নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ জেলাভিত্তিক বিশেষ কমিটি স্থানীয়ভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটির সিদ্ধান্ত নিতে পারবে, এই লক্ষ্যে নীতিমালা করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি আরও জানান, বর্তমানে শনিবারে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে তা স্থায়ী নয়।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজে বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ-২০২৪ জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতার সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী শামসুন নাহার, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. ফরিদ উদ্দিন আহমদ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ।
অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, আমাদের নির্দিষ্ট কর্মদিবস আছে বিদ্যালয়গুলোর জন্য। এখন আমাদের প্রয়োজনে শনিবার বিদ্যালয় খোলা রেখেছি। কারণ বেশকিছু দিন বিদ্যালয় বন্ধ ছিল। এটি স্থায়ী বিষয় নয়। প্রয়োজনবোধে যেকোনও ছুটির দিন শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার জন্য বিদ্যালয় খোলা রাখার সিদ্ধান্ত আগেও ছিল, এখনও আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। এটা নতুন কিছু নয়। শুক্রবারও তো অনেক জায়গায় পরীক্ষা হয়, আগেও নেওয়া হতো। সেটা শুক্রবার হোক, শনিবার হোক, প্রয়োজন সাপেক্ষে খোলা রাখতে পারবো।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য অবশ্যই একটি নিরাপদ স্থান। একেক জেলায় একেক তাপমাত্রা। যেসব জেলায় আমাদের সন্তানরা অতিবৃষ্টির কারণে, বন্যার কারণে স্কুলে যেতে পারে না, অনেক কষ্ট হয়, সেখানে স্কুল বন্ধ থাকে। সেসব জায়গায় শুষ্ক মৌসুমেই শিক্ষা কার্যক্রম তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে, তাদের শিখন ফল অর্জনের জন্য। কিন্ত এখন দেখা যাচ্ছে, এমন একটা আলোচনা হচ্ছে— রাজধানী ঢাকায় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়টি আসছে। রাজধানীতে তাপমাত্রা বেড়ে গেলে ঢাকায় আমরা স্কুল বন্ধ রাখতেই পারি।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটির বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা একটা সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়া দাঁড় করানোর চেষ্টা করছি। জেলা প্রশাসন, শিক্ষা প্রশাসন নিয়ে প্রতিটি জেলায় একটি বিশেষ কমিটি আবহাওয়ার পরিস্থিতি বিবেচনায় অবস্থা বুঝে জেলাভিত্তিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। এটা যাতে করা যায় সে জন্য নীতিমালা করে তৈরি করে দেবো। আবহাওয়া যদি সহনীয় না থাকে তাহলে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। শীতকালে শৈত্যপ্রবাহের কারণে হতে পারে, গরমকালে তাপপ্রবাহের কারণে হতে পারে। যেকোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগে হতে পারে। সেক্ষেত্রে নির্দিষ্ট করে জেলাভিত্তিক সিদ্ধান্ত (ছুটির) নিতে পারেন সে জন্য অবশ্যই নীতিমালা করে দেবো।
নওফেল বলেন, কোনও কোনও গোষ্ঠী বা চক্রের মাধ্যমে আমাদের সাধারণ শিক্ষা ব্যস্থার ওপর বার বার আক্রমণ আসছে, বিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়ার মতো একটা অযৌক্তিক ও অমানবিক দাবি আসছে বার বার। এর থেকে আমরা পরিত্রাণ পেতে পারি। স্থানীয়ভাবে যাতে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়, তারা নেবেন। প্রাথমিক পর্যায়ে আছে, নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত তা বিদ্যামান থাকে সে ব্যবস্থা নেবো।
প্রসঙ্গত, তাপদাহের কারণে অঞ্চলভিত্তিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে জানিয়ে দিচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সোমবার (২৯ এপ্রিল) ঢাকাসহ ৫ জেলা এবং মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) ২৭ জেলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়। সরকারি এসব সিদ্ধান্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা শুরু হয়।
শিক্ষাবার্তা ডটকম /এএইচএম/৩০/০৪/২০২৪
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.