এইমাত্র পাওয়া

চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা আজও বন্ধ, ভোগান্তিতে রোগীরা

ঢাকাঃ চিকিৎসক-কর্মচারীদের সঙ্গে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের মারামারি-সংঘর্ষের জেরে আজ শুক্রবারও রাজধানীর জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা বন্ধ রয়েছে। চিকিৎসাসেবা কখন চালু হবে, সে বিষয়ে কিছু বলতে পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

গত বুধবার সকাল থেকে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে এই অচলাবস্থা চলছে। শুক্রবার (৩০ মে) সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালে কোনো চিকিৎসক ও নার্স নেই। বিভিন্ন স্থান থেকে আসা নতুন রোগীরা চিকিৎসা না পেয়ে ফেরত যাচ্ছেন। আগে যেসব রোগী এখান থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন, তাদের অনেকে ফলোআপের জন্য এসে তা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

আজ সকালে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে পুলিশ সদস্যরা নিয়োজিত রয়েছেন। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বুধবারের পর আর কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এখানে ঘটেনি। নির্দেশনা অনুযায়ী তারা হাসপাতালে অবস্থান করবেন।

বুধবারের সংঘর্ষের ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অনেক সাধারণ রোগী ইতিমধ্যে অন্যত্র চলে গেছেন। আর কিছু সাধারণ রোগী এখনো হাসপাতালে আছেন। তারা বলছেন, চিকিৎসার মাঝপথে তারা এখন কোথায় যাবেন? তাই হাসপাতালে রয়ে গেছেন। তবে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের কেউ হাসপাতাল ছেড়ে যাননি বলে জানা গেছে।

ছয় মাস ধরে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত কোরবান হোসাইন। তিনি বলেন, এখানে সব চিকিৎসা বন্ধ রয়েছে। ডান চোখের প্রভাব বাঁ চোখেও পড়ছে। বাঁ চোখ জ্বালাপোড়া করে, পানি বের হয়। আমি এখন বাঁ চোখও হারানোর শঙ্কায় আছি। তিন দিন ধরে চিকিৎসা ও খাবার কিছুই পাচ্ছি না।

তিনি বলেন, এখান থেকে চিকিৎসা আর হবে না বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আমার ধারণা, আমরা হাসপাতালে থাকায় এখানকার কর্মচারী ও ডাক্তাররা তাদের খেয়ালখুশি মতো রোগী নিয়ে সিন্ডিকেট চালাতে পারছেন না। তাই তারা আমাদের বের করে দিতে চান।

চোখের কয়েকটি পরীক্ষা করানোর জন্য আজ ডেমরা থেকে এই হাসপাতালে আসেন মামুন সরকার। এসে দেখতে পান, সব সেবা বন্ধ। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, চোখের কয়েকটি পরীক্ষা করাতে এসেছি। এই পরীক্ষাগুলো সাধারণ হাসপাতালে পাওয়া যায় না। কিন্তু এখানে সব সেবা বন্ধ রয়েছে। কবে চালু হবে, কিছুই বোঝা যাচ্ছে না।

নারায়ণগঞ্জের মো. কাউসার আহাম্মেদ সম্প্রতি এই হাসপাতাল থেকে তার চোখের অস্ত্রোপচার করিয়েছেন। গত মঙ্গলবার সকালে তিনি আবার চোখের অবস্থা দেখাতে আসেন। তখন তাকে ভর্তি দেন চিকিৎসক। ভর্তির পর তার চিকিৎসা শুরু হয়। কিন্তু বুধবারের সংঘর্ষের জেরে চিকিৎসাসেবা বন্ধ হয়ে গেলে বিপাকে পড়েন তিনি।

কাউসার বলেন, তিন দিন যাবৎ চিকিৎসা পাচ্ছি না। চোখ নিয়ে শঙ্কায় আছি। চিকিৎসা না পেলে অবস্থা আরও খারাপ হবে। এই অবস্থায় অন্য কোথাও যেতেও পারছি না।

হাসপাতালে দায়িত্বরত সহকারী আনসার কমান্ডার অমৃত বালা বলেন, এখনো পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। কবে হাসপাতালে চিকিৎসক ও কর্মচারীরা আসবেন, তা তারা জানেন না।

হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জানে আলম বলেন, হাসপাতাল বন্ধ। কোনো চিকিৎসক ও কর্মচারী প্রবেশ করতে পারছেন না। কবে নাগাদ পুনরায় সেবা চালু হবে, সেটা জানা নেই। হাসপাতালে কোনো রোগীর অবস্থানের তথ্যও আমার কাছে নেই।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/৩০/০৫/২০২৫


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading