নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ ৪০তম বিসিএসে মুক্তিযোদ্ধা কোটার প্রয়োগ কেন হবে না জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট। রুলে ৩৮তম বিসিএসে কোটা এবং ৪০ তম বিসিএসের পরবর্তী বিসিএসে কোটার প্রয়োগ হলেও ৪০তম বিসিএসে কেন কোটার প্রয়োগ হবে না জানতে চাওয়া হয়েছে।
গত ২৮ এপ্রিল ২০২৫ খ্রিস্টাব্দে এই রুল জারি করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি দেবাশিষ রয় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিক বেঞ্চ এই রুল জারি করেছেন।
রুলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সচিবসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের সাত কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়। রুলের পক্ষে শুনানী করেন এডভোকেট শামিম হায়দার পাটোয়ারি এবং মোঃ মিজানুর রহমান।
জানা গেছে, ২০১৮ সালে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যাপক আন্দোলনের মুখে কোটা প্রথা বিলুপ্ত করে সরকার। কোটা প্রথা বিলুপ্তির ঠিক এক মাস আগে ৪০তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন। ৪০তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরে কোটা বিলুপ্তির প্রজ্ঞাপন হলেও ৪০তম বিসিএস থেকেই কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন কার্যকর করে পিএসসি। অন্যদিকে ৩৮তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল ২০২০ সালে প্রকাশ পেলেও এই বিসিএসে কোটা প্রথার প্রয়োগ করে পিএসসি। ফলে একই সাথে দুই ধরণের নীতি বাস্তবায়নে ক্ষুব্ধ হয়ে হাইকোর্টে রিট করে ৪০তম বিসিএসে কোটা বঞ্চিত কয়েকজন সংক্ষুব্ধ প্রার্থী। সেই রুলে কেন ৪০ তম বিসিএসে কোটার প্রয়োগ হবে না জানতে চেয়ে রুল জারি করে মহামান্য হাইকোর্ট।
রিটকারী প্রার্থীরা জানান, ৪০ তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ইং তারিখে, অন্যদিকে ২০১৮ সালে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যাপক আন্দোলনের মুখে কোটা প্রথা বিলুপ্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় ৪ অক্টোবর ২০১৮ খ্রিস্টাব্দে। অর্থ্যাৎ কোটা প্রথা বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার এক মাসে আগে ৪০তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। আবার ৩৮ তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল ২০২০ সালে প্রকাশ করা হলেও সেখানে কোটার প্রয়োগ করে পিএসসি। একই সাথে দুই নীতি গ্রহণ করে পিএসসি এখানে ৪০তম বিসিএসে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা পুরোপুরি বঞ্চিত হয়।
তারা বলেন, বর্তমানে ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা দেয়া হয়েছে। তাহলে দেখা যাচ্ছে আমরা ৪০ তম বিসিএস এর পূর্বে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা প্রয়োগ হলো, আর পরবর্তী বিসিএস এ ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা চলমান। মাঝখানে ৪০ তম বিসিএসে কোন কোটাই নেই। এটা তো চরম বৈষম্য। কোটা যদি অবৈধ হয়, তাহলে সরকার তা বাতিল করুক, আর যদি যুক্তিসঙ্গত হয়, তাহলে ৪০ তম বিসিএস এ ৫ শতাংশ হলেও তা প্রয়োগ করুক। একই সুবিধা আমাদের আগের জন এবং আমার পরের জনও পাবে, আমরা কেন বঞ্ছিত হবো?
রিটকারী শহিদুল ইসলাম জানান, এই কোটার বৈষম্য নিয়ে আমি সহ আরেক জন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রিট করলে হাইকোর্ট তা আমলে নিয়ে রুল জারি করেন। রুলে বলা হয়, ৪০ ও ৩৮ তম বিসিএস উভয়ের সার্কুলার কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন এর আগে হলেও ৩৮ তম বিসিএস এ কোটা প্রয়োগ হয়, কিন্তু ৪০ তম বিসিএস এ কেনো কোটা প্রয়োগ হবেনা।।আবার বর্তমানে ৫% কোটা রয়েছে, তাহলে এই ৫% কেনো প্রয়োগ হবেনা মর্মে রুল জারি হয়। একটি বিসিএস তো পুরোপুরি কোটা বঞ্চিত হতে পারে না।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/২০/০৬/২০২৫
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.