ঢাকাঃ নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভূক্ত করণের দাবীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নন-এমপিও সংগঠনের মোর্চা “সম্মিলিত নন-এমপিও ঐক্য পরিষদ’’ এর উদ্যোগে শিক্ষকদের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ১৫ তম দিন চলছে। আজ ১৫ তম দিনে শিক্ষকরা খালি প্লেট নিয়ে ভূখা মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার (০৯ মার্চ) সকাল ১১ টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সকল নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবীতে নন-এমপিও সংগঠনের মোর্চা “সম্মিলিত নন-এমপিও ঐক্য পরিষদ’’ এর উদ্যোগে গত মাসের ২৩ ফেব্রুয়ারী থেকে শিক্ষকদের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছে।
প্রধান সমন্বয়ক প্রিন্সিপাল সেলিম মিঞার সভাপতিত্বে ১৫তম দিনের লাগাতার অবস্থান কার্যক্রম শুরু হয়ে বেলা ১১ টার দিকে ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে হাতে খালি প্লেট নিয়ে ‘কেউ খাবে কেউ খাবে না তা হবে না তা হবে না’ সহ নানা স্লোগানে একটি ভূখা মিছিল বের করে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় প্রেসক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়ে সম্মিলিত নন-এমপিও ঐক্য পরিষদ’’ সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন, নন-এমপিও সংগঠনের মুখ্য সমন্বয়ক অধ্যক্ষ দবিরুল ইসলাম, মুখ্য সমন্বয়ক অধ্যক্ষ নাজমুস সাহাদাত আজাদী, সাংগঠনিক সমন্বয়ক অধ্যক্ষ মনিমুল হক, যুগ্ম সাংগঠনিক সমন্বয়ক অধ্যক্ষ ইমরান বিন সোলায়মান, সমন্বয়ক অধ্যক্ষ সাজ্জাদ হোসেন, সমন্বয়ক অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম, সমন্বয়ক অধ্যক্ষ বাকী বিল্লাহ, সমন্বয়ক প্রধান শিক্ষক আবু বক্কর এরশাদুল হক, সমন্বয়ক সুপার ফরহাদ হোসেন বাবুল, সমন্বয়ক প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান, সমন্বয়ক অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান, সমন্বয়ক অধ্যক্ষ আবতাবুর আলম প্রমূখ।
উল্লেখ্য, নন এমপিও শিক্ষক কর্মচারীদের অবস্থান কর্মসূচিতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা এসে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, রাজশাহী জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সাঈদ চাঁদ, সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, জুনাইদ সাকি, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলমের প্রতিনিধি, এবি পার্টির ব্যারিস্টার ফুয়াদ।
নেতারা বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্বীকৃতি পাওয়ার ২০-২৫ বছর বা তারও অধিক সময় ধরে নন এমপিও থাকবে, প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হবে না, শিক্ষক কর্মচারীরা সরকারি বেতন ভাতাদী পাবে না তা হতে পারে না। শিক্ষক কর্মচারীরা এই রমজান মাসে রাজপথে থেকে বেতন ভাতার জন্য আন্দোলন করবে এটা আমরা প্রধান উপদেষ্টা ও শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে আশা করি না।
জাতি গড়ার কারিগর শিক্ষক সমাজকে অভুক্ত রেখে, অবহেলা করে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব নয়। এই অবস্থান কর্মসূচি থেকে নেতারা বলেন মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা এবং শিক্ষা উপদেষ্টাকে অনুরোধ করছি অনতিবিলম্বে সকল স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সকল নন এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবির প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন রাজনৈতিক নেতারা।
শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য জোটের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া বলেন, স্বীকৃতির জন্য যেসকল নীতিমালা রয়েছে, নীতিমালার সকল শর্ত পূরণ করে স্বীকৃতি লাভ করেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওর ক্ষেত্রে স্বীকৃতিই একমাত্র মানদন্ড।
দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ এমপিওভুক্ত না করে ধ্বংসের দারপ্রান্তে ঠেলে দেওয়া হয়েছে, যা মানবাধিকার লঙ্ঘন, শ্রম নীতিমালার পরিপন্থী ও মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। পৃথিবীর কোন শিক্ষা ব্যবস্থায় এমপিওভুক্তির নীতিমালা নেই, একাডেমির স্বীকৃতি এমপিওভুক্তির নীতিমালা।
তাই স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সকল নন এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওর দাবিতে শিক্ষকদেরকে আমরা রাজপথে দেখতে চাই না। অনতিবিলম্বে নন এনপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ঘোষণা দিয়ে তাদেরকে বাড়ী পাঠানোর ব্যবস্থা করুন।
আরও উপস্থিত ছিলেন, শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য জোটের মহাসচিব মোঃ জাকির হোসেন তিনি বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং নন এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একই সিলেবাস ও পাঠ্যক্রম অনুযায়ী পাঠদান, পরীক্ষা থেকে শুরু করে সকল কার্যক্রম পরিচালনা করে।
কিন্তু এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীগণ সরকারি বেতন ভাতাদী ও অন্যান্য সকল সুযোগ সুবিধা পান। আর নন এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীগণ সরকারি বেতন ভাতাদীসহ অন্যান্য কোন সুযোগ সুবিধা পান না, এটা একটা চরম বৈষম্য। এই বৈষম্য দূর করে সকল স্বীকৃতিপ্রাপ্ত চলমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৯/০৩/২০২৫
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.