এইমাত্র পাওয়া

এসো সত্য সুন্দর শান্তির পথে চলি

।। শফিকুর রহমান।।

রোজা সংযমের শেষ পর্যায়ে এসে উপনীত হচ্ছি পরবর্তীতে
এমন রমযান হয়তো আর ভাগ্যে নাও মিলতে পারে, আসুন
আমরা আল্লাহর কাছে পনাহ চেয়ে মুক্তির পথ গুলো, বেছে নিতে চেষ্টা করি।
আমি মনে করি যতক্ষণ দেহে প্রাণ আছে ততক্ষণই ভালো বাসা অর্থ রঙিন স্বপ্ন এগুলো আছে।

দেহটা যখন কবরে চলে যায় সবচেয়ে আপনজনও আলাদা হয়ে যায়। তাই কোরআনের অনুশাসন গুলোকে আপন করে নেই। যাতে সবাই আলাদা হয়ে গেলেও এইকর্ম গুলো কবরে
তোমার আমার সাথী হয়।

মানুষ যখন মারা যায় তার অর্জিত জীবনের সব সম্পদ তার হাত ছাড়া হয়ে যায়। তুমি যা নিজের জন্য রাখবে তা-ই এক সময় অন্যের হস্তগত হবে।
যদি আল্লাহর রাস্তায় কোন কিছু ব্যয় করো- তাই পরকালের জন্য রয়ে যাবে।
সুতরাং তোমার আমার প্রয়োজনকে সীমিত বা ছোট করতে শিখা জরুরি এবং আল্লাহর প্রয়োজনকে বড় করা মঙ্গলের
ও বুদ্ধিমানের পরিচয় নিশ্চয়।
কারন আল্লাহর যা প্রয়োজন প্রকৃতপক্ষে পরকালে ও তাহা তোমার আমারই প্রয়োজন হবে।
তাই উপার্জনের একটা বড়ো অংশ আল্লাহর বরাবরে দিয়ে দেওয়া উচিৎ বলে মনে করি।

যে বিশুদ্ধ আত্মা নিয়ে মানুষ দুনিয়াতে আসে সেই আত্মাকে পরিশুদ্ধ রাখা অতীব গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এবিষয়ে যত্ন অথবা খেয়াল না রাখলে দিন দিন সেই আত্মা কলুষিত হতে থাকে, এগুলোর সমাধান হলো প্রকাশ্যে এবং গোপনে তুমি আমি আল্লাহকে ভয় করা।
কেননা তোমার আমার সব গোপন কিছু,গোপন অভিলাষও
সব বিষয় আল্লাহ দেখছেন।
তোমার এবং আমার আত্মা যদি পরিশুদ্ধ থাকে তবে-ই সেই জান্নাত নিবাস হবে আমাদের কোন সন্দেহ নেই তাতে।
মনে রাখতে হবে আল্লাহর ভীতি যত বাড়তে থাকলো তাহাই
তোমার আমার হৃদয়ের পরিশুদ্ধতাও তত বাড়তে থাকলো।

খেয়াল করলে দেখা যায় নিজের গুরুত্ব ,মর্যাদা বাড়াতে সব মানুষ তার সম্পদ,পদ, মসনদ এগুলোর প্রতি, লোভ বেড়েই চলে, এ রাজ্য মসনদের মালিক আসলেই কেহ হতে পারে না আর হতে পারলেও সব কিছুইতো ক্ষনস্থায়ী।
পরিস্থিতি ও সময়ের বাস্তবতার কাঠগড়ার মধ্যে সব কিছুই এক সময় কঙ্কাল হয়ে যায়,তাহলে মর্যাদা বাড়ে কীসে ?
আমরা সবাই কার প্রার্থনা করা উচিৎ? এগুলোরই সমাধান এক মাত্র কোরআনে রহিয়াছে।

