেতৃত্বে গতকালই প্রথমবারের মতো অনুশীলন করেছেন ক্রিকেটাররা। সেইসঙ্গে পেস বোলিং কোচের দায়িত্ব পাওয়া চার্ল ল্যাঙ্গেভেল্টেরও গতকালই ছিল প্রথম দিন। দুই নতুন কোচের অধীনে এদিন বেশ ফুরফুরে মেজাজে অনুশীলন করেছেন কন্ডিশনিং ক্যাম্পে থাকা ক্রিকেটাররা। স্বভাবতই ল্যাঙ্গেভেল্টের মনোযোগ ছিল পেসারদের দিকে। আর ডমিঙ্গো লম্বা সময় কাটিয়েছেন ব্যাটসম্যানদের অনুশীলন দেখে। অনুশীলন শেষে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে বেশ খানিকক্ষণ কথা বলেন তিনি, জিমে বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটান মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে আলাপচারিতায়।

নতুন কোচকে নিয়ে মুমিনুলের ভাবনাটা অবশ্য একটু অন্যরকম। কোচের কাছে তার চাওয়া বা তাদের কাছে কোচের চাওয়া- ব্যাপারগুলোকে তিনি দেখছেন বাস্তবতার নিরিখে। বললেন, ‘কোচের কাছ থেকে আমাদের কি প্রত্যাশা, সেটা ওভাবে চিন্তা করিনি। আমি উনার কাছ থেকেই সবকিছু নেব, ব্যাপারটা এরকম নয়। সবারই তো একজন ব্যক্তিগত কোচ থাকে। উনি পরামর্শ দেবে, সেখান থেকে আমার যেটা দরকার আমি সেটা নেব। আর কোচ কী চাচ্ছেন, সেটা চিন্তা না করে নিজের কাজটা ঠিকভাবে করলেই হয়। আপনি যদি ফিটনেসের দিক দিয়ে, বা ব্যাটিং-বোলিংয়ে ভালো করেন, তাহলে যে কোনো কোচই আপনাকে দলে নিতে চাইবে।’

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হওয়ায় বাংলাদেশের টেস্ট ম্যাচের সংখ্যা আগের থেকে অনেকটা বেড়েছে। আর এতে করে বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটে উন্নতি করার সুযোগও তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন এই ব্যাটসম্যান। বললেন, ‘টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ হওয়ায় বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য বেশ ভালো হয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে আমি খুব খুশি। কারণ আমাদের দেশে টেস্ট ক্রিকেটে ওভাবে মনোযোগ দেওয়া হয় না। বেশি ম্যাচ খেললে পারফর্ম করার সুযোগ বাড়ে, ফলাফল ভালো করার সুযোগ বাড়ে, দলকে ভালো একটি অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ বাড়ে। এদিক দিয়ে চিন্তা করলে আমাদের জন্য খুব ভালো হয়েছে। টেস্ট ক্রিকেটে উন্নতি করার ক্ষেত্রে এটি বেশ ভালো একটি সুযোগ।’


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.