নড়াইলঃ নড়াইলের কালিয়ায় জানালা-দরজাবিহীন টিনশেড ঘরে চলছে ক্লাস। রোদ-বৃষ্টি ঠেকাতে টানানো হয়েছে কাপড়ের পর্দা। বৃষ্টি নামলেই বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে যায় পাঠদান। মেঘের গর্জনে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বুক কেঁপে উঠে। বর্ষা নামলে ভিজে যায় বই-খাতাসহ পরিহিত স্কুল পোশাক। এমন চিত্র দেখা গেছে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার মাউলি পঞ্চপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।
এ বিদ্যালয়ে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে পাঠদানে অংশগ্রহণ করছে। এভাবেই অবহেলিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে।
জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, নড়াইল জেলায় ১৩১টি মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। তার মধ্যে কালিয়া উপজেলায় ৩১টি, সদর উপজেলায় ৬৪টি এবং লোহাগড়ায় ৩৬টি বিদ্যালয় রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ১২টি মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হচ্ছে।
ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয় গুলোর মধ্যে কালিয়া উপজেলার মাউলি পঞ্চপল্লী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, নওয়াগ্রাম, মধুমতি ও জয়নুল আবেদন নুরুন্নাহার নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। সদর উপজেলায়—সিআরএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মূলদাইড় তালতলা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, বি আর ডি আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দেবিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বালিয়াডাঙ্গা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও শেখহাটি নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় রয়েছে।
মাউলি পঞ্চপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র দীপ বিশ্বাস বলেন, আমাদের বিদ্যালয় কক্ষের জালনা দরজা নাই। বৃষ্টি নামলে বই খাতা ভিজে যায়। ঝড় বা অতিমাত্রায় বাতাস ছাড়লে আতঙ্কে থাকি। মনোযোগ দিয়ে ক্লাস করতে পারি না। কাপড়ের পর্দা দিয়ে রোদ বৃষ্টি থেকে রক্ষা পাওয়া যায় না। যখন বিদুৎ চমকায় তখন ভয়ে বুক কেঁপে উঠে। সরকারের কাছে নতুন ভবন নির্মাণের দাবি করছি।
অভিভাবক সবুজ দাস বলেন, বিদ্যালয়ের পাঠদান কক্ষ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকি।
মাউলি পঞ্চপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের অদম্য ইচ্ছা শক্তি থাকা সত্ত্বেও শ্রেণি কার্যক্রম সঠিক ভাবে করতে পারছি না। কারণ পাঠদানের কক্ষগুলো জরাজীর্ণ ও ঝূঁকিপূর্ণ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি করছি।
জেলা শিক্ষা অফিসার মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নড়াইল জেলায় বেশ কয়টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জরাজীর্ণ হয়ে আছে। বিশেষ করে মাউলি পঞ্চপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবস্থা খুবই খারাপ। বিদ্যালয়টিতে পর্দা দিয়ে ক্লাস করানো হয়। শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদফতরে নাম দিয়েছি। শিক্ষা অধিদফতর থেকে এসব বিদ্যালয়ে বরাদ্দের কোন খবর এখনও পাইনি। তবে বিদ্যালয় গুলো সংস্কারের জন্য স্থানীয় বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিত।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/২৫/০৬/২০২৫
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.