ঢাকাঃ রাজধানীর শাহজাদপুরে একটি ছোট্ট বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন শরীয়তপুরের ইদ্রিস মোল্লা। সংসার চালান মাছ বিক্রি করে। আর বিকালের দিকে রাস্তার ধারে বসেন টুপি আর আতর নিয়ে। দুই ছেলে আর এক মেয়ে—তিন সন্তানকেই পড়াচ্ছেন কওমি মাদ্রাসায়। ইদ্রিস মোল্লা বলেন, ‘নিজে পড়ালেখা জানি না। সে কারণে কোনো চাকরি করার সুযোগ পাইনি, মাছ ফেরি করে সংসার চালাই। ছেলে-মেয়েদের তাই মাদ্রাসায় পড়ালেখা করাচ্ছি। স্কুলে পড়াতে তো অনেক টাকা-পয়সা লাগে, সে সামর্থ্য তো আর আমার নেই। পাঁচজনের সংসার চালাতেই অনেক কষ্ট হয়ে যায় আমার একার পক্ষে।’
শুধু ইদ্রিস মোল্লাই নন, দরিদ্রতার কারণে বিগত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক অভিভাবক সন্তানদের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে মাদ্রাসাকে বেছে নিয়েছেন। দেশে বর্তমানে মূলধারার মাদ্রাসা রয়েছে দুই ধরনের—আলিয়া ও কওমি। এর মধ্যে আলিয়া মাদ্রাসাগুলো সাধারণত সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী পরিচালিত হয়। তাদের শিক্ষাক্রমে ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি সরকারি কারিকুলাম অন্তর্ভুক্ত থাকে। সেই সঙ্গে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তথ্যও সংরক্ষণ করে বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস)। অপরদিকে কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা পরিচালিত হয় সম্পূর্ণ বেসরকারিভাবে এবং শিক্ষাক্রমও পুরোপুরি নিজস্ব পদ্ধতিতে তৈরি। এমনকি এ ধারার প্রতিষ্ঠানগুলোয় কোনো মনিটরিং কিংবা অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের সুস্পষ্ট পরিসংখ্যান সরকারের কাছে নেই।
দেশে কওমি মাদ্রাসার শিক্ষা কার্যক্রম বর্তমানে ছয়টি বৃহৎসহ অল্প কিছু ছোট বোর্ডের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় বোর্ড ধরা হয় বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশকে (বেফাক)। এটির অধীনে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত তিন বছরে পরীক্ষার্থী বেড়েছে প্রায় ৫৫ শতাংশ। বেফাকের ২০২২ সালের পরীক্ষায় মোট ২ লাখ ২৫ হাজার ৬৩১ শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল। সেখানে চলতি বছর ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৭৭৬ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় বসে। সে হিসাবে তিন বছরের ব্যবধানে পরীক্ষার্থী বেড়েছে ১ লাখ ২৪ হাজার ৪১৫ জন। এর মধ্যে মেয়ে পরীক্ষার্থীর অংশগ্রহণ বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেফাকের এক কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে এ বোর্ডের অধীনে সারা দেশে প্রায় ২৯ হাজার মাদ্রাসা রয়েছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত প্রায় ৫০ লাখ শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে ১৭ হাজার ৩৬২টি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী এবার কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।
