চিকিৎসা শিক্ষা অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সোহরাব

ঢাকাঃ বাংলাদেশ চিকিৎসা শিক্ষা অ্যাক্রেডিটেশন আইন, ২০২৩ এর আওতায় অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল গঠন করেছে সরকার। গত ৯ এপ্রিল স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের চিকিৎসা শিক্ষা-১ শাখার উপসচিব মোহাম্মদ কামাল হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ কথা জানানো হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. সোহরাব আলীকে নবগঠিত কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. খান আবুল কালাম আজাদকে রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

কাউন্সিলে ‘চিকিৎসা শিক্ষা, গবেষণা ও উন্নয়নে সম্পৃক্ত অধ্যাপক পদমর্যাদা’ ক্যাটাগরিতে খণ্ডকালীন সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নিউনেটালোজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মোহাম্মাদ সহিদুল্লাহ ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সানোয়ার হোসেন।

পূর্ণকালীন ছয় সদস্য

এ ছাড়াও নবগঠিত কাউন্সিলে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পূর্ণকালীন সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন ছয়জন। তারা হলেন—

‘চিকিৎসা শিক্ষায় কৃতিত্বের পরিচয়দানকারী মেডিকেল কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক’ ক্যাটাগরিতে ঢামেকের অ্যানেসথেশিয়া বিভাগের অধ্যাপক ডা. এম খলিলুর রহমান,

‘ডেন্টাল কলেজ বা ইনস্টিটিউটের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক’ ক্যাটাগরিতে অধ্যাপক ডা. ইসমত আরা হায়দার,

‘নার্সিং কলেজ বা ইনস্টিটিউটের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ’ ক্যাটাগরিতে ঢাকা নার্সিং কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ হালিমা আকতার,

ইনস্টিটিউট অব হেল্থ টেকনোলজি (আইএইচটি) বা মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেইনিং স্কুলের (ম্যাটস) অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ক্যাটাগরিতে ঢাকা আইএইচটির সাবেক অধ্যক্ষ ডা. উম্মে আজিজ নাসিমা,

‘অল্টারনেটিভ মেডিসিন বিষয়ে অভিজ্ঞ সহকারী অধ্যাপক বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক’ ক্যাটাগরিতে সরকারি ইউনানী ও আয়ূর্বেদিক মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ কাম অধীক্ষক ডা. স্বপন কুমার দত্ত।

প্রজ্ঞাপনের নির্দেশনা অনুযায়ী, খণ্ডকালীন সদস্য পদে তাদের মেয়াদ হবে ০৪ (চার) বছর, তবে সরকার প্রয়োজন মনে করলে এর পূর্বেই এ নিয়োগ আদেশ বাতিল করতে পারে।

পূর্ণকালীন সদস্যগণ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সাথে কর্ম-সম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে নিয়োজিত হবেন এবং তাঁদের বর্তমান পদের/অবসর অব্যবহিত পূর্ব পদের সমপরিমাণ বেতন-ভাতাদি ও বিধি অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট পদের অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্য হবেন এবং

তারা ‘বাংলাদেশ চিকিৎসা শিক্ষা অ্যাক্রেডিটেশন আইন, ২০২৩’ দ্বারা, বিধি/প্রবিধি দ্বারা এবং কাউন্সিল কর্তৃক নির্ধারিত দায়িত্ব পালন করবেন।

রাষ্ট্রপতি আদেশক্রমে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।

ডব্লিউএফএমই’র স্বীকৃতি অর্জনে কাজ শুরু

নবগঠিত চিকিৎসা শিক্ষা অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল এ সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন এবং ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশনের (ডব্লিউএফএমই) অ্যাক্রেডিটেশনের স্বীকৃতি অর্জনের লক্ষ্যে মানদণ্ড নির্ধারণে কাজ শুরু করবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ডব্লিউএফএমইর যৌথ টাস্কফোর্সের সুপারিশের ভিত্তিতে ২০২৪ সালের মধ্যে বিশ্বের সকল দেশের মেডিকেল শিক্ষা একটি অ্যাক্রেডিটেশনে আসাকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এটি নিশ্চিত হলে এক দেশের চিকিৎসক অন্য দেশে চাকরি ও উচ্চতর পড়াশোনা করতে পারবেন।

মেডিকেল শিক্ষার বৈশ্বিক নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অ্যাক্রেডিটেশন অর্জিত না হলে এমবিবিএস সম্পন্ন করা বাংলাদেশি চিকিৎসকদের চলতি বছরের জুন থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চাকরি ও প্রশিক্ষণ বাধার মুখে পড়বে।

চিকিৎসা শিক্ষা অ্যাক্রেডিটেশন বিল

দেশে মানসম্মত চিকিৎসা শিক্ষা ও সেবা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ চিকিৎসা শিক্ষা অ্যাক্রেডিটেশন বিল, ২০২৩ সংসদে পাস হয়। গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এ খবর দেয়।

স্বীকৃতির মানদণ্ড নির্ধারণে ১৯ সদস্যের কাউন্সিল

বিলে বলা হয়েছে, এই আইনের অধীনে একটি অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল থাকবে। ১৯ সদস্যের এই কাউন্সিলই অ্যাক্রেডিটেশনের বিষয়গুলো দেখভাল করবে, নীতিমালা প্রণয়ন করবে। এর জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে অ্যাক্রেডিটেশনের মানদণ্ড নির্ধারণ করবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, মানসম্মত চিকিৎসা শিক্ষা ও সেবা নিশ্চিতকরণের জন্য চিকিৎসা শিক্ষা অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল গঠন এবং প্রয়োজনীয় আইন ও বিধি-বিধান প্রণয়নের বিষয়ে ২০১৪ সালের ১১ মার্চ ‘জাতীয় স্বাস্থ্য কাউন্সিল’ এর সভায় নির্দেশনা প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পরিপ্রেক্ষিতে চিকিৎসা শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিতকরণের উদ্দেশ্যে চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ ও উক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহের চিকিৎসা শিক্ষা কার্যক্রমকে অ্যাক্রেডিটেশন সনদ প্রদান এবং চিকিৎসা শিক্ষা প্রদানকারীদের মান নিয়ন্ত্রণ ও তদারকির লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ চিকিৎসা শিক্ষা অ্যাক্রেডিটেশন আইন, ২০২৩’ শীর্ষক বিল জাতীয় সংসদে আনা হয়।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চিকিৎসা শিক্ষা অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল গঠন এবং এ সংক্রান্ত বিধি-বিধান প্রণয়নে আইনটি অতি প্রয়োজনীয় ও যুক্তিযুক্ত।’

তারও আগে গত বছরের ১৪ জুন বিদেশে চিকিৎসকসহ মেডিকেল টেকনিশিয়ানদের চাকরি ও উচ্চশিক্ষার পথ সুগম করণের লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ চিকিৎসা শিক্ষা অ্যাক্রেডিটেশন বিল, ২০২৩’ বিল জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হয়েছে।

এর আগে ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর এই আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১৪/০৪/২০২৪


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

Check Also

স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণের নতুন সচিব ডা. মো. সারোয়ার বারী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব …