এইমাত্র পাওয়া

যুক্তরাষ্ট্রে ছাত্রদের ওপর গুলি, শিক্ষকের পাঁজর ভেঙে দিল পুলিশ

শিক্ষাবার্তা ডেস্ক, ঢাকাঃ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবারও অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, কানাডা, জার্মানি, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থী রাস্তায় নেমে গাজায় ইসরাইলি নৃশংসতা বন্ধ ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে স্লোগান দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবারও দেশটির অর্ধশতাধিক ভার্সিটিতে ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ হয়। এসব ক্যাম্পাস থেকে প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ। আটককৃতদের মধ্যে বাংলাদেশীসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের শিক্ষার্থী রয়েছেন।

এসব ঘটনায় অনেক ক্ষেত্রে সহিংসপন্থার আশ্রয় নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটেছে গুলির ঘটনাও। বিক্ষোভ চলাকালে এক অধ্যাপককে গ্রেপ্তার করার সময় তার পাঁজরের নয়টি হাড় ও একটি হাত ভেঙে দিয়েছে পুলিশ। ভুক্তভোগী শিক্ষক এক বিবৃতিতে এ কথা জানান। মিসৌরি অঙ্গরাজ্যের সেন্ট লুইসে ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিক্ষক স্টিভ তামারি সাউদার্ন ইলিনয়েস ইউনিভার্সিটি এডওয়ার্ডসভিলের ইতিহাসের অধ্যাপক। আবার মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষজ্ঞও তিনি। এক ভিডিওতে দেখা যায়, ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্টিভ তামারি দৃশ্যত বিক্ষোভকারীদের ছবি তোলার বা ভিডিও ধারণের চেষ্টা করছিলেন। এ সময় কয়েকজন পুলিশ সদস্য বেপরোয়াভাবে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যান তাকে। ভিডিওতে আরও দেখা যায়, গ্রেপ্তার হওয়ার সময় অধ্যাপক তামারি মাটিতে পড়ে গেলে পুলিশের এক সদস্য তাকে হাঁটু দিয়ে আঘাত করতে থাকেন। পরে দুই হাত পিছমোড়া করে হাতকড়া পরানো হয়। এরপর কয়েকজন পুলিশ তার নিস্তেজ হয়ে পড়া শরীর টেনে-হিঁচড়ে একটি ভ্যানের দিকে নিয়ে যায় ও মাটিতে উপুড় করে ছুড়ে ফেলে। বিক্ষোভ চলাকালে এই অধ্যাপকের স্ত্রীকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনা নিয়ে এক্সে বৃহস্পতিবার দুপুরের পর সান্দ্রা একটি পোস্ট দেন। তাতে লেখেন, স্টিভ তামারিকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে তার ব্যথা রয়েছে ও ভাঙা হাতে অস্ত্রোপচার করতে হবে। এ ঘটনায় একাডেমিক প্রকাশনা ‘দ্য মিডল ইস্ট রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন প্রজেক্ট’ এক বিবৃতি দিয়েছে। তাতে বলা হয়, এমইআরআইপির নেতা ও কর্মীরা অধ্যাপক তামারির ওপর হামলা এবং তাকে গ্রেপ্তারের ঘটনা শুনে আতঙ্কিত ও ক্ষুব্ধ। ইতিাপূর্বে অধ্যাপক তামারি ও তার স্ত্রী দুজনই এ প্রকাশনায় কাজ করেছেন। খবর বিবিসি, এএফপি ও আলজাজিরা অনলাইনের।

যুক্তরাষ্ট্রের পর অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তাঁবু গেড়ে ফিলিস্তিনপন্থিদের সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। গাজায় যুদ্ধের বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভে ইসরাইলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানানো হয়। মূলত, যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে অনুপ্রাণিত হয়ে তারা এই বিক্ষোভ করছে।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধান সব নগরীর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীরা গত দুই সপ্তাহে শিবির গেড়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীরা গত সপ্তাহে প্রধান হলের বাইরে জড়ো হয়ে শিবির স্থাপন করে। এ ছাড়া মেলবোর্ন, ক্যানবেরা এবং অস্ট্রেলিয়ার অন্যান্য শহরে একই ধরনের শিবির স্থাপন করেছে বিক্ষোভকারীরা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের মতো অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ এখনো বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে মারমুখী অবস্থানে যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ দমাতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। অনেককে গ্রেপ্তারও করেছে।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৪/০৫/২০২৪


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.