বরিশাল: জেলার মুলাদীতে নদীভাঙন থেকে বিদ্যালয় রক্ষার জন্য বরাদ্দ করা জিও ব্যাগ প্রতিষ্ঠানের সভাপতির পুকুর ও বাড়ির ভাঙনরোধে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার সফিপুর ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জন্য তৈরি করা প্রায় ৩০০ জিও ব্যাগ গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সভাপতি জসিম উদ্দীনের লোকজন জোরপূর্বক নিয়ে যান। এ সময় ব্যাগ নিতে বাধা দিলে সভাপতির লোকজন শ্রমিকদের মারধর করেন বলে অভিযোগ করেছেন ঠিকাদার।
তবে জসিম ব্যাগ নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, ঘটনার সময় তিনি ঢাকায় ছিলেন, ব্যাগ নেওয়ার বিষয়টি তাঁর জানা নেই। অপর দিকে তাঁর লোকজনের ইঞ্জিনচালিত নৌকা (ট্রলার) ভর্তি করে জিও ব্যাগ নেওয়ার ভিডিও এলাকায় ভাইরাল হয়েছে।
সফিপুর ব্রজমোহন গ্রামের বাসিন্দা মো. মিজানুর রহমান জানান, জয়ন্তী নদীর ভাঙন থেকে সফিপুর ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ব্রজমোহন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রক্ষার জন্য ৩০০ মিটার জায়গায় জিও ব্যাগ বরাদ্দ করা হয়। এ জন্য ঠিকাদারের লোকজন ব্যাগভর্তি করে নদীর পাড়ে জড়ো করেন। গতকাল সফিপুর ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি জসিমের লোকজন ট্রলারবোঝাই করে প্রায় ৩০০ জিও ব্যাগ নিয়ে যান। ব্যাগগুলো বিদ্যালয় এলাকা থেকে প্রায় ৮০০ মিটার দূরে সভাপতির পুকুর ও বাড়ি রক্ষার জন্য ফেলা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক টুলু সরদার বলেন, নদীভাঙন থেকে বিদ্যালয়টি রক্ষা করা জরুরি। সভাপতি জিও ব্যাগ নেওয়ায় কাজ বন্ধ রয়েছে। এতে বিদ্যালয়ের ভাঙনঝুঁকি বেড়েছে।
ঠিকাদার মো. তরিকুল ইসলাম জানান, সভাপতি জসিম এর আগে তাঁর পুকুর ও বাড়ি রক্ষার জন্য সেখানে জিও ব্যাগ ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু বরাদ্দ স্থান ছাড়া অন্য কোথাও জিও ব্যাগ ফেলা যাবে না জানালে তিনি ক্ষিপ্ত হন এবং জোরপূর্বক জিও ব্যাগ নিয়ে যান। এতে বাধা দিলে তাঁর লোকজন শ্রমিকদের মারধর করেন। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জসিম বলেন, ‘আমি ঢাকায় রয়েছি। জিও ব্যাগ নেওয়ার বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।’
যোগাযোগ করা হলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বাবুগঞ্জ উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মুশফিকুর রহমান শুভ বলেন, ‘সফিপুর ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় রক্ষার জন্য জিও ব্যাগ বরাদ্দ হয়। ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি ঠিকাদারের লোকজনকে মারধর করে জোরপূর্বক ব্যাগ নিয়েছেন বলে শুনেছি। বিষয়টি তদন্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে বরিশাল পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. খালেদ বিন অলীদ বলেন, ‘বিষয়টি জেনেছি। বিদ্যালয়ের সভাপতি প্রভাব খাটিয়ে জিও ব্যাগ নিয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১২/০৭/২০২৪
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.