এইমাত্র পাওয়া

শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় শিক্ষকদের সংবাদ সম্মেলন

বাগেরহাটঃ বাগেরহাটের চিতলমারী কালশিরা রাজেন্দ্র স্মৃতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করায় শিক্ষক সুশান্ত কুমার ব্রহ্মকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় শিক্ষকরা সংবাদ সম্মেলন করেছেন। আজ শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) বেলা ১২ টায় চিতলমারী উপজেলা প্রেসক্লাবে (অস্থায়ী কার্যালয়ে) এ সংবাদ সম্মেলন হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ওই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক ও বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ আয়-ব্যয় নিরীক্ষা কমিটির প্রধান নিরীক্ষক প্রভাত কুমার মজুমদার।

সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে প্রভাত কুমার মজুমদার বলেন, ‘অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক এবং সম্প্রতি ভারতে আটক অবনী মোহন বসুর দোসর বিধান চন্দ্র ব্রহ্মের বিরুদ্ধে আমরা আটজন শিক্ষক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করি। প্রধান শিক্ষক কর্তৃক প্রতিষ্ঠানের প্রায় অর্ধকোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনার সংবাদটি গত ২২ ও ২৩ ডিসেম্বর বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রধান শিক্ষকের বংশীয় এবং আপন খালাতো ভাই ভূপেন ব্রহ্ম শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে শিক্ষক সুশান্ত কুমার ব্রহ্মকে মারপিট ও লাঞ্ছিত করেন। প্রধান শিক্ষক বিধান কুমার ব্রহ্ম তাঁর সীমাহীন দুর্নীতি-অনিয়ম এবং শিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের সাথে অসদাচরণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে ভাইকে দিয়ে এই লাঞ্ছিতের ঘটনা ঘটিয়েছেন।’

প্রভাত কুমার মজুমদার আরও জানান, কালশিরা রাজেন্দ্র স্মৃতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ১৩ জন শিক্ষক, ৫ জন কর্মচারী ও ২৩০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। বিধান চন্দ্র ব্রহ্ম ২০১৬ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। তিনি স্কুলের পাশের বাসিন্দা। প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের পর তাবেদারী ও অর্থের বিনিময়ে তিনি তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের চিতলমারী উপজেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক পদটি বাগিয়ে নেন। এরপর তিনি নয় বছর ধরে বিভিন্ন সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থ, সংস্থার অনুদান এবং বিদ্যালয়ের সম্পদ থেকে অর্জিত বড় অংকের টাকা ও বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ আয় মিলিয়ে বিপুল পরিমান টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তাঁর আত্মাসাতের বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকবৃন্দ, কমিটির সদস্য, গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও অভিভাবক মহলে বহু আলোচনা-সমালোচনা হলেও তার ক্ষমতার প্রভাবে ভয়ে কেউই মুখ খুলতে সাহস পাননি। গত ৯ বছর ধরে তিনি ক্ষমতার দম্ভে শিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের সাথে চরম দুর্ব্যবহার করতেন। কোন ব্যাপারে প্রতিবাদ করলে তিনি স্কুল থেকে বেরিয়ে যেতে হুমকি দিতেন। স্কুলের সম্পদ তিনি ব্যক্তিগত সম্পদ হিসেবে ব্যবহার করেন। এসএসসির নির্বাচনী পরীক্ষায় ফেল করা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে পরীক্ষার সুযোগ দিতেন। পরে ওই টাকা আর ফেরত দিতেন না।

সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন ওই বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক তপন কুমার বিশ্বাস, সহকারি শিক্ষক দিপালী রাণী রায়, সুশান্ত কুমার ব্রহ্ম, মো. আতিয়ার রহমান ও অপূর্ব বিশ্বাস।

এ ব্যাপারে ভূপেন ব্রহ্ম বলেন, ‘শিক্ষক সুশান্ত কুমার ব্রহ্ম আমার ছেলেকে দিয়ে কাজ করিয়েছে। তাই তাকে ডেকে নিয়ে দুটো চড়-থাপ্পড় মেরেছি।’

কালশিরা রাজেন্দ্র স্মৃতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিধান চন্দ্র ব্রহ্ম বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ বানোয়াট। মারপিটের ঘটনার সাথে আমি জড়িত নই।’

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/২৮/১২/২০২৪


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.