ঢাকাঃ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শহীদ মিনারে জুতা পায়ে উঠতে নিষেধ করার সূত্র ধরে রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী আকাশ আলী, তামান্না তাবাসসুম ও আবুল বাসারের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন রসায়ন বিভাগ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ভাষা শহীদ রফিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা আর কোনো দমনপীড়ন বরদাস্ত করব না। আর কাউকে ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠার সুযোগ দেওয়া হবে না। এর আগের হামলাগুলোর ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে আজ আমাদের এখানে দাঁড়াতে হতো না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব ঘটনার দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করুক। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চাই।
মানববন্ধনে রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী আকরাম হোসেন বলেন, যদি এ ঘটনায় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেয় তাহলে আমরা প্রশাসন ও যে দলের প্রশ্রয়ে এ ঘটনা ঘটেছে তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন গড়ে তুলব। সেই সঙ্গে আমরা ক্লাস বর্জনের ডাক দেব।
রসায়ন বিভাগের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তামান্না তাবাসসুম বলেন, গতকাল আমাদের উপর হামলা হয়। আমরা প্রক্টরের কাছে গিয়েছিলাম, তারা আমাদের কোনো সহযোগিতা করেনি। আমরা তাহলে কার কাছে যাবো? আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহান প্রামানিক বলেন, ১৫ জুলাই ঢাবিতে ছাত্রলীগকে বের করতে আধা ঘণ্টা লাগেনি। প্রয়োজনে ১৫ জুলাই আরেকটা হবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। আবার না হয় যুদ্ধ হবে, আমার মাটি শুদ্ধ হবে। আমরা আমার মাটিকে শুদ্ধ করেই ঘরে ফিরব।
জাস্টিস ফর জুলাইয়ের আহ্বায়ক সজিবুর রহমান বলেন, দমনপীড়নের বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার আছি। তারা কেবল বহিষ্কার বা জবাবদিহির মাধ্যমে আরেকজনকে রিপ্লেস করছেন। তাদের জবাবহিদিহিতা মেকি। আমি এটাকে সন্ত্রাসের ট্রায়াল মনে করি।
ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রশিবিরের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আলিম আরিফ বলেন, এক পলাতক ফ্যাসিস্ট হাসিনার দল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিক্রি করে হত্যা-ধর্ষণ করেছে। আমরা এক নব্য ফ্যাসিস্টদের দেখতে পাচ্ছি যারা জুলাইয়ের চেতনা বিক্রি করে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে। আমরা আপনাদের অনুরোধ করব শিক্ষার্থীদের পালস বুঝে রাজনীতি করেন। আমরা প্রশাসনকে বলব, তারা যেন এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. তাজাম্মুল হক বলেন, সকালে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট ছয় সদস্যের কমিটিকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, বুধবার (২৯ জানুয়ারি) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মার্কেটিং বিভাগের দুই শিক্ষার্থী জুতা পায়ে উঠলে রসায়ন বিভাগের দুই শিক্ষার্থী তার প্রতিবাদ করায় তাদের উপর হামলা চালায় মার্কেটিং বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী। এ হামলার নেতৃত্ব দেন ছাত্রদল কর্মী মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অনিক কুমার দাশ।
হামলায় যুক্ত ছিলেন, মাহফুজুর রহমান চৌধুরী মাহী (১৭ব্যাচ), আয়ান (১৮ ব্যাচ), আরিফ (১৮ ব্যাচ), রাতুল (১৭ব্যাচ), আসিফ (১৮ ব্যাচ) সহ আরও ১৫ জন।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/৩০/০১/২০২৫
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.