সাধারণ শিক্ষায় যদিও এর ঠিক উল্টো চিত্র, প্রতিনিয়তই কমছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। অষ্টম শ্রেণীর গণ্ডি শেষ করে ২০২২ সালে নবম শ্রেণীতে রেজিস্ট্রেশন করে ২২ লাখ ৪৪ হাজার ৭৩৩ শিক্ষার্থী। আর সে ব্যাচের শিক্ষার্থীরা গত বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষায় (এসএসসি) বসে। অথচ এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় বসেছিল ১৭ লাখ ১০ হাজার ২৯৬ জন। সে হিসাবে মাধ্যমিক পর্যায়ে ওই দুই বছরে ৫ লাখ ৩৪ হাজার ৪৩৭ জন ঝরে পড়ে, যা মোট শিক্ষার্থীর ২৩ দশমিক ৮০ শতাংশ। শিক্ষার্থী কমছে প্রাথমিক পর্যায়েও। প্রাথমিক শিক্ষা পরিসংখ্যান-২০২৩-এর তথ্য অনুযায়ী, ইবতেদায়ি মাদ্রাসা ও কিন্ডারগার্টেনে বাড়লেও ২০২২ সালের তুলনায় ওই বছর কেবল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েই কমে ১০ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী।
শিক্ষাবিদরা বলছেন, মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোয় শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার দিন দিনই বাড়ছে। আবার অনেক শিক্ষার্থী চলে যাচ্ছে কওমি মাদ্রাসায়। ধর্মীয় চিন্তার পাশাপাশি করোনা-পরবর্তী সময়ে দরিদ্রতা কওমি মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী বাড়ার অন্যতম কারণ। এসব প্রতিষ্ঠানে মানসম্মত শিক্ষা ও শিক্ষার্থীদের দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরের জন্য এ ধারাকে সরকারি নীতিমালার আওতায় নিয়ে আসাটাও জরুরি বলে মনে করছেন তারা। কেননা দেশে এখন সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল শিক্ষা ব্যবস্থা কওমি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুস সালাম বলেন, ‘দেশে প্রান্তিক পর্যায়ে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী বৃদ্ধির অন্যতম কারণ দরিদ্রতা। বেশির ভাগ কওমি মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বা নামমাত্র মূল্যে পড়ানোর সুযোগ থাকে এবং প্রতিষ্ঠানগুলোয় রয়েছে আবাসিক সুবিধাও। আমাদের দেশের মানুষদের একটি বড় অংশ দরিদ্র, তাদের পক্ষে সন্তানকে সাধারণ বিদ্যালয়ে পড়ানো কষ্টসাধ্য। এছাড়া শ্রমজীবী নারীদের পক্ষে কাজের পাশাপাশি সন্তানের দেখভালও কষ্টসাধ্য। ফলে তারা সন্তানের জন্য এসব প্রতিষ্ঠানকেই বেছে নিচ্ছেন। এছাড়া শিক্ষা কারিকুলামে বারবার পরিবর্তন, দীর্ঘ করোনাকালে সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ—এমন আরো বেশকিছু বিষয়ও মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে।’
দেশে নানা ধারার শিক্ষা ব্যবস্থা বিভাজন তৈরিতে ভূমিকা রাখছে উল্লেখ করে অধ্যাপক ড. মো. আব্দুস সালাম বলেন, ‘এখনো কওমি মাদ্রাসা ও কিন্ডারগার্টেনগুলো সরকারি মনিটরিংয়ের বাইরে রয়ে গেছে। এ দুই ধরনের প্রতিষ্ঠানকেই সরকারি নীতিমালার আওতায় আনা জরুরি। বিশেষত কওমি মাদ্রাসাগুলোর শিক্ষার পরিবেশ নিয়ে প্রায়ই অভিযোগ শোনা যায়। এসব সমস্যা নিরসনে মাদ্রাসাগুলো নিয়ে একটি সুস্পষ্ট জরিপ প্রয়োজন, যেখানে প্রান্তিক পর্যায় থেকে শুরু করে সারা দেশের সব কওমি মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সংখ্যা, শিক্ষার পরিবেশ এবং শিক্ষাসংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য থাকবে। এ তথ্য বিশ্লেষণ করেই কওমি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে উপযুক্ত শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত হয় এবং শিক্ষার্থীরা দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত হয়।’
কওমি মূলত ভারতের উত্তর প্রদেশের দেওবন্দ মাদ্রাসার আলোকে প্রণীত শিক্ষা ব্যবস্থা। এখানে কোরআন-হাদিসের মূল ধারার শিক্ষার ওপর বেশি জোর দেয়া হয়। আর কওমি ধারায় সর্বোচ্চ পরীক্ষা ‘দাওরায়ে হাদিস’। যদিও এ স্তরে ওঠার আগেই শিক্ষাজীবন শেষ করেন শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগ। সরকার দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্স সমতুল্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার পর বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া, বেফাকুল মাদারিসিল কওমিয়া গওহরডাঙ্গা, আযাদ দ্বীনী এদারায়ে তা’লীম, তানযীমুল মাদারিসিদ দ্বীনিয়া, আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মদারিস ও বেফাকুল মাদারিসিদ্দীনিয়্যা বাংলাদেশ—এ ছয়টি বোর্ড নিয়ে আল-হাইআতুল উলইয়া লিল-জামি’আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ নামে একটি বোর্ড গঠন করা হয়। দাওরায়ে হাদিস পরীক্ষা এ বোর্ডের অধীনেই অনুষ্ঠিত হয়। ২০২২ সালের এ পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন ২৪ হাজার ৯২৯ শিক্ষার্থী। আর চলতি বছর অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় ৩২ হাজার ৭১৮ শিক্ষার্থী অংশ নেন। সে হিসাবে এ স্তরে পরীক্ষার্থী বেড়েছে প্রায় ৩১ দশমিক ২৪ শতাংশ।
কওমি সনদের স্বীকৃতি আদায়ে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক এ সংগঠনটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘কওমি মাদ্রাসার সরকারি স্বীকৃতির মূল উদ্দেশ্য ছিল, এ শিক্ষা ব্যবস্থার শিক্ষার্থীদের রাষ্ট্র বা সরকার যেন শিক্ষিত হিসেবে গণ্য করে। একজন নাগরিক হিসেবে রাষ্ট্রের বিভিন্ন দায়িত্ব ও কার্যক্রমে অংশগ্রহণের জন্য যে শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন হয়, এ স্বীকৃতির মাধ্যমে তা অর্জিত হয়েছে। তবে এ স্বীকৃতিকে অধিকতর কাজে লাগানোর জন্য আরো কয়েকটি লক্ষ্য রয়েছে। তার মধ্যে একটি হলো এ শিক্ষা সনদের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কওমি গ্র্যাজুয়েটদের ভূমিকা রাখার সুযোগ তৈরি। তবে সে লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি। আরেকটি লক্ষ্যের মধ্যে রয়েছে, উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এ স্বীকৃতি সহায়ক ভূমিকা রাখা। কিন্তু সেক্ষেত্রে এটি কাজে লাগছে না।’
ব্যানবেইস সর্বশেষ ২০১৫ সালে কওমি মাদ্রাসায় একটি জরিপ পরিচালনা করে। তাতে মোট ১৩ হাজার ৯০২টি মাদ্রাসা এবং মোট ১৩ লাখ ৯৮ হাজার ২৫২ শিক্ষার্থীর তথ্য উঠে আসে। যদিও শিক্ষাসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ওই জরিপে দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের অনেক মাদ্রাসার তথ্যই অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। তাছাড়া প্রতি বছরই বাড়ছে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীর সংখ্যা।
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের পাশাপাশি অন্য বোর্ডগুলোর অধীন মাদ্রাসায়ও শিক্ষার্থী সংখ্যা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন বোর্ড-সংশ্লিষ্টরা। সিলেট অঞ্চলের একটি বোর্ড আযাদ দ্বীনি এদারায়ে তালিম বাংলাদেশ। এ বোর্ডের মহাসচিব মাওলানা আবদুল বছির জানান, প্রতি বছর প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। বর্তমানে আমাদের বোর্ডের অধীনে ১ লাখ ৮৫ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী রয়েছেন। শিক্ষক রয়েছেন ১১ হাজার ৪৯১ ও কর্মচারীর সংখ্যা ৭৮৫ জন। আর প্রতিষ্ঠান রয়েছে সব মিলিয়ে ১ হাজার ১২৯টি। এর মধ্যে টাইটেল মাদ্রাসা ১১৪টি, ইবতেদায়ি মাদ্রাসা ৪০৮ ও হিফজ ২৮৩টি রয়েছে।
শিক্ষার্থী বাড়ার বিষয়ে মাওলানা আবদুল বছির বলেন, ‘বিগত কয়েক বছরে দ্বীনি শিক্ষার প্রতি মানুষের আগ্রহ অনেক গুণ বেড়েছে। এর কারণ হচ্ছে সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর মানুষ বিরক্ত। সে কারণে মানুষ এখন ধর্মীয় শিক্ষার ওপর ভরসা করছেন। একটা সময় গরিবদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে কওমি মাদ্রাসাকে চিহ্নিত করা হতো। কিন্তু এখন ধনীরাও তাদের সন্তানদের মাদ্রাসায় ভর্তি করাচ্ছেন। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে অবশ্য কওমি শিক্ষা আরো অনেক দূর এগিয়ে যেত।’
ছয়টি মূল বোর্ডের বাইরে থাকা বোর্ডগুলোর একটি কওমি মাদ্রাসা বোর্ড হবিগঞ্জ। এর অধীনেও বিগত কয়েক বছরে প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন বোর্ডের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবু সালেহ সা’দী। তিনি বলেন, ‘বিগত কয়েক বছর ধরেই শিক্ষার্থী সংখ্যা বেড়েছে। এর একটি অন্যতম কারণ মাদ্রাসা শিক্ষার মান ভালো হয়েছে আগের চেয়ে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীকে যা শেখানো হয় কওমি মাদ্রাসাগুলোর নূরানী পর্যায়ে তার তুলনায় কয়েক গুণ বেশি শেখানো হয়। ফলে অভিভাবকরা ধর্মীয় চিন্তা ও শিক্ষার মানের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই মাদ্রাসা শিক্ষায় আগ্রহী হচ্ছেন।’
প্রান্তিক অঞ্চলের মতো রাজধানীসহ শহরাঞ্চলের নিম্ন আয়ের অনেক মানুষ এখন সন্তানকে কওমি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করাচ্ছেন। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার একাধিক কওমি মাদ্রাসায় গিয়ে দেখা গেছে, অনেক মাদ্রাসা পরিচালিত হচ্ছে বহুতল ভবনের একটি ফ্ল্যাট কিংবা ফ্ল্যাটের এক-দুটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে। এসব মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ অভিভাবকই নিম্ন আয়ের। কম খরচে পড়াশোনা ও বসবাসের ব্যবস্থা থাকায় তারা সন্তানের লেখাপড়ার জন্য কওমি মাদ্রাসাকে বেছে নিয়েছেন বলে জানান।
এদিকে দেশে সার্বিকভাবে শিক্ষার মান নিশ্চিতে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরের জন্য সব প্রতিষ্ঠানে সরকারি মনিটরিং নিশ্চিত ও নীতিমালার আওতায় আনা উচিত বলে মনে করেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. মনজুর আহমেদ। তিনি বলেন, ‘কওমি মাদ্রাসা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই নানা আলোচনা হচ্ছে কিন্তু এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো সমাধান হয়নি। এর কারণ সব সরকারই বিষয়টিকে অত্যন্ত স্পর্শকাতর হিসেবে বিবেচনা করে। অথচ সার্বিকভাবে দেশে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে এবং শিক্ষার্থীদের দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করতে হলে অবশ্যই কওমি মাদ্রাসাগুলো নিয়ে সরকারকে ভাবতে হবে। বর্তমানে এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ইমাম, শিক্ষকতার মতো পেশা ছাড়া চাকরির বাজারসহ অনেক ক্ষেত্রেই পিছিয়ে থাকতে হচ্ছে। তারা যাতে এ অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে পারে, উন্নত জীবিকার নিশ্চয়তা পায় এবং প্রতিষ্ঠানগুলোয় মানসম্মত শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত হয় সে বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। আমরা আশা করব বর্তমান সরকার কওমি মাদ্রাসাসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এসব বিষয় সমাধানের উদ্যোগ নেবে।’
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৯/০৫/২০২৫
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.