নিজামুল হক :
ছয় বছর আগে নিয়োগের জন্য প্রক্রিয়া শুরু করেও এখনো এ প্রক্রিয়া শেষ করতে পারেনি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। ইতিমধ্যে অনেক প্রার্থী চাকরি নিয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। অপেক্ষা করতে গিয়ে অনেকের চাকরির বয়সও শেষ হয়ে গেছে। ফলে অন্য কোথাও যাওয়ার সুযোগ নেই। এ কারণে তারা মাউশির এ নিয়োগের অপেক্ষায় আছেন। তবে সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি মাউশির একটি অনুষ্ঠানে এই পদে দ্রুত জনবল নিয়োগের তাগিদ দিয়েছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইনী জটিলতার কারণ দেখিয়ে এসব পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া যেন থেমে আছে। আদৌ এসব পদে নিয়োগ হবে কি না তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রার্থীরা। বিষয়টি নিয়ে হতাশায় দিন পার করছেন চাকরি প্রত্যাশীরা।
অফিস সহায়ক পদের ফলাফল প্রত্যাশী ঐক্যফ্রণ্টের নেতা এসএম পারভেজ জানান, এ বিজ্ঞপ্তির অন্য সব পদে নিয়োগ পেয়ে প্রার্থীরা বর্তমানে চাকরি করছেন। অথচ অফিস সহায়ক পদের প্রার্থীরা দুবার লিখিত পরীক্ষা ও ২০১৭ সালে মৌখিক পরীক্ষা দেওয়ার পর এখন এক বছর সাত মাস পার হয়ে গেছে। এখনো তারা এ নিয়োগের চূড়ান্ত ফল পাচ্ছেন না। ছয় বছর ধরে চলা নিয়োগ প্রক্রিয়া বিলম্বিত করায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের আইন শাখার এক কর্মকর্তাকে দায়ী করেন প্রার্থীরা। এ কর্মকর্তা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছেন। প্রার্থীদের বিভ্রান্ত করেছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন মাউশি ২০১৩ সালে ২২টি পদে ১ হাজার ৯৬৫ জন জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ২২টি পদে ১ হাজার ৯৬৫টি শূন্যপদের জন্য প্রথম পর্যায়ে লিখিত পরীক্ষা হয় ২০১৩ সালের ১৪ জুন।
কিন্তু এই নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে তত্কালীন মাউশির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, প্রার্থীদের নিয়োগ দিতে টাকা লেনদেন করা হয়েছে। নিয়োগে অস্বচ্ছতা হয়েছে। অভিযোগ একসময় সত্য প্রমাণিত হয়। অস্বচ্ছতার কারণে ঐ নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা বাতিল করে মন্ত্রণালয়। এভাবে পেরিয়ে যায় চার বছর।
পরীক্ষা বাতিল হলে ২০১৭ সালের ৭ জুলাই চতুর্থ শ্রেণির অফিস সহায়ক পদে লিখিত পরীক্ষা হয়। লিখিত পরীক্ষায় ৩ হাজার ৮৭৮ জন উত্তীর্ণ হলে একই বছর ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। তবে অফিস সহায়ক ছাড়া অন্যসব পদের ফল ও নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করে মাউশি। চতুর্থ শ্রেণির ৯৮৭ জন কর্মচারী নিয়োগের কার্যক্রম শেষ করা যায়নি। চিঠি চালাচালি হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আইন মন্ত্রণালয় পর্যন্ত। নিয়োগ দিতে ইতিবাচক মন্তব্য দেয় উভয় মন্ত্রণালয়। কিন্তু এখনো কেন নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না প্রশ্ন প্রার্থীদের। একটি চক্র নিয়োগ প্রক্রিয়া বিলম্বিত করা বা বাতিল করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, এখন আর আইনী জটিলতা নেই। যারা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে তাদের তালিকা এখন নেব। অচিরেই আমরা তাদের নিয়োগ দিয়ে দেব। আর অপেক্ষা করতে হবে না।
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.