প্রধান উপদেষ্টার নাম ভাঙিয়ে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

নারায়ণগঞ্জঃ প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নাম ভাঙিয়ে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের পিয়ন মাহবুব আলম সুমন প্রতারণার জাল বিছিয়ে প্রায় কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে ভুক্তভোগীরা একত্রিত হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়ে প্রতিকার চেয়েছেন।

ভুক্তভোগীদের পক্ষে উপজেলার সনমান্দী ইউনিয়নের নয়াপারা গ্রামের স্বর্না আক্তার উল্লেখ করেন, মৎস্য কর্মকর্তার চেয়ারে বসে সেজেছেন কর্মকর্তা। লোকদের জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস প্রত্যেক দরিদ্র অসহায়দের দিবেন নগদ দুই লাখ টাকা।

এজন্য দারিদ্র বিমোচন কর্মসংস্থান ব্যাংকে জমা দেওয়ার জন্য তাকে দিতে হবে ৬ হাজার টাকা। শতাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে জনপ্রতি ৬ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিনিময়ে দিয়েছেন একটি করে এসএমএস। সেখানে লেখা হয়েছে, আপনার অ্যাকাউন্টে ৫ হাজার টাকা জমা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ওই ব্যাংকে কারো নামে কোনো অ্যাকাউন্ট নেই। যে মোবাইল নম্বর দিয়ে মেসেজ দেওয়া হয়েছে সেটাও তাদের ব্যাংকের কোনো ব্যক্তির নয়। এভাবে সে একটি ইউনিয়ন থেকেই হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় ১০ লাখ টাকা।

তিনি আরো জানান, এছাড়া সকল দপ্তর তার হাতের আঙুলে এমনটা দাবি করে ৫ লাখ টাকার সরকারি ঘর পাইয়ে দিবে বলে জনপ্রতি নিয়েছে দেড় লাখ টাকা। দুধ দেওয়া গাভি দেওয়ার কথা বলে নিয়েছেন জনপ্রতি পঞ্চাশ হাজার টাকা।

বাদ যায়নি মাতৃত্বকালীন ভাতা, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, খাদ্য ভাতার মতো নানাবিধ ভাতার পসরা সাজিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন জন প্রতি ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। বিশ্বস্ততার জন্য কয়েকজনকে নিজের থেকেই দিয়েছেন কিছু নগদ অনুদান। আর এতেই তার প্রতারণার ফাঁদে পড়ে ভুক্তভোগীরা খুইয়েছেন লাখ লাখ টাকা।

পিয়ন মাহবুব আলম সুমন কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে দিব্যি অফিস করছেন। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার বিভিন্ন লোকের অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসেন।

তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও কার্যত কিছু হচ্ছে না। তিনি সাংবাদিকদের জানান, ওই পিয়ন বদলি হওয়ার জন্য জোর তদবির চালাচ্ছে। সে একটা প্রতারক। ভুক্তভোগীরা প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে সঠিক তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১৬/০৪/২০২৫