যিনি তোমার আমার মাঝে সবচেয়ে ন্যায়নিষ্ঠ ও ধার্মিক সেই আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশী মর্যাদাবান।
তাই, এ পৃথিবীর সব মোহ মর্যাদা ভুলে গিয়ে আল্লাহর কাছে সম্মানিত হওয়ার পথই বেছে নেওয়া উত্তম কাজ।

আমি তুমি সবার চারপাশে মানুষ ক্ষণস্থায়ী ভরসা করি সেটা কারো ক্ষমতায়,কারো ভরসা ব্যবসায়,কারো ভরসা চাকরির কারো ভরসা দেহের শক্তিতে।
ভিন্ন জনের ভিন্ন ধরনের চাওয়া অর্থ বিত্ত ও দুনিয়ার উপর। এটা একটা বিরাট সমস্যা তবে সমাধান হলো কোরআনে।

যে মানুষটি আল্লাহর উপর ভরসা রাখে- তার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট,এমনটা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করলে তখন সয়ং আল্লাহ তা
নিজ থেকে এক আধ্যাত্মিক শক্তির সন্ধান করে দিবে এটাই
আমার বিশ্বাস।
তার জন্য সব কিছু বাদ দিয়ে শুধুমাত্র আল্লাহর উপর ভরসা রাখা এক মাত্র মুক্তির পথ হতে পারে।
তাহলেই সমস্ত পেরেশানি কমে গিয়ে একেবারে নির্ভার থাকা সম্ভব।

দুনিয়ার মোহে চারপাশে মানুষ একজন আরেকজনের সাথে নানা সংঘাতে জড়িয়ে থাকে।
কি সব ভয়ানক সমস্যার মাঝে মানুষ নিমজ্জিত এগুলোতো আল্লাহই ভালো জানেন সমাধান একমাত্র আল্লাহই দিবে।

বান্দা বান্দী সংঘাত করার সুযোগ কম এক জন অন্যজনের হক নষ্ট করা কখনো সঠিক নয়,একজন আরেকজনের শত্রু
রূপে পরিনত হওয়ার অধিকার পবিত্র কোরআন দেয় না,তা
শয়তান এ কাজটা করে শত্রুর মত করে।
আর এই শয়তান হলো সে, যে কলব নষ্ট করে এবং মানুষের
ক্ষতি করে পাপের পথে ধাবিত করে।

এই শয়তানকে একমাত্র শত্রু মনে করা উচিৎ,আর মানুষের
আল্লাহর বান্দা বান্দী সকলের জন্য এ সমস্ত সংঘাত,সংঘর্ষ গুলো এড়িয়ে চলার নির্দেশনা পবিত্র কোরআনে রহিয়াছে।

এগুলোর অন্যথা হলে নিশ্চয় একদিন প্রচন্ড দাবদাহ মরুর বালুর আগুনের মত ফুলকি হবে,গৃহে পান করার মত পানি ফুরিয়ে যাবে সব যায়গায় পানি শুকিয়ে যাবে এক নিদারুন তৃষ্ণায় বুক শুকিয়ে যাবে, তার চেয়ে কঠিন কিছু তৃষ্ণাণাতুর পরিস্থিতি মানুষের হাশরের ময়দানে অপেক্ষা করছে।

শিশু জন্ম গ্রহণ করে মায়ের দুগ্ধ পান করে, ভূমিষ্ঠ হয়ে সুস্থ খাবারের যোগান পেয়ে যায়,এই দুধেই তার তৃষ্ণা ,খাবারের ক্ষুধা মিটে ।
আমি আমারা হাশরের ময়দানে কী কাউকে পাবো ? আমার
আপনার তৃষ্ণা কে মিটাবে৷? তার সমাধান সমাধান হলো এ কোরআন, যারা সত্যবাদী নবী করিম (সাঃ) নিজেই তাদের
কাউসারের পানি পান করিয়ে তৃষ্ণা মিটাবেন।
তাহলে আমি আপনার সকল মিথ্যা বলা ছেড়ে দিতে হবে ও সারা জীবন সত্য বলার শপথ করতে হবে।

