অবসর-কল্যাণ ট্রাস্ট অফিস ঘেরাও ২৮ জুলাই ২৪ তারিখ ‘প্রতীকী অনশন’

নিজস্ব প্রতিবেদক :

এবার অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্ট অফিস ঘেরাও করবেন সংক্ষুব্ধ শিক্ষক-কর্মচারীরা। আগামী ২৮ জুলাই সকালে রাজধানীর পলাশীর ব্যানবেইস ভবনে অবস্থিত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টের অফিস ঘেরাও করবেন তাঁরা। অবসর ও কল্যাণ ফান্ডে ১০ শতাংশ চাঁদা কর্তন বন্ধের দাবিতে এ ঘেরাও কর্মসূচি দিয়েছেন তারা।

এছাড়া বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের পূর্ণাঙ্গ ঈদ বোনাস দেয়াসহ মাধ্যমিক শিক্ষা সরকারিকরণের দাবিতে আগামী ২৪ জুলাই (বুধবার) প্রতিটি জেলা শহরে এবং জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘প্রতীকী অনশন’ পালন করবেন শিক্ষকরা। রোববার (২১ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত চাঁদা কর্তনের জন্য দশ বছর ধরে কল্যাণট্রাস্টের সদস্য-সচিব পদে থাকা অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজুকে দায়ী করা হয়। নতুন সংগঠন স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদকেও দায়ী করা হয়। এছাড়াও অবসর ও কল্যাণের দুই সদস্য-সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী ও শাহজাহান আলম সাজুর পদত্যাগ দাবি করা হয়।

যুক্তি হিসেবে বলা হয়, সদস্য-সচিবরা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের ভোগান্তি কমাতে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছেন না। নতুন স্কেলে কল্যাণট্রাস্টের টাকা পাওয়ার জন্য দুইবার কাগজ দিতে বাধ্য করা হয় অসহায় শিক্ষকদের। তাছাড়া দুই সদস্য-সচিবের একজন ব্রাহ্মণবাড়ীয়া ও আরেকজন কিশোরগঞ্জে থাকার ফলে সমন্বয় করতে পারছেন না।

সংবাদ সম্মেলনে বিটিএর সভাপতি অধ্যক্ষ মো. বজলুর রহমান মিয়া বলেন, অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টের নামে ১০ শতাংশ চাঁদা কর্তন বন্ধ, বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের পূর্ণাঙ্গ ঈদ বোনাস দেয়াসহ মাধ্যমিক শিক্ষা সরকারিকরণের দাবিতে আগামী ২৪ জুলাই (বুধবার) প্রতীকী অনশন পালন করবেন বিটিএ নেতারা। আর অতিরিক্ত চাঁদা কর্তন বন্ধের দাবিতে আগামী ২৮ জুলাই (রোববার) সকালে অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টের অফিস ঘেরাও করবেন তাঁরা। এরপরেও দাবি আদায় না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বিটিএ নেতারা।

বিটিএর সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. কাওছার আলী শেখ বলেন, বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল মাধ্যমিক শিক্ষা সরকারিকরণ। সরকার যখন এ ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে অগ্রসর হচ্ছিল তখন কিছু সুবিধাভোগী শিক্ষক নেতা আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় ফেলে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে ১০ শতাংশ কর্তনের জন্য পৃথক দু’টি অযৌক্তিক ও অমানবিক গেজেট প্রকাশ করায়। যা পরবর্তী সময়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের আন্দোলনের ফলে স্থগিত করা হয়।

কাওছার আলী শেখ আরও বলেন, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় নির্বাচনের মাত্র কয়েকদিন পূর্বে ১০ শতাংশ কর্তনের জন্য পুনরায় একটি আদেশ জারি করা হয়। পরবর্তী সময়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রতিবাদে শিক্ষা সচিব ভুল স্বীকার করে উক্ত আদেশটিও প্রত্যাহার করে নেন। এরপর গত ৯ জানুয়ারি অবসর সুবিধা বোর্ডের সভায় উপস্থিত সদস্যদের সামনে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তন না করার অভিমত পূণর্ব্যক্ত করেন তিনি।

কিন্তু গত ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ এপ্রিল এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচরীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশসহ মোট ১০ শতাংশ চাঁদা কর্তনের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে লিখিত আদেশ প্রদান করা হয়। এ আদেশের ফলে সারাদেশের শিক্ষক-কর্মচারীরা মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ। তাই মাধ্যমিক শিক্ষা সরকারিকরণ, বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের উৎসব ভাতা, বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা প্রদানসহ এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে ১০ শতাংশ কর্তনের প্রজ্ঞাপনটি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য বাবু রঞ্জিত কুমার সাহা, সিনিয়র সহ সভাপতি অধ্যক্ষ মো. আবুল কাশেম, সহ সভাপতি আলী আসগর হাওলাদার, বেগম নুরুন্নাহার,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবু জামিল মো. সেলিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইকবাল হোসেন, অর্থ সম্পাদক মোস্তফা জামান খান, দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, গ্রন্থাগার সম্পাদক অশোক কান্তি গুহ, সহ-দপ্তর সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম, সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক ফাহমিদা রহমান, সহ-মহিলা বিষয়ক সম্পাদক শাহানা বেগম, কেন্দ্রীয় সদস্য, আজম আলী খান, প্রবীর রঞ্জন, মনোরঞ্জন মণ্ডল প্রমুখ।


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.