এইমাত্র পাওয়া

রংপুরে মাদ্রাসার বাথরুমে মিলল শিশুশিক্ষার্থীর ম-র-দে-হ

রংপুরঃ রংপুরে মাদ্রাসার বাথরুম থেকে সিয়াম (১০) নামে এক শিশুশিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলার পর পুলিশ মাদ্রাসার এক শিক্ষক ও এক ছাত্রসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ ছাড়া মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।

নিহত শিশু সিয়াম মিঠাপুকুর উপজেলার বালারহাট ইউনিয়নের বজরুক ঝালাই গ্রামের কাঠমিস্ত্রি মনোয়ার হোসেন ভুট্টুর ছেলে। সে নগরীর বকুলতলা জান্নাতবাগ মাদ্রাসা ও লিল্লাহ বোর্ডিং মাদ্রাসায় নাজেরা বিভাগের লেখাপড়া করত।

মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) আতাউর রহমান স্থানীয়দের বরাতে জানান, গত বৃহস্পতিবার বিকালে মাদ্রাসার মাঠে সহপাঠীদের সঙ্গে খেলাধুলা করে সিয়াম। এরপর মাগরিবের নামাজের সময় তাকে মসজিদে দেখা যায়নি। পরে অনেক খোঁজাখুঁজির পর রাত ৯টার দিকে মাদ্রাসার তৃতীয় তলার বাথরুমে সিয়ামের মরদেহ পাওয়া যায়।

পুলিশের ধারণা, সিয়ামকে বলাৎকার করার পর হত্যা করা হয়েছে। কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক হালিম মিয়া বলেন, প্রাথমিক তদন্তে শিশুটির শরীরে বলৎকার ও শ্বাসরোধে হত্যা হয়েছে, এমন কিছু আলামত পাওয়া গেছে। ব্যবহৃত পায়জামাতেও এর কিছু নমুনা রয়েছে। ময়নাতদন্তের পর প্রকৃত ঘটনা বলা সম্ভব হবে।

এ ঘটনায় পুলিশ মাদ্রাসা শিক্ষক মিঠাপুকুর বজরুক ঝালাই গ্রামের আব্দুর রহমান আব্দুল্লাহ (২৫) এবং শিক্ষার্থী বদরগঞ্জ উপজেলার লালদিঘি বৃত্তিপাড়া গ্রামের মোকলেছুর রহমানকে (২০) গ্রেপ্তার করেছে। এ ছাড়া মাদ্রাসার শিক্ষক মাহবুল ইসলাম (৪০), শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান (১৪), মনোয়ার হোসেনকে (১২) জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেওয়া হয়।

মাত্র তিন সপ্তাহ আগে সিয়ামকে ওই মাদ্রাসার লিল্লাহ বোর্ডিংয়ে ভর্তি করানো হয় বলে জানান তার বাবা মনোয়ার হোসেন ভুট্টু। মোবাইল ফোনে তিনি বলেন, ‘কালই দিনোত ছাওয়ার সাতে মোবাইলোত কতা হইল। ওয় কইল, আব্বা কাইল মাদ্রাসা আইসেন। একসাতে জুম্মার নামাজ পড়ার কথা ছিল, আইজ ওয় দুনিয়াত নাই। সকালে মাদ্রাসা থ্যাকি ফোন করি কইল মোর ছাওয়া কোনা অসুস্থ হইছিল, মেডিকেলেত নাকি মারা গেইচে। মাদ্রাসা ছাওয়াক পাঠানু পইরবার, কিন্তু মাদ্রাসার ওস্তাদ-ছাত্ররা মিলি মোর ছাওয়াক নাকি মারি ফেইছে। মুই মোর ছাওয়াক মারি ফেলার বিচার চাও।’

বকুলতলা জান্নাতবাগ মাদ্রাসা ও লিল্লাহ বোর্ডিং মাদ্রাসার সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, এমন ঘৃণ্য কাজের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি।

ওসি আতাউর রহমান বলেন, শিশু সিয়াম হত্যার ঘটনায় তার বাবা মনোয়ার হোসেন ভুট্টু থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরও কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্ত শেষে বোঝা যাবে সিয়ামের মৃত্যুর কারণ।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/২৯/১১/২০২৪


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.