কেউ ধনীর ঘরে জন্ম নেয় কেউ গরীব ঘরে জন্ম নেয় কারো
গায়ের রং সাদা,কারো গায়ের রং কালো তাতে কেউ মর্যাদা বেশি পায়,কেউ পায় না,তাতে কারো অহংকার গৌরব বেশি কারো কম,কেউ সুন্দর কেউ অসুন্দর হয়ে জন্ম নেয়। জন্মই মানুষের মাঝে বৈষম্য তৈরি করে দিচ্ছে সকল সমাধান নবী
করিম সাঃ এর বিদায় হজের শেষ ভাষণে বলে গেছেন।

আরবের উপর অনারবের এবং অনারবের উপরও আরবের কোন শ্রেষ্ঠত্ব নেই,সাদার উপর কালোর আর কালোর উপরে সাদার কোন মর্যাদা নেই শুধু পার্থক্য আছে রঙের।
রাজা না বাদশাহ না,ধনী না ফকির না ফর্সা না কালো না, তা সে সবচেয়ে বেশি মর্যাদা বান-যে যত বেশী পরহেযগার আর গুনবান হবে।

শিক্ষা নিয়ে হোক,বর্ণ নিয়ে হোক,বংশ নিয়ে হোক,বা পদবী নিয়ে হোক, এমনকি বেশী ধর্ম কর্ম করে, এটা নিয়ে ও যদি কেউ তিল পরিমান গৌরব করে সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেনা সেটা কোরআনে আল্লাহর নির্দেশ।

নিজ অহমিকা দমন করতে হবে,যে বীর সে শত্রু ধ্বংস করে, আর যে মহাবীর সে নিজের ইগোকে ধ্বংস করে।
আমার আপনার সমস্ত অহমিকা,গরীমা,গৌরব এসব থেকে পরিত্রাণের পথ খুঁজতে হবে।

আমার আপনার সবার এ পৃথিবীর প্রতি,জীবনের প্রতি শুধু মায়া,এ মায়ার জীবন পরিত্যাগ করা,ও ছেড়ে- চলে যাওয়া বড় কঠিন,জীবনে শুধু মৃত্যুর ভয়,জঙ্গলে থাকে বাঘের ভয়, জঙ্গলে বাঘ আছে জেনে সে জঙ্গল আপনি আমি কিন্তু তা এড়িয়ে যেতে পারি।
কিন্তু আমার আপনার মৃত্যুর ভয় জানার পরও এটা এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ কি কোনো মানুষের আছে ? তারও সমাধান এক মাত্র কোরআনে খুঁজে পাওয়া সম্ভব।

এটাই তারার মত সত্য,যেখান থেকে এসেছি আবার সেখানে ফিরে যেতে হবে৷! যত বেশি কবরের জন্য আখিরাতের সাথি পাওয়ার কাজ করতে হবে,হাশরে নবী করিম সাঃ এর কাছে থেকে কাউসারের পানি পান করার সুযোগ তৈরি করতে হবে রবের মর্যাদা লাভের ফিকির করতে হবে। তাতেই মৃত্যুর ভয় কেটে যাবে নিশ্চিত।
আল্লাহতো কোরআনে বলে দিয়েছেন – মানুষ আল্লাহর কাছ থেকে এসেছে এবং তার কাছেই প্রত্যাবর্তন করতে হবে।

এই পবিত্র রমজানের শেষ দিনগুলোর উছিলায় আমাদের ইসলামের সঠিক শিক্ষা গ্রহণ করার তৌফিক দান করুন। আমিন আমিন আমিন।

লেখক- সাবেক গভর্নিং বডির সদস্য

উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/জামান/০৬/০৪/২৪


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.