বাকি ৮ দিন, নিবন্ধন মাত্র ৩৭ শতাংশ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।২০২৫ সালের হজ নিবন্ধনের সময় ৩ মাস পার হলেও হজযাত্রীদের সাড়া মিলছে না। ১৫ ডিসেম্বর নিবন্ধনের সময় শেষ হবে। এরপর আর সময় বাড়ানো হবে না বলে জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। হাতে সময় আছে মাত্র ৮ দিন। এখন পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারিভাবে হজের নিবন্ধন করেছেন ৪৭ হাজার ৩৮৩ জন (৩৭ শতাংশ)। সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যাওয়ার কথা রয়েছে। সেই হিসাবে এখনো কোটা খালি রয়েছে ৭৯ হাজার ৮১৫ জনের (প্রায় ৬৩ শতাংশ)। চলতি বছর ১ সেপ্টেম্বর এই নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবারও হজ প্যাকেজের মূল্য প্রত্যাশিতভাবে কমানো হয়নি। স্বাভাবিক বিমান ভাড়া চেয়ে দ্বিগুণের বেশি খরচ ধরা হয়েছে। অর্থনৈতিক কারণে অনেকের বিভিন্ন ব্যাংকে টাকা জমা রাখলেও, সেটি অনেকে তুলতে পারছেন না। এছাড়া প্রাথমিক নিবন্ধনের জন্য যে টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটা অনেক বেশি। তাই সার্বিক পরিস্থিতি মিলিয়ে এবার নিবন্ধনে সাড়া কম।

এই বিষয়ে হজ অধিশাখার যুগ্ম সচিব ড. মো. মঞ্জুরুল হক যুগান্তরকে বলেন, আমরা হজের বিমান ভাড়া কমানোর চেষ্টা করেছি। এখনো সেই চেষ্টা চলমান। সৌদি আরবে হজের কোটার চাহিদা দ্রুত পাঠাতে হবে। সেজন্য হজের নিবন্ধনের সময় আর বাড়ানো সম্ভব নয়। এছাড়া প্রাথমিক নিবন্ধন সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। যে কেউ প্রাক-নিবন্ধন করে হজের প্রাথমিক নিবন্ধন সম্পন্ন করতে পারবেন। তবে যেটুকু সময় আছে তার মধ্যে হজযাত্রীর ভালো সাড়া মিলবে বলে আশাবাদী তিনি।

জানা যায়, এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাথমিক নিবন্ধন করেছেন মোট ৪ হাজার ৪৪১ জন। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধন করেছেন মাত্র ৪২ হাজার ৯৪২ জন। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বছরের ৫ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। গত ৩০ অক্টোবর সরকারিভাবে দুটি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। ঘোষিত সাশ্রয়ী সাধারণ প্যাকেজ-১ অনুযায়ী খরচ ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা। সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রায় প্রত্যেক হজযাত্রীর চলতি বছরের প্যাকেজ-১ এর চেয়ে এক লাখ ৯ হাজার ১৪৫ টাকা কম খরচ হবে। অন্য প্যাকেজে (প্যাকেজ-২) খরচ ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮০ টাকা। এ হিসাব খাবার খরচ ছাড়া।

এ বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে সরকারিভাবে হজে যেতে সাধারণ প্যাকেজে ৫ লাখ ৮৭ হাজার ৩৮৭ টাকা খরচ হয়েছিল। বিশেষ হজ প্যাকেজের মূল্য ছিল ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩২০ টাকা। এবার বিশেষ প্যাকেজ করা হয়নি।

সরকার বেসরকারি মাধ্যমে সাধারণ হজ প্যাকেজ মূল্য ৪ লাখ ৮৩ হাজার ১৫৬ টাকা (খাবার খরচ ছাড়া) নির্ধারণ করে দিয়েছে। সাধারণ হজ প্যাকেজ গ্রহণ করে এজেন্সি একটি অতিরিক্ত বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবে বলেও ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়।

পরে ৬ নভেম্বর হাবের বাতিল হওয়া কমিটি আগামী বছর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনে দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করে। ‘সাধারণ হজ এজেন্সির মালিকবৃন্দ’ ব্যানারে তারা এ প্যাকেজ ঘোষণা করে। খাবার খরচ যুক্ত করে সাধারণ হজ প্যাকেজের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ লাখ ২৩ হাজার এবং বিশেষ হজ প্যাকেজের মূল্য ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। পরদিন ৭ নভেম্বর ‘বৈষম্যবিরোধী হজ এজেন্সি মালিকরা’ তিনটি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করে। তাদের ঘোষণা করা প্রথম প্যাকেজের মূল্য ধরা হয়েছে ৫ লাখ ১৮ হাজার টাকা, দ্বিতীয় প্যাকেজের মূল্য ৫ লাখ ৮৫ হাজার এবং বিশেষ হজ প্যাকেজ ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।

এদিকে ২ ডিসেম্বর হজযাত্রীদের আমানত পরিশোধ ও হজ কার্যক্রমের অর্থ বিনিয়োগ না করার অনুরোধ জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়, ব্যাংক হিসাবে হজযাত্রীদের সৌদি পর্বের ব্যয় এবং এয়ারলাইন্স টিকিটের অর্থ জমা রয়েছে এবং এখনো জমা দেওয়া হচ্ছে। উল্লিখিত হিসাবগুলোতে জমা অর্থের প্রায় ৫০ শতাংশ ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে সৌদি আরবে পাঠাতে হবে। এ কারণে জমা অর্থ অন্যত্র বিনিয়োগ না করার জন্য অনুরোধ জানানো হয় চিঠিতে।

শিক্ষাবার্তা /এ/০৭/১২/২০২৪

 


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.