এইমাত্র পাওয়া

নওগাঁর ৬টি উপজেলায় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের পদ শুন্য, ভোগান্তিতে শিক্ষক-কর্মচারী

নওগাঁঃ রাজশাহী বিভাগের সবচেয়ে বড় জেলা নওগাঁ। অন্যান্য জেলার চেয়ে এই জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও বেশি রয়েছে। বর্তমানে জেলার ১১টি উপজেলার মধ্যে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের পদ শুন্য রয়েছে ৬টি উপজেলায়। এতেকরে ভোগান্তিতে পরেছে জেলার ৮ শতাধিক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা। শিক্ষার মানোন্নয়নে দ্রুততম সময়ে সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দিয়ে শুন্যপদ গুলো পূরণ করার দাবি জানান জেলা শিক্ষা অফিসার শাহাদাৎ হোসেন।

জানা যায়, নওগাঁ জেলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৮ শতাধিক। প্রতিষ্ঠান গুলোতে কর্মরত রয়েছে প্রায় ১২ থেকে ১৩ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী। এ জেলায় মোট উপজেলা রয়েছে ১১টি এরমধ্যে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পদে কর্মরত আছে ৫টি উপজেলা শিক্ষা অফিসার। আর বাকি ৬টি উপজেলায় শিক্ষা অফিসারের পদগুলো শুন্য রয়েছে। পদ শুন্য থাকা এই উপজেলা গুলোতে অন্যান্য উপজেলায় কর্মরত অফিসাররা অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। নিজ উপজেলার দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি অন্য উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তারাও হিমসিম খেয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও চলতি বছরে কর্মরত ২ জন শিক্ষা অফিসার অবসরে যাবেন আর তাতে আরো সমস্যাই পরবেন এ জেলার শিক্ষক-কর্মচারীরা।

জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, নওগাঁ সদর উপজেলায় দায়িত্বে আছেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার ওয়াসিউর রহমান। তিনি তার নিজ উপজেলার দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন মহাদেবপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসারের। মান্দা উপজেলার শিক্ষা অফিসার শাহ আলম শেখ তার নিজ উপজেলার দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন নিয়ামতপুর শিক্ষা অফিসের। বদলগাছী উপজেলা শিক্ষা অফিসার শফিকুল ইসলাম তার নিজ জেলার দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করছেন রাণীনগর উপজেলার। সাপাহার উপজেলা শিক্ষা অফিসার শামসুল আলম তার নিজ উপজেলার পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করছেন পোরশা উপজেলা শিক্ষা অফিসের। ধামইহাট উপজেলার ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন তার নিজ উপজেলার পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন আত্রাই উপজেলা শিক্ষা অফিসের এবং বর্তমানে পত্নীতলা উপজেলা শিক্ষা অফিসারের দায়িত্বে রয়েছেন জেলা শিক্ষা অফিসার শাহাদাৎ হোসেন।

মান্দা উপজেলার এসসি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরুজ্জামানসহ জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীরা বলেন, আগে প্রয়োজনে যেমন প্রতিদিন শিক্ষা অফিসার স্যারকে পাওয়া যেত এখন তেমন ভাবে আর পাওয়া যায় না। অনেক সময় অফিসে গিয়ে জানাতে পারি স্যার অন্য উপজেলায় আছেন। জরুরী প্রয়োজন থাকার পরও স্যার না থাকায় আমাদের ফেরত আসতে হয়। এতে আমাদের ভোগান্তিতে পরতে হচ্ছে। আমরা চাই দ্রুত সময়ে জেলার প্রতিটি উপজেলায় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নিয়োগ দিয়ে এই সমস্যার সমাধান করবেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে জানিয়ে মান্দা উপজেলা শিক্ষা অফিসার শাহ আলম শেখ বলেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলার অফিসিয়ালি কাজ, এমপিওভুক্তির ফাইল অগ্রহায়ণ করা, বিভিন্ন অভিযোগের তদন্ত করতে আমাদের সময় পার হয়ে যাচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তদারকি করার মতো সময় হয়ে উঠে না। শুধু একটি উপজেলার দায়িত্বে থাকলে এইসব কাজগুলো সুন্দরভাবে করা সম্ভব হয়।

জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা অফিসার শাহাদাৎ হোসেন বলেন, আমার এই জেলায় বর্তমানে ৬ জন শিক্ষা অফিসারের পদ শুন্য রয়েছে। শুধু এই জেলায় নয় দেশের অধিকাংশ জেলার চিত্র একই। উপজেলা শিক্ষা অফিসারের এইসব পদ গুলো সরকারি বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের পদায়ন দিয়ে পূরণ করলে শিক্ষার মান দ্রুত উন্নত হবে। কেননা একজন উপজেলা শিক্ষা অফিসার যদি ২ থেকে ৩টি উপজেলার দায়িত্বে থাকেন তাহলে তার অফিসিয়াল কাজ করতেই সময় পার হয়ে যায়। প্রতিষ্ঠানের তদারকি ও শিক্ষার মান উন্নয়নে কোন ভূমিকা রাখতে পারেন না। এ ক্ষেত্রে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দিয়ে এই পদগুলো দ্রুত পূরণ করবেন বলে আমি আশা করছি।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/৩১/০৫/২০২৫


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading