এইমাত্র পাওয়া

শিক্ষাসূচি ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা

আকতারুজ্জামান।।মুখ থুবড়ে পড়ার শঙ্কায় শিক্ষাসূচি। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দেখভালের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানের পদ খালি। ভারপ্রাপ্ত দিয়ে কোনো রকমে চলছে কার্যক্রম। প্রধানের পদ দিনের পর দিন শূন্য থাকায় ওই দপ্তরগুলোতে নেমে এসেছে স্থবিরতা।

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক, জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির (নায়েম) মহাপরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড, ঢাকার চেয়ারম্যানসহ আরও বিভিন্ন দপ্তরের শীর্ষপদ এখন শূন্য। এসব দপ্তরের অধীন অনেক পদে মাসের পর মাস ধরে কেউ নেই।

মাউশির সাবেক মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) এ বি এম রেজাউল করিম অবসরোত্তর ছুটিতে (পিআরএল) যাওয়ার পর গত ৩ জানুয়ারি থেকে শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ এ পদে নতুন করে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। কোনোমতে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দিয়ে চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে দপ্তর।

একই দপ্তরে অর্থ বিভাগের পরিচালক ও মাধ্যমিক শাখার উপপরিচালকের পদ, কলেজ ও প্রশাসন দপ্তরের পরিচালক পদ এখনো ফাঁকা।
শিক্ষার উৎকর্ষ সাধনে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকে নায়েম। কিন্তু এই দপ্তর চলছে অতিরিক্ত দায়িত্বের মহাপরিচালক দিয়ে। ফলে বিঘ্নতা ঘটছে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে।

নায়েম-এ মহাপরিচালকের পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন প্রফেসর ড. শাহ মো. আমির আলী। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘গত ৮ দিন ধরে মহাপরিচালকের পদ শূন্য থাকায় বাজেট বাস্তবায়নসহ নানা কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ’

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পাঠদানের অনুমতি, স্বীকৃতি, ভর্তি প্রক্রিয়াসহ পরিচালনা পর্ষদ অনুমোদনসহ বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার আয়োজন করে থাকে শিক্ষাবোর্ডগুলো। ঢাকা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান সম্প্রতি পিআরএলে গেছেন। এখনো শূন্য রয়েছে এ দপ্তরের শীর্ষ পদ।

সম্প্রতি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হলেও এই বোর্ডের গুরুত্বপূর্ণ ১১টি পদের মধ্যে সাতটি পদই শূন্য রয়েছে বলে জানা গেছে।
এসব বোর্ডের গুরুত্বপূর্ণ অনেক কাজই থমকে গেছে। তথ্যমতে, চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ১০ এপ্রিল। এর আগে কেন্দ্র অনুমোদন, প্রশ্নপত্র প্রণয়নসহ নানা প্রস্তুতির বিষয় রয়েছে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব পদ পূরণের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে আট পরিদর্শক পদের মধ্যে পাঁচটি পদই শূন্য। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনেও (ইউজিসি) একটি পদ শূন্য। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে চেয়ারম্যান হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করা অধ্যাপক আজাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘প্রতিষ্ঠান প্রধান না থাকায় অনেক সমস্যা পোহাতে হচ্ছে। আর্থিক বিভিন্ন কাজ ভালোভাবে করা যাচ্ছে না। জরুরি অনেক কাজে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাচ্ছে না। ’

জুলাই অভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ সরকারের নিয়োগকৃত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষরা গণহারে পদত্যাগ করেছেন। এরপর সিংহভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করা হলেও বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে শূন্য রয়েছে উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, ট্রেজারারসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক পদ।

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের সচিব পট পরিবর্তনের পরই দায়িত্ব ছেড়েছেন। কয়েক মাস ধরে এই শীর্ষ দুই পদ শূন্য থাকলেও তা পূরণের কোনো উদ্যোগ নেয়নি সরকার। দুই দপ্তরের সচিব পদ শূন্য থাকায় সারা দেশের এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরের পর আর্থিক সুবিধা দেওয়ার কার্যক্রম কোনোমতে চালিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। এতে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের শিক্ষক-কর্মচারী।


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.