মানিকগঞ্জঃ সাটুরিয়া উপজেলার ছনকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক সহ প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার দুপুর ১২ টার দিকে বরাইদ ইউনিয়নের ছনকা গ্রামে বিদ্যালয় মাঠে এলাকাবাসী ও ছাত্রছাত্রীর উদ্যোগে ঘন্টা ব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ শাজাহান ও বর্তমান প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম তথ্য গোপন করে চলতি বছরে ১২ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রণালয় থেকে বিদ্যালয় স্থানান্তরের একটি চিঠি আনে। কিন্তু বিদ্যালয়ের স্থানান্তরের নীতিমালা কে উপেক্ষা করেন। প্রশাসন ও নদীর পূর্বপারের দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীদের দাবি বিদ্যালয়টি বর্তমান স্থানে থাকবে। কিন্তু গত (২৫ এপ্রিল) রাতের আধারে বিদ্যালয়টি নদীর পূর্ব পার থেকে পশ্চিম পার ছনকা বাজারে নিয়ে যায়। আর বর্তমান বিদ্যালয়টি তালা দিয়ে যায়। এতে বর্তমান বিদ্যালয়ে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীরা পূর্ব পারেই রয়ে যায় এবং বিদ্যালয়টির শ্রেণি কক্ষ ৪ দিন তালা থাকে।
বক্তারা আরো বলেন, বিদ্যালয়টি নিয়ে ৩০ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বেসরকারি মাধ্যমিক ১- শাখা থেকে পূর্বের স্থানান্তরের আদেশ বাতিলপূর্বক এবং শিক্ষা বঞ্চিত চরাঞ্চলের স্বার্থ রক্ষার্থে পুনরায় তদন্তের জন্য চিঠি ইস্যু করা হয়। এ চিঠির আলোকে সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ছনকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান স্থানে ক্লাস চালিয়ে যাবার নির্দেশ দেন। তার পরেও কত বড় দুঃসাহস শিক্ষকরা নদীর পূর্ব পাড়ে ক্লাস নিচ্ছে না। দ্রুত শিক্ষকরা ক্লাসে না ফিরলে সকল শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির পদত্যাগ ও শাস্তির দাবি করেন সবাই।
মানবন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, শত শত শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবক-সহ প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক, আব্দুল মজিদ, বরাইদ ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান খান শিপন, সাটুরিয়া উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম বাকী, উত্তর ছনকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মজিবুর রহামান, ছনকা গ্রামের মোয়াজ্জেম মাস্টার সহ এলাকাবাসী।
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ছনকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে দেখা যায়, মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে গেলেও শিক্ষকরা বর্তমান বিদ্যালয়ে না আসাতে কোন ক্লাস হচ্ছে না।
বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ আব্দুল মজিদ বলেন, উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নটি ধলেশ্বরী নদী দ্বারা শাসিত। এখানকার বেশির ভাগ এলাকা চরাঞ্চল। বরাইদ ইউনিয়নের ছনকা গ্রামে আশেপাশে কোনো বিদ্যালয় নেই। সেই আলোকে ২০১৫ সনে সর্বস্তরের জনসাধারণের কথা চিন্তা করে ছনকা গ্রামে ছনকা উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। এতে চরাঞ্চলের শত শত দরিদ্র শিক্ষার্থীরা সুবিধা পেতে শুরু করে। পরবর্তীতে বিদ্যালয়টি ২০২২ এমপিওভুক্ত হয়। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ শাজাহান এবং বতর্মান প্রধান শিক্ষক আব্দুল সালাম মিলে বিদ্যালয়টি ধলেশ্বরী নদীর পূর্ব পাশ থেকে পশ্চিম পাশে নেবার পাঁয়তারা করেন।
এ বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে সকল শিক্ষক নতুন স্থানে কার্যক্রম শুরু করেছিল। বিদ্যালয়টি নিয়ে ৩০ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বেসরকারি মাধ্যমিক ১- শাখা থেকে পূর্বের স্থানান্তরের আদেশ বাতিলপূর্বক এবং শিক্ষা বঞ্চিত চরাঞ্চলের স্বার্থ রক্ষার্থে পুনরায় তদন্তের জন্য চিঠি ইস্যু করা হয়েছে। তারপরও ক্লাসে ফিরছেন না শিক্ষকরা। ক্লাসে না আসলে সকল শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৫/০৫/২০২৫